ক্ষুদ্র শিল্পের স্বীকৃতি পেল সুপারির খোলে তৈরি নান্দনিক তৈজসপত্র

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, লক্ষ্মীপুর | 2023-09-01 23:33:28

চার বছর অপেক্ষার পর অবশেষে লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে সুপারি গাছের ঝরে যাওয়া খোল দিয়ে তৈরি গৃহস্থালির নান্দনিক তৈজসপত্র ক্ষুদ্র শিল্প হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।

রোববার (১৯ মার্চ) সুপারির পাতা-খোল থেকে নান্দনিক তৈজসপত্র তৈরি করা প্রতিষ্ঠান মেসার্স ব্রাদার্স ইকো ক্রাফটকে ক্ষুদ্র শিল্প প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) লক্ষ্মীপুর জেলা শাখা কর্তৃক প্রতিষ্ঠানটিকে এ নিবন্ধন দেওয়া হয়।

মঙ্গলবার (২২ মার্চ) সকালে বিসিক লক্ষ্মীপুর জেলা কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপব্যবস্থাপক মাকসুদুর রহমান এর স্বাক্ষর করা এ সংক্রান্ত পত্র প্রতিষ্ঠানটির কর্নধার মামুনুর রশিদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

মেসার্স ব্রাদার্স ক্রাফটের স্বত্বাধিকারী মামুনুর রশিদ বলেন, ‘আমার প্রতিষ্ঠানটিকে নিবন্ধনের জন্য অনলাইনে আবেদন করি। ফরম পূরণ করে সাবমিট করার চার বছর পর খোলে তৈরি করা তৈজসপত্রকে ক্ষুদ্র শিল্প হিসেবে স্বীকৃতিস্বরূপ আমার প্রতিষ্ঠানকে নিবন্ধন দেওয়া হয়। পরে জেলা কার্যালয়ের উপব্যবস্থাপক আমাকে নিবন্ধনের সনদ বুঝিয়ে দিয়েছেন।’ সুপারি গাছের খোল দিয়ে থালা, বাটি, নাস্তার ট্রে, ঘড়ি, ফটোফ্রেম, বিয়ের কার্ড, ওয়ালমেট ও জুতাসহ ১৪টি পণ্য তৈরি করছে ব্রাদার্স ইকো ক্রাফট। পরিবেশবান্ধব ও স্বাস্থ্যসম্মত এসব পণ্য যাচ্ছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। ইউটিউবে এসব পণ্য তৈরির ভিডিও দেখে আগ্রহী হয়ে উদ্যোক্তা মামুনুর রশিদ গড়ে তুলেছেন কারখানাটি।

২০১৯ সালের ৬ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকায় বহুমুখী পাট পণ্য মেলার স্টল পরিদর্শনকালে সুপারির খোলে তৈরি করা উদ্যোক্তা মামুনের নান্দনিক তৈজসপত্র হাতে নিয়ে দেখেন। একই বছরের আগস্টে নিউজিল্যান্ড থেকে জেরিক নামের এক বায়ার রায়পুর কারখানায় আসেন। এসময় গ্রামীণ পরিবেশে উৎপাদিত এসব পণ্য দেখে তিনি উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। ২০১৭ সালে ইউটিউবে ভিডিও দেখে সুপারির খোলে তৈজসপত্র তৈরিতে আগ্রহী হন রায়পুর পৌরসভার দক্ষিণ-পশ্চিম কেরোয়ার তুলাতলি এলাকার মামুনুর রশিদ। ২০১৯ সালের শুরুতে তিনি একটি টিনশেড ঘরে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি বসিয়ে খোল দিয়ে বিভিন্ন পণ্য তৈরির কাজ শুরু করেন। দূর-দূরান্ত থেকে সৌখিন লোকজন কারখানাটি দেখতে আসেন।


বাসন-কোসনসহ ১৪ ধরনের পণ্য তৈরি করা হয় এ কারখানায়। এখানে ১০ জন শ্রমিক নিয়মিত কাজ করেন। এরই মধ্যে ২০ লক্ষাধিক টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। এটি লক্ষ্মীপুরের প্রথম কারখানা। শুকনো খাবার পরিবেশন ও পানির ব্যবহার না করলে কয়েক বছর এসব ব্যবহার করা যায়। এগুলো তৈরিতে কোনো ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করা হয় না।

উল্লেখ্য,২০১৯ সালের ৬ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকায় বহুমুখী পাট পণ্য মেলার স্টল পরিদর্শনকালে সুপারির খোলে তৈরি করা উদ্যোক্তা রায়পুরের মামুনের নান্দনিক তৈজসপত্র হাতে নিয়ে দেখেন এবং মুগ্ধ হন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর