বিপন্নপ্রায় কালগুই গাজীপুর জাতীয় উদ্যানে অবমুক্ত

ঢাকা, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-13 00:11:37

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের নবীগঞ্জ এলাকার একটি জলাশয়ে থাকা বিপন্ন প্রজাতির নয়টি রামগদি বা কালগুই উদ্ধার করে গাজীপুরের ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানে অবমুক্ত করা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় বন্যপ্রাণী পরিদর্শক নিগার সলতানা বলেন, ‘আবাসস্থল ধবংস বন্যপ্রাণীর বিলুপ্ত হওয়ার একটি মূল কারণ। শিল্পায়ন ও নগরায়নের ফলে বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল ক্রমশই কমেছে। সাধারণত খুলনার কিছু বনাঞ্চলে কালগুইয়ের এ প্রজাতির দেখা মেলে। নবীগঞ্জের ওই জলাশয়টি ভরাট হয়ে যাওয়ায় অবাস্থল পরিবর্তনের চেষ্টা করছিল প্রাণীগুলো। এ সময় কয়েকটি কালগুই এলাকাবাসী পিটিয়ে মেরে ফেলে।’

বিপন্নপ্রায় কালগুইগুলোর আবাসস্থল সংকটাপন্ন হওয়ার ঐ তথ্য পেয়ে বাংলাদেশ বন বিভাগ এদের উদ্ধার করে ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানে পূনঃর্বাসনের (এক্সসিটু কনজারভেশন এর) উদ্যোগ গ্রহণ করে। এরই ফলশ্রুতিতে দুই দিনে  বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ, ঢাকা’র বিভাগীয় বন কর্মকর্তা জহির উদ্দিন আকনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ও বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের সহযোগিতায় বন্যপ্রাণী পরিদর্শক আব্দুল্লাহ আস-সাদিকসহ বন কর্মকর্তারা নয়টি কালগুই (চারটি পুরুষ ও পাঁচটি স্ত্রী) উদ্ধার করে গাজীপুর ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানে পুনঃর্বাসনের লক্ষ্যে অবমুক্ত করা হয়। প্রতিটি পূর্ণ বয়ষ্ক গুইর ওজন প্রায় ২৫ থেকে ৩০ কেজি হয় এবং দৈর্ঘ্যে হয় ৬ থেকে সাত ফুট।

এ ব্যাপারে আব্দুল্লাহ আস সাদিক জানান, বাংলাদেশে রামগদি বা কালগুইয়ের অবস্থা প্রায় বিপন্ন তালিকায় রয়েছে। আবাসস্থল ক্রমশ ধ্বংস হয়ে যাবার ফলে এদের সংরক্ষণের উদ্যোগ গ্রহণ করা অতীব জরুরি হয়ে পড়েছিল। ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানে এরা সাসটেইন করলে গাজীপুরে এদের নতুন একটা পপুলেশন সৃষ্টি হবে। এরা হলো আবর্জনা, ময়লাসহ সর্বভূক প্রাণি।

কালগুই বাসা-বাড়ির ময়লা খেয়ে পরিবেশকে দূষণের হাত থেকে রক্ষা করে। এরা ইঁদুর জাতীয় ক্ষতিকারক প্রাণি ও মুরগী, সাপসহ বিভিন্ন ছোটপ্রাণী খেয়ে জীবন ধারণ করে থাকে। এরা পরিবেশের বাস্তুতন্ত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। প্রতিকুল পরিবেশে এরা মানুষের সান্নিধ্যে চলে আসে এবং আক্রমণাত্মক হয়ে উঠে। এদের কামড়ে ও লেজের আঘাতে মানুষের দেহে ক্ষত ও পচন দেখা দেয়।

কালগুইগুলোর পুনঃর্বাসন কাজে সার্বিক সহযোগিতা করেন ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভারসিটির শিক্ষানবিশ শিক্ষার্থী মইন মাহমুদ ও স্থানীয় একাত্তর মেম্বার সংগঠনের সদস্যবৃন্দ।

এ সম্পর্কিত আরও খবর