‘পাইলট তৈরিতে ইউএস-বাংলার উদ্যোগ এভিয়েশন সেক্টরে মাইলফলক’

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-09-01 02:06:49

পাইলট তৈরির জন্য ইউএস-বাংলার উদ্যোগ দেশের এভিয়েশন সেক্টরে মাইলফলক বলে মন্তব্য করেছেন বেসরকারি বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী।

রোববার (২৮ মে) বিকেলে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের ১১ জন ক্যাডেট পাইলটদের প্রশিক্ষণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে প্রেরণ উপলক্ষে রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁও প্যানপ্যাসিফিকে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।

২১ শিক্ষার্থীকে পাইলট বানাতে তাদের সব ধরনের খরচ বহন করে প্রশিক্ষণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাঠাচ্ছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স। সেই ধারাবাহিকতায় ৩০ মে দ্বিতীয় ধাপে ১১ জন শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে রওনা হচ্ছেন।

এর আগে গত ২ মে প্রথম ধাপে ১০ জন শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন। ফ্লাইট ট্রেনিং কোর্স শেষ করার পর ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কমার্শিয়াল পাইলট লাইসেন্স (এফএএসিপিএল) প্রাপ্ত হবেন তারা।

Caption

 

দীর্ঘ এক বছরের নির্বাচনী প্রক্রিয়া শেষ করে তাদের যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার ফ্লাইং একাডেমিতে পাঠানো হচ্ছে। দেশে ফিরে তারা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সে যোগদান করবেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, এভিয়েশন সেক্টরের উন্নতির জন্য সরকারের পাশাপাশি আমাদের বেসরকারিভাবেও এগিয়ে আসতে হবে। উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য পাইলটদের আমেরিকায় পাঠাতে ইউএস-বাংলার এমন উদ্যোগ নিঃসন্দেহে এভিয়েশন সেক্টরের জন্য একটি মাইলফলক। এমন পদক্ষেপের জন্য ইউএস-বাংলাকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানান মন্ত্রী।

তিনি আরও বলেন, আমাদের মেধাবী পাইলটরা বিদেশে প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশের সুনাম বয়ে আনবে।

মন্ত্রী বলেন, দুর্ঘটনা কম হওয়ার দিক থেকে আকাশ পথ সবচেয়ে নিরাপদ। তিনি উপস্থিত ট্রেইনি পাইলটদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা যারা পাইলট হবেন তারা চাকরি জীবন থেকে শুরু করে অবসরে যাওয়ার পরও এ পেশার মর্যাদা ধরে রাখবেন। আপনাদের কোনো কার্যকলাপের জন্য যেন এ পেশা প্রশ্নবিদ্ধ না হয়। আমরা ইদানিং দেখতেছি নানান আলোচনা সমালোচনা আসছে। আপনাদের চলাফেরা, দায়িত্ব পালনে কোনোভাবে যেন সমালোচনা না হয়।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মোঃ মাহবুব আলী এমপি বলেছেন, আগামী ১৫ বছরে বাংলাদেশের এভিয়েশন সেক্টরের প্রবৃদ্ধি হবে প্রায় তিনগুণ। বিগত ১০ বছরে বাংলাদেশের এভিয়েশন মার্কেট প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, এভিয়েশন সেক্টরের এই বিপুল প্রবৃদ্ধির ধারাকে অব্যাহত রাখতে ও দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখতে এভিয়েশন শিল্পের প্রতিটি পর্যায়ে আমাদের আরও বেশি সংখ্যক প্রশিক্ষিত ও দক্ষ জনবল প্রয়োজন হবে। দক্ষ জনবলের এই বর্ধিত চাহিদা পূরণে সরকার বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। আরও বেশি প্রশিক্ষিত নারী পাইলট গড়ে তুলতে ইতোমধ্যে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান Next Generation Aviation Professionals (NGAP) শিক্ষাবৃত্তি” চালু করেছে।

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স জানায়, ২০২২ সালে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স নিজ খরচে পাইলট বানানোর উদ্যোগ নেয়। এরপর নানা প্রক্রিয়ায় ৬ হাজার ৫০০ জনের মধ্যে ২১ জনকে নির্বাচন করে তাদের ‘ফ্লাইং একাডেমিতে পাঠানোর যোগ্য’ বলে উল্লেখ করা হয়। বাছাই করা ২১ শিক্ষার্থীর মধ্যে ২০ জন তরুণ এবং একজন তরুণী।

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের জিএম-জনসংযোগ মো. কামরুল ইসলাম বলেন, ২০২২ সালের এপ্রিলে এ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সহযোগিতায় ও সার্বিক তত্ত্বাবধানে প্রার্থী নির্বাচনের সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ২১ জনকে বাছাই করা হয়। তারা ফ্লোরিডায় কমার্শিয়াল পাইলট লাইসেন্স ট্রেনিং শেষ করে দেশে ফিরবেন এবং ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সে পাইলট হিসেবে যোগদান করবেন।

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স জানায়, শিক্ষার্থীদের পাইলট হওয়ার পূর্বশর্ত ছিল বিজ্ঞান বিভাগে গণিত ও পদার্থ বিজ্ঞানসহ এসএসসি ও এইচএসসিতে জিপিএ-৫ অথবা এ লেভেলে ন্যূনতম দুই বিষয়ে (গণিত ও পদার্থ বিজ্ঞান) গ্রেড-বি পেয়ে উত্তীর্ণ হওয়া। এছাড়াও স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞানের স্নাতকরাও আবেদন করেছেন। আবেদনকারীদের সর্বোচ্চ বয়স ২৫ বছর ও উচ্চতা ন্যূনতম ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি নির্ধারণ করা হয়েছিল। আবেদন করা শিক্ষার্থীদের আইকিউ টেস্ট, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা এবং সংশ্লিষ্ট কয়েকটি পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়।

এসময় উপস্থিত ছিলেন ইউএস-বাংলার সিইও লে. ক. (অব.) মইনুল ইসলাম, বেবিচকের প্লানিং এ্যান্ড অপারেশন বিভাগের চেয়ারম্যান সাদিকুর রহমান, নভোএয়ার এর এমডি মফিজুর রহমান, ১১ ট্রেইনি পাইলট ছাড়াও তাদের অভিভাবক ও স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর