‘এখন আমরা নিজের পাকা ঘরে থাকি’

, জাতীয়

আল মামুন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া | 2023-09-01 21:51:57

মালিহা বেগমের নিজের কোন জায়গা জমি নাই। পরের ঘরে গৃহপরিচারিকার কাজ করে কোন রকমে সংসার চালান। যে টাকা তিনি বেতন পান তা দিয়ে সংসার চলে না। অন্যদিকে বাসা ভাড়া দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছিলেন তিনি। এরই মধ্যে তিনি খবর পান আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় সরকার দেশের ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জমিসহ ঘর দেবেন। তিনিও আবেদন করেন। কোনরকম ঝামেলা ও খরচ ছাড়াই পেয়ে যান ঘর। এতে আনন্দে আত্মহারা তিনি।

শুধু মালিহাই না। এমন আরও ১৩৬ জন ভূমিহীন পরিবার প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় উপহারের ঘর পেয়েছেন। এরপরও উপজেলা প্রশাসন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতাদের মাধ্যমে তথ্য নিয়ে দেখেছেন যেন একটি পরিবার ও ভূমিমহীন ও গৃহহীন পরিবার না থাকে। এই লক্ষ্যে কাজ করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ‘আশ্রয়ণের অধিকার, শেখ হাসিনার উপহার’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে নিয়ে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় দেশের ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত উপজেলার তালিকায় যোগ হতে যাচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলা। ২২ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সারাদেশের কয়েকটি উপজেলার সঙ্গে আশুগঞ্জ উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত উপজেলা ঘোষণা করবেন। তবে এরই মধ্যে অসহায়, হতদরিদ্র ও ছিন্নমূল ১৩৬ জন পেয়ে গেছেন তাদের কাঙ্ক্ষিত ঘর। পরের ঘরে থাকার বেদনা ভুলে নিজের জায়গায় থাকতে পেরে আনন্দে আত্মহারা পরিবারগুলো প্রধানমন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়েছেন। উপজেলায় যারা ভূমিহীন ছিল এমন পরিবারকে তালিকা করে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের একটি সেমিপাকা ঘর ও দুই শতক জমি তাদের নামে রেজিস্ট্রি করে দিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন।

মালিহা বেগম জানান, আমরা অত্যন্ত খুশি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের ঘর উপহার দিয়েছেন। আল্লাহ যেন তার মনের আশা পূরণ করেন।

সত্তোরোর্ধ্ব জোবেদা খাতুন বলেন, আগে পরের জায়গায় থাকতাম। অনেক সময় না খেয়ে ভাড়া দিয়ে থেকেছি। এই ঘর পেয়ে আমরা অত্যন্ত খুশি। এখন আর পরের ঘরে থাকতে হবে না। এই সরকার আমাদের জমিসহ পাকা ঘর দিয়েছেন। এখন আমরা নিজের পাকা ঘরে থাকি।

আব্দুল আলিম নামে আরও এক সুবিধাভোগী বলেন, অনেক কষ্ট নিয়ে অন্যের ঘরে ভাড়া থেকেছি। বর্তমানে পরিবার নিয়ে নিজের পাকা ঘরে থাকতে পেরে অনেক ভাল লেগেছে। ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের আন্তরিকতায় ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারণে আমরা এই ঘর কোন প্রকার টাকাপয়সা ছাড়াই পেয়েছি।

নতুন ঘর পেয়ে আনন্দে আত্মহারা অজুফা বেগম, হনুফা বেগম, সমেলা খাতুন, সফর আলী সবাই। তারা সকলেই সরকারকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে শরিফপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ইউনিয়নে মোট ৩৩টি ভূমিহীন পরিবার ছিল। তারা প্রত্যেকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি করে ঘর ও ২ শতক জমি পেয়েছেন।

আশুগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, আশুগঞ্জ উপজেলা ভূমিহীন ও গৃহহীনদের ঘরের কাজ গুণগত মান বজায় রেখে প্রতিটি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে।

এবিষয়ে আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শ্যামল চন্দ্র বসাক বলেন, মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে আশুগঞ্জ উপজেলায় চারধাপে মোট ১৩৬ জন ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে সেমি পাকাঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। খুবই সচ্ছতার সাথে উপজেলা প্রশাসন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। ২২ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ঘরগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে হস্থান্তর করবেন। এরই মধ্যদিয়ে আশুগঞ্জ উপজেলা ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর