যেখানে নলকূপ লাখপতিদের ব্যাপার

বরিশাল, জাতীয়

সেরাজুল ইসলাম সিরাজ,  স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | 2023-08-18 21:20:49

বরগুনা থেকে ফিরে: যেখানে নলকূপ থাকা মানে লাখপতিদের ব্যাপার। এখানে নলকূপ বসাতে হলে লাখ টাকার নিচে হয় না। আরও অবাক করার বিষয় হচ্ছে, মিঠাপানির জন্য ১২শ’ ফুট মাটির নিচে যেতে হয়।

উপকূলীয় জেলা বরগুনার এই অবস্থা। খোদ জেলা শহরে মিঠা পানির সংকট প্রকট। এক সময় কিন্তু এমনটা ছিল না। ৯শ’ ‍ফুট মাটির নিচে গেলেই মিঠা পানি পাওয়া যেতো। কিন্তু কয়েক বছর ধরে ধীরে ধীরে মিঠা পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে বলে জানালেন স্থানীয়রা।

কাঠপট্টির বাসিন্দা রণজিত মন্ডল বার্তা২৪.কমকে বলেন, ১২শ’ সাড়ে ১২শ’ ফুট দেলে ভালো পানি পাওয়া যায়। আর উপরে দেলে, ভালো পানি পাওয়া যায় না। আমার বয়স যেকালে ষোল সতারো আছেলে, সেকালে ৯শ’ সাড়ে ৯শ’ ফুটে ভালো পানি পাওয়া যাইতে।’

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে। এই এলাকার সবচেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে আয়রন। হাজার ফুটের ওপরে দিলে অনেক আয়রন ওঠে। একটু পরেই পানি হলদে বর্ণ হয়ে যায়। আবার কাপড়-চোপড়ের রঙও নষ্ট হয়ে যায়। আবার চাপতেও অনেক কষ্ট হয়।

১২শ’ ফুট দিলেই যে ভালো পানি পাওয়া যাবে তারও কোনো গ্যারান্টি নেই। যে কারণে অনেকেই শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে যে সব ভালো নলকূপ রয়েছে সেখান থেকে খাবার পানি সংগ্রহ করেন। এই পানিকে অনেকের জীবিকা নির্বাহের পথ বেছে নিয়েছেন। কলস ভর্তি করে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছেন। অনেকটা ঢাকা শহরের পানির জার বিক্রির মতো।

তবে এখানে ২০ লিটারের এক কলস পানির দাম দূরত্ব ভেদে ৫ থেকে ৭ টাকা নেওয়া হয়। জেলা পশু হাসপাতাল সংলগ্ন নলকূপের পানির সুনাম অনেক। সে কারণে এর পানির চাহিদাও অন্য নলকূপের তুলনায় বেশি হওয়ায় সারাদিনেই ভীড় লেগেই থাকে। কেউ কলস ভর্তি করে, কেউ গ্যালনে ভর্তি করে গ্রাহকের বাড়িতে পৌঁছে দিচ্ছে।

অন্যদিকে রংপুর অঞ্চলে এখনও ৫০ থেকে ৮০ ফুটেই সুপেয় পানি মেলে। একটা সময় ছিলো- ২০/৩০ ফুটেই মিলতো সুপেয় পানি। অন্যদিকে সিলেট অঞ্চলেও নলকূপ স্থাপন খানিকটা কষ্টসাধ্য। সিলেটের পাহাড়ী অঞ্চলে কাকর থাকায় প্রায় ৪০ হাজার টাকার মতো খরচ হয় নলকূপ স্থাপনে। সুপেয় পানির জন্য ৫ থেকে ৬শ’ ফুট মাটির গভীরে যেতে হবে। এই অঞ্চলের লোক পুকুরে গোসলে অভ্যস্থ। প্রায় বাড়িতেই দেখা মিলবে পুকুরের।

এ সম্পর্কিত আরও খবর