বিমান বাহিনী জাতির গর্বের প্রতীক: রাষ্ট্রপতি

খুলনা, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-29 20:41:45

বাংলাদেশ বিমান বাহিনী জাতির গর্বের প্রতীক বলে উল্লেখ করেছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ।

তিনি বলেন, ‘দেশের আকাশ সীমা প্রতিরক্ষা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি জাতীয় যেকোনো প্রয়োজনে দেশ ও জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে বিমান বাহিনীর সদস্যগণ তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করে যাচ্ছেন।’

বুধবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে যশোর বিমান বাহিনী একাডেমির প্যারেড গ্রাউন্ডে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ৭৫তম বাফা কোর্স ও ডিরেক্ট এন্ট্রি ২০১৮ কোর্সের কমিশনপ্রাপ্তি উপলক্ষে কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বক্তব্যের শুরুতেই রাষ্ট্রপতি বিমান বাহিনীর উত্থানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকা তুলে ধরে বলেন, 'বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান, সামরিক কৌশলগত দিক, অর্থনৈতিক উন্নয়নের পরিধি ও সম্ভাবনার প্রেক্ষাপটে একটি আধুনিক পেশাদার ও চৌকস বিমান বাহিনীর প্রয়োজনীয়তা জাতির পিতা উপলব্ধি করেছিলেন। এ উপলব্ধি থেকেই তিনি বিমান বাহিনীর আধুনিকায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় মাত্র তিনটি পুরোনো বিমান নিয়ে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর যে যাত্রা শুরু হয়েছিল, তা আজ অনেকদূর এগিয়ে এসেছে।’

বঙ্গবন্ধুর উদ্যোগে সৃষ্ট বিমান বাহিনী বর্তমানে অত্যাধুনিক যুদ্ধ বিমান, পরিবহন বিমান, হেলিকপ্টার, উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন আকাশ প্রতিরক্ষা রাডার, ক্ষেপণাস্ত্র এবং অত্যাধুনিক সমরাস্ত্রে পরিপূর্ণ। যা পূর্বের তুলনায় অনেক শক্তিশালী বলে তিনি উল্লেখ করেন।

বাংলাদেশের বাহিনীগুলোর প্রশংসা করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আমাদের বাহিনীসমূহ দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। এজন্য প্রয়োজন রয়েছে দক্ষতা, যুদ্ধ উপকরণ ও আত্মনির্ভরশীলতা। সেই লক্ষ্যে নিকট ভবিষ্যতে পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধ বিমান, উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন রাডার ও অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র বিমান বাহিনীতে সংযোজন করা হবে। এর মাধ্যমে বিমান বাহিনীর সক্ষমতা বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে।’

এ সময় অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী বিমান তৈরি করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

নবীন ক্যাডেটদের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বিমান বাহিনী একাডেমিতে যে মৌলিক প্রশিক্ষণ তোমরা গ্রহণ করেছ, তার যথাযথ অনুশীলন ও প্রয়োগের মাধ্যমে পেশাগত মান উন্নয়নে সদা সচেষ্ট থাকতে হবে। সততা, একাগ্রতা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে বিমান বাহিনীর ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে।’

প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজের মাধ্যমে বিমান বাহিনীর ১০ জন মহিলা ক্যাডেটসহ ৬১ জন ফ্লাইট ক্যাডেট কমিশন লাভ করেন। কুচকাওয়াজ শেষে বিমান বাহিনী একাডেমির বিভিন্ন প্রকার বিমানের মনোজ্ঞ ফ্লাইপাস্ট অনুষ্ঠিত হয়।

ফোর্সে চৌকস কৃতিত্বের জন্য ফ্লাইট ক্যাডেট স্কোয়াড্রন জুনিয়র আন্ডার অফিসার রিয়ানা আজাদকে ‘সোর্ড অব অনার’ এবং ফ্লাইট ক্যাডেট বিএম তানভীর ইসলাম রাব্বী জেনারেল সার্ভিস প্রশিক্ষণ কৃতিত্বের জন্য ‘কমান্ডান্টস ট্রফি’ লাভ করেন। উড্ডয়ন প্রশিক্ষণে সেরা কৃতিত্বের জন্য ফ্লাইট ক্যাডেট আর এইচ এম নাফী ‘বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান ট্রফি’ এবং গ্রাউন্ড ব্রাঞ্চে সেরা কৃতিত্বের জন্য ফ্লাইট ক্যাডেট মো. নাফিজ-আল-মানারকে ‘বিমান বাহিনী প্রধান ট্রফি’ প্রদান করা হয়।

এদিকে এক নম্বর স্কোয়াড্রন চ্যাম্পিয়ন বিবেচিত হয়ে একাডেমি পতাকা লাভ করে। এখানে উল্লেখ্য, যে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে ২০০০ সালে মহিলা কর্মকর্তা অন্তর্ভুক্তির পর থেকে এবারই প্রথম কোনো মহিলা ফ্লাইট ক্যাডেট ‘সোর্ড অব অনার’ লাভ করার কৃতিত্ব অর্জন করলেন।

অনুষ্ঠানে বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত, বিমান বাহিনী একাডেমির কমান্ড্যান্ট এয়ার কমোডর মো. শাফকাত আলীসহ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর