রাজধানীর কেরানীগঞ্জে যাত্রীবাহী একটি বাসে অভিযান চালিয়ে প্রায় ৬৩৭ ভরি সোনা উদ্ধার করেছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। এ ঘটনায় ভারতীয় নাগরিকসহ ১২ জনকে আটক করা হয়েছে।
শনিবার (২৬ নভেম্বর) দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের বাবুবাজার ব্রিজের কাছ থেকে তাদের আটক করা হয়। জব্দ করা সোনার বাজারমূল্য প্রায় পাঁচ কোটি টাকা।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের রাজস্ব কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম।
শুক্রবার (২৬ নভেম্বর) দিবাগত গভীর রাতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের ঝিলমিল হাসপাতালের সামনে তল্লাশি চালিয়ে এ সোনা উদ্ধার ও চোরাচালানকারীদের গ্রেফতার করা হয় বলে জানান তিনি।
আটকদের মধ্যে বাংলাদেশিরা হলেন- রাহাত খান (৩৩), মোহসিন আল মাহমুদ (২৯), কাজী মামুন (৩৪) ও সৈয়দ আমীর হোসেন (৩৪), শামীম (২৩), মামুন (৩৭), বশির আহমেদ কামাল (৩৭), মামুন সরকার (৩৭), আতিকুর রহমান মীনা (৪২)। ভারতীয় তিনজন হলেন নবী হুসাইন (৪৬), শাহাজাদা (৪৭) ও মোহাম্মদ ইমরান (৩৭)।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর সূত্র জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সংস্থার সদস্যরা জানতে পারেন, শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকার গাবতলী মাজার রোড থেকে বাবুবাজার ব্রিজ হয়ে দর্শনাগামী পূর্বাশা ও রয়েল পরিবহনের দুটি এসি বাসে ও যাত্রীদের মাধ্যমে সোনা চোরাচালান হতে পারে। ওই সংবাদের ভিত্তিতে শুল্ক গোয়েন্দার উপ পরিচালক সানজিদা খানমের নেতৃত্বে একটি দল ঢাকার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জের চুনকুটিয়ায় অভিযান চালায়। রাত ৩টায় পূর্বাশা ও রয়েল পরিবহনের এসি বাস দুটি শুল্ক গোয়েন্দাদের নজরে আসে। পরে দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানা পুলিশের সহযোগিতায় শুল্ক গোয়েন্দারা দুই ভাগে ভাগ হয়ে বাস দুটির ভেতরে উঠে বিভিন্ন স্থান ও যাত্রীদের তল্লাশি করেন।
প্রাথমিকভাবে সন্দেহভাজন যাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা সোনারবার থাকার কথা অস্বীকার করেন। এরপর সন্দেহভাজন যাত্রীদের শরীরে লুকায়িত অবস্থায় সোনা আছে কিনা তা নিশ্চিত হতে পার্শ্ববর্তী ঝিলমিল হাসপাতালে নিয়ে এক্সরে পরীক্ষা করা হয়। এ সময় মোট ১২ জন যাত্রীর মধ্যে ৫ জনের রেক্টাম এবং ৭ জনের লাগেজের হ্যান্ডলবার, মানি ব্যাগ, কাঁধ ব্যাগের বিভিন্ন অংশে বিশেষভাবে লুকায়িত অবস্থায় মোট ৭ হাজার ৪৩২ গ্রাম বা ৬৩৭ দশমিক ১৭ ভরি সোনা উদ্ধার করা হয়।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের উপ-পরিচালক সানজিদা খানম বলেন, আটক যাত্রীদের কাছে উদ্ধার হওয়া সোনার বার আমদানি বা কেনার স্বপক্ষে বৈধ কোনো কাগজপত্র পাওয়া যায়নি। আটকদের পুলিশ ও আনসার সদস্যদের সহযোগিতায় ঢাকায় কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরে আনা হয়েছে।
সোনা উদ্ধারের বিষয়ে বিভাগীয় মামলা ও আটকদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়েরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান তিনি।