এখন থেকে ওপেন হার্ট সার্জারি ছাড়াই মাইট্রাক্লিপ নামক ক্যাথেটার বেসড কার্ডিয়াক প্রসিডিউরের মাধ্যমে হার্টের ভাল্বের ত্রুটি রিপেয়ার করা সম্ভব। সম্প্রতি ভারতে প্রথমবারের মতো দিল্লির ফরটিস এসকর্টস হার্ট ইন্সটিটিউটে ৬৯ বছর বয়সি রোগীর দেহে এই পদ্ধতি ব্যবহার করে সফল হয়েছেন চিকিৎসকরা।
ফরটিস এসকর্টস হার্ট ইন্সটিটিউটের চেয়ারম্যান ডা. অশোক শেঠের নেতৃতে একদল চিকিৎসক এ সাফল্য অর্জন করেন। ভারতের চিকিৎসা ক্ষেত্রে এটি একটি যুগান্তকারী সাফল্য । এখন থেকে হার্টের ভাল্বের ত্রুটি যুক্ত রোগীরা ওপেন হার্ট সার্জারি ছাড়াই তাদের হার্টের ত্রুটি সারাতে পারবেন।
বৃহস্পতিবার (৬ ডিসেম্বর) এএফসি হেল্থ লিমিটেড কতৃক পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ১৩ বছর আগে ৬৯ বছর বয়সি ওই ব্যক্তির একবার ওপেন হার্ট সার্জারি হয়েছিল। পরবর্তীতে হার্টের ভাল্বে মারাত্মক লিকেজ সৃষ্টি হওয়ায় রোগীর হার্ট ফেইলিওর ডেভেলপ করে। হার্টের সাইজ আস্তে আস্তে বড় হতে থাকে। ফলে রোগী মারাত্মক শ্বাসকষ্ট এবং দুর্বলতায় ভুগছিলেন। রোগীর শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় ওপেন হার্ট সার্জারি করা সম্ভব ছিলো না। তাই অস্ত্রপচার ছাড়াই রোগীর হার্টের ত্রুটি রিপেয়ার করা হয়।
ডা. অশোক শেঠ বলেন, ‘মাইট্রাক্লিপ একটি যুগান্তকারী ক্যাথেটার বেসড কার্ডিয়াক প্রসিডিউর যেটা একটি সাধারণ এঞ্জিওগ্রামের মতো পদ্ধতি, যার মাধ্যমে কোনধরনের বড় কাটাছেঁড়া ছাড়াই হার্টের মাইট্রাল ভাল্বের ত্রুটি রিপেয়ার করা যায়। এই পদ্ধতিতে রোগির কুঁচকির শিরা দিয়ে দিয়ে একটি বিশেষ ধরণের ক্যাথেটার হার্টের চেম্বারে প্রবেশ করিয়ে পদ্ধতি চলাকালীন সময় ইকো কার্ডিওগ্রাফি এবং এক্সরের সহায়তায় হার্টের ত্রুটিযুক্ত ভাল্বে একটি ক্লিপ পরিয়ে ত্রুটিটি বা লিকেজটি সারিয়ে ফেলা হয়। এই পদ্ধতির পর রোগিরা ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা পর বাড়ি ফিরে যেতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভারতে মাইট্রাক্লিপের প্রবর্তনের মাধ্যমে ঔষধ সত্ত্বেও ধীরে ধীরে লিকিং ভাল্ব থেকে ক্রমাগত শারীরিক অবনতির শিকার এবং ভালভ প্রতিস্থাপন সার্জারির জন্য অনুপযুক্ত এরকম অনেক রোগীর উপকারে আসবে বলে আমরা আশাবাদী।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, দিল্লির ফরটিস এসকর্টস হার্ট ইন্সটিটিউটের সহযোগিতায় বাংলাদেশের খুলনা, চট্টগ্রাম এবং কুমিল্লায় ৩টি বিশেষায়িত কার্ডিয়াক হাসপাতাল পরিচালিত হচ্ছে যেখানে হার্টে রিং পরানো, হার্ট সার্জারিসহ হার্ট সংক্রান্ত সকল সেবা চালু আছে। নতুন নতুন টেকনোলোজি এবং চিকিৎসা পদ্ধতি দিয়ে বাংলাদেশের হৃদরোগ চিকিৎসায় দিল্লির ফরটিস এসকর্টস হার্ট ইন্সটিটিউট সহায়তা করে যাচ্ছে। অদূর ভবিষ্যতে মাইট্রাক্লিপ পদ্ধতি বাংলাদেশেও চালু হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।