প্রাইভেট শিক্ষকের হাতে ছাত্র খুন

ঢাকা, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-25 22:35:44

মোঃ পারভেজ শিকদার (১৮) সাদমান ইকবাল রাকিনের (১০) প্রাইভেট শিক্ষক ছিল। ছেলেকে পড়ায় বলে রাকিনের বাবা পারভেজের লেখাপড়ার খরচও চালাত।

পারিবারিক অসচ্ছলতার কথা চিন্তা করে দ্রুত টাকায় আয় করে বড় লোক হওয়ার আশা জাগে পারভেজের মনে। তাই টাকা আয়ের মাধ্যম হিসেবে রাকিনের কথা মাথায় আসে পারভেজের।

পরবর্তীতে পারভেজ তার এক বন্ধু ফয়সাল আহমেদ (১৯) সঙ্গে নিয়ে রাকিনকে অপহরণ করে। অপহরণের পর তাদের কথা মত রাকিনের বাবা টাকা না দেয়ায় তাকে গলা টিপে হত্যা করে পারভেজ ও ফয়সাল।

রোববার (১৬ ডিসেম্বর) একটি ফ্লেক্সিলোডের নাম্বারের ক্লু ধরে পারভেজ ও ফয়সালকে গ্রেফতার করে র‍্যাব।

সোমবার (১৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর কাওরানবাজারে অবস্থিত র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন র‍্যাব-১ এর অধিনায়ক লে.কর্নেল মো.সারওয়ার বিন কাশেম।

অপহরণের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে মো.সারওয়ার বিন কাশেম বলেন, 'গত ৫ ডিসেম্বর গাজীপুরের শ্রীপুর থানার ফাউগান গ্রামের সৈয়দ শামীম ইকবালের ছেলে সাদমান ইকবাল রাকিন অপহৃত হয়। রাকিন চলতি বছরে ফাউগান প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা দিয়েছিল। পরবর্তীতে ১১ ডিসেম্বর রাকিনের বাড়ি থেকে ১৫০ গজ দূরে বাঁশঝাড়ের মধ্যে থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।'

হত্যাকাণ্ডের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, 'বিগত ২ বছর ধরে রাকিনকে পারভেজ প্রাইভেট পড়াত। বড় অঙ্কের টাকা প্রাপ্তির আশায় ৬ মাস আগে রাকিনকে অপহরণ ও মুক্তিপণ চাওয়ার উদ্দেশে, বাসা থেকে রাকিনের বাবার মোবাইল চুরি করে। পরে বিভিন্ন অপরাধ বিষয়ক সিনেমা নাটক বিশেষত ক্রাইম পেট্রোল দেখে সে এই অপহরণের পরিকল্পনা করতে থাকে।'

তিনি আরও বলেন, 'পারভেজ পরিকল্পনা ছিল যে ভিকটিমের বাবা ব্যবহৃত মোবাইল দিয়ে অপহরণের পর তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে খুব সহজে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ফাঁকি দেওয়া যাবে। এমনকি মোবাইলের কল ডিটেইলস থেকে ধরা পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বিধায় গত ৬ মাস থেকে সে মোবাইল বন্ধ রেখেছিল এবং অন্য কোথাও ফোন কলও করেনি।'

ঘটনার দিনের বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, 'বিগত ৫ ডিসেম্বর বিকাল বেলায় পারভেজ ও ফয়সাল গোপনে একটি বাঁশঝাড়ে নিয়ে যায় রাকিনকে। পরে সেখানে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী রাকিনকে আটকে রাখার চেষ্টা করে। কিন্তু জঙ্গলের ভেতর রাকিনকে আটকাতে ব্যর্থ হয় তারা। সে ছাড়া পেয়ে গেলে তাদের কথা সবাইকে জানিয়ে দিবে এই ভয়ে তারা তৎক্ষণাৎ তাকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেয়। প্রথমে ফয়সাল ভিকটিমকে মাটিতে ফেলে গলা টিপে ধরে এবং পরবর্তীতে পারভেজ তার শরীর উপর বসে দুইজন একত্রিত রাকিনের গলা টিপে ধরে নৃশংসভাবে হত্যা করে।'

গ্রফতারের বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, 'মুক্তিপণ চাওয়ার জন্য ফয়সাল ওই ফোন নাম্বারে একটি ফ্লেক্সিলোডের দোকান থেকে ২০ টাকা ফ্লেক্সিলোড করে। সেই তথ্যটি আমাদের কাছে চলে আসে। পরে ওই দোকানে গিয়ে দোকানের ডাস্টবিন থেকে ওই নাম্বারের একটি চিরকুট পাওয়া যায় যেটি ফয়সাল লিখে নিয়ে এসেছিল। পরে রাকিনের বাবার সঙ্গে কথা বলে আমরা ৫-৬ জনের একটি লিস্ট তৈরি করি যাদের হাতের লেখা চিরকুটে লিখার সঙ্গে মেলানোর জন্য৷ পর ফয়সালের সঙ্গে মিলে যাওয়ায় তাকে প্রথমে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার কাছ থেকে তথ্য নিয়ে পারভেজকে গ্রেফতার করা হয়।'

এ সম্পর্কিত আরও খবর