নারী সদস্যের চুল ধরে জুতাপেটা করলেন ইউপি চেয়ারম্যান

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ | 2023-08-31 08:21:37

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে সংরক্ষিত আসনের এক নারী সদস্যকে চুল ধরে জুতাপেটা করার অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।

বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে এই ঘটনা ঘটে।

এই ঘটনা পর রাত ১১টার দিকে ওই নারী সদস্য উচাখিলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন খান সেলিমকে অভিযুক্ত করে ঈশ্বরগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) বন্দে আলী মিয়া অভিযোগ পাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে প্রকল্পের কাজ ভাগাভাগি ও ভুক্তভোগী নারী সদস্যের বিরুদ্ধে অপর এক ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম রাকিবুলকে মোবাইলে গালাগাল করার সালিশ ডাকেন চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন খান সেলিম। এসময় সকল ইউপি সদস্য উপস্থিত ছিলেন। সালিশ চলার এক পর্যায়ে ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম রাকিবুল ওই নারী সদস্যের বিচার চান। পরে সকল ইউপি সদস্যদের উপস্থিতিতে চেয়ারম্যান সেলিম নারী সদস্যকে ভৎর্সনা করেন এবং ক্ষমা চাইতে বলেন। এই সময় ভুক্তভোগী নারী ইউপি সদস্য একতরফা তাকে দোষারোপ না করার জন্য চেয়ারম্যানকে বলেন। এতে চেয়ারম্যান ক্ষিপ্ত হয়ে সকলের সামনেই তার চুলের মুঠি ধরে পায়ের জুতা খুলে পিটিয়ে রক্তাক্ত করে ফেলে। পরে ইউপি সদস্যরা ওই নারীকে উদ্ধার করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন।

ইউপি সদস্য আবুল বাশার বলেন, একজন চেয়ারম্যানের এভাবে একজন নারীকে মারধর করা খুবই লজ্জাজনক। আমরা পরে লজ্জায় সভা শেষ না করেই বের হয়ে যাই।

আরেক ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম বলেন, গতকাল ইউনিয়ন পরিষদে যা ঘটেছে। তার জন্য আমরা লজ্জিত। আমরা চাই সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষীর বিচার হোক।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরেক ইউপি সদস্য বলেন, আমরা বেশ কয়েকজন ইউপি সদস্য গত এক বছর যাবত কোন প্রকল্পের কাজ পাইনি।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী নারী ইউপি বলেন, চেয়ারম্যান আমার চুলের মুঠি ও গলা চেপে ধরে জুতা দিয়ে পেটায়। এতে আমার নাক ও মুখ দিয়ে রক্ত বের হয়। এই ঘটনার পর তার সাঙ্গপাঙ্গরাও আমার দিকে তেড়ে আসে। পরে আমি অনেকের সহযোগিতায় প্রাণে রক্ষা পাই। এ বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আমি চেয়ারম্যানের কঠিন বিচার চাই।

অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন খান সেলিম বলেন, আমি কোনো মারধর করিনি। অন্য মেম্বারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিশেষ সভা ডেকে তাকে শাসন করেছি মাত্র। এসময় সে উত্তেজিত হয়ে আমাকে মারতে আসে। তাছাড়া ওই মেয়েটি নেশাখোর। অনেক মেম্বারের সঙ্গে সে খারাপ ব্যবহার করে আসছে।

ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) বন্দে আলী মিয়া বলেন, ওই নারী সদস্য রাতেই লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর