লক্ষ্মীপুরে স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, লক্ষ্মীপুর | 2023-09-01 02:54:54

লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জে স্ত্রী রৌশন আক্তার লিপিকে (২৩) শ্বাসরোধে হত্যার দায়ে স্বামী মো. ইসমাইল হোসেন সুজনকে (২৮) যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত।

একই সাথে তার ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একই মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত সুজনের পরকীয়া প্রেমিকা সুমি বেগমকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। রায়ের সময় সুজন আদালতে উপস্থিত ছিল না, সে পলাতক রয়েছে। খালাসপ্রাপ্ত আসামি সুমি আদালতে উপস্থিত ছিল।

বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন। জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর মো. জসিম উদ্দিন রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত ইসমাইল হোসেন সুজন লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের পশ্চিম লতিফপুর গ্রামের ঘরোয়ার বাড়ির মৃত নুর মোহাম্মদের ছেলে। তার পরকীয়া প্রেমিকা সুমি ওরফে সুরমা আক্তার একই বাড়ির মো. সুমনের স্ত্রী। হত্যা মামলার বাদি ভিকটিম রৌশন আক্তারের মা আলেয়া বেগম (৪৩)।

মামলার এজাহার ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের দিকে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার ধীতপুর গ্রামের আলেয়া বেগমের মেয়ে রৌশন আক্তার লিপির সাথে লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জের পশ্চিম লতিফপুর গ্রামের মৃত নুর মোহাম্মদের ছেলে মো. ইসমাইল হোসেন সুজনের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর লিপি জানতে পারে তার স্বামী সুজন সুমি নামে একজন নারীর সাথে পরকীয়া প্রেমে লিপ্ত রয়েছে। পরকীয়ার প্রতিবাদ করায় সুজন তার স্ত্রী লিপিকে বিভিন্ন সময় মারধরও করতো। ২০২০ সালের ২ মে সকালে সুজনের সাথে তার স্ত্রী লিপির ঝগড়া হয়। এদিন দুপুরে লিপির ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে লিপির মা আলেয়া বেগম ওইদিন বাদি হয়ে লিপির স্বামী ইসমাইল হোসেন সুজন ও তার পরকীয়া প্রেমিকা সুমি ওরফে সুরমা আক্তারের নামে চন্দ্রগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। এতে তাদের বিরুদ্ধে লিপিকে আত্মহত্যার পরোচনার অভিযোগ আনা হয়। পরে পুলিশ দুই আসামীকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করলে আদালত তাদের কারাগারে পাঠায়।

এদিকে ময়নাতদন্তে লিপিকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে মর্মে প্রতিবেদন আসে। মামলাটি তদন্ত করেন চন্দ্রগঞ্জ থানার সেই সময়ের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সাইফুল ইসলাম ২০২১ সালের ২ ফেব্রুয়ারি দুই আসামীকে অভিযুক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দেন।

প্রতিবেদনে আসামী ইসমাইল হোসেন সুজন ও তার পরকীয়া প্রেমিকা সুমি ওরফে সুরমা আক্তারকে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত করা হয়।

বিবাদী পক্ষের আইনজীবী রাসেল মাহমুদ ভূঁইয়া মান্না বলেন, মামলাটি মূলত আত্মহত্যা পরোচনার মামলা ছিল। কিন্তু ময়নাতদন্তে ভিকটিম লিপিকে হত্যা করা হয়েছে মর্মে প্রতিবেদন আসে। হত্যার ঘটনায় আদালত ইসমাইল হোসেন সুজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। কিন্তু সুমির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তাকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।

এ সম্পর্কিত আরও খবর