স্বাধীনতার ইতিহাস আর বিকৃত করার সুযোগ নেই, সংসদে প্রধানমন্ত্রী

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-31 07:32:26

সত্যকে যারাই মিথ্যা দিয়ে ঢাকতে চেয়েছে তারা ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে চলে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেন, স্বাধীনতার ইতিহাস আর বিকৃত করার সুযোগ নেই। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা ঠিক থাকবে।

বুধবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তরে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য এ কে এম রহমতুল্লাহর লিখিত প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন।

সংসদ নেতা বলেন, ‘ইতিহাস বিকৃতকারীর বিচার করতে গেলে কাকে রেখে কাকে করব। ছিয়ানব্বইয়ের আগে অনেকে সঠিক ইতিহাস জানার পরও বিকৃত করেছে। তবে স্বাধীনতার ইতিহাস আর কেউ বিকৃত করতে পারবে না, সম্ভবও না। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা যেন ঠিক থাকে সেই চেষ্টা করা হবে।’

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ বাঙালি জাতির ইতিহাসে একটি অবিস্মরণীয় অধ্যায় মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, মূলত পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকেই পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী পূর্ব পাকিস্তানের জনগণকে সুপরিকল্পিতভাবে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করে। মহান মুক্তিযুদ্ধে সংগঠিত গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্য মার্কিন কংগ্রেসম্যানদের উত্থাপিত প্রস্তাব প্রতিনিধি পরিষদের পররাষ্ট্র-বিষয়ক কমিটিতে রয়েছে। প্রস্তাবটি যাতে বিবেচিত হয়, সে জন্য বাংলাদেশ কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক এ বঞ্চনার বিরুদ্ধে ১৯৪৮ সাল থেকে বঙ্গবন্ধু সোচ্চার ছিলেন। ভাষা আন্দোলনসহ বাঙালির সব অধিকার আদায়ে তার ভূমিকা ছিল অগ্রগণ্য। বঞ্চনায় পিষ্ট এ দেশের আপামর জনসাধারণ ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ ও ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণায় অনুপ্রাণিত হয়। তারা দেশ মাতৃকার স্বাধীনতার জন্য জীবন বাজি রেখে যার যা আছে, তা নিয়েই সর্বাত্মক যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন।

‘পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অত্যাচার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের নাৎসি নৃশংসতাসহ ইতিহাসের সব কালো অধ্যায়কে হার মানিয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে এতো বেশি সংখ্যক মানুষকে হত্যা, নির্যাতন ও ধর্ষণের চিত্র ইতিহাসে আর একটিও পাওয়া যাবে না’—যোগ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী কর্তৃক বাংলাদেশে চালানো হত্যাযজ্ঞকে গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য গত বছরের ১৪ অক্টোবর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে (হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস) একটি প্রস্তাব আনা হয়েছে। প্রস্তাবটি উত্থাপন করেছেন, ওহিও অঙ্গরাজ্যের কংগ্রেসম্যান স্টিভ চ্যাট এবং ক্যালিফোর্নিয়ার কংগ্রেসম্যান রো খান্না। পরে কো-স্পন্সর হিসেবে যোগ দিয়েছেন, ক্যালিফোর্নিয়ার ক্যাটি পোর্টার এবং নিউজার্সির ট ম্যালিনোস্কি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কংগ্রেসম্যানদের উত্থাপিত প্রস্তাবটি বিবেচনার জন্য প্রতিনিধি পরিষদ পররাষ্ট্র -বিষয়ক কমিটির কাছে পাঠিয়েছে। প্রস্তাবটি যাতে বিবেচিত হয়, সে লক্ষ্যে বাংলাদেশ ঐকান্তিক কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর