এ কেমন শত্রুতা

রাজশাহী, জাতীয়

গনেশ দাস, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-27 01:05:13

মাঝে মধ্যেই রাতের আঁধারে আগুনে পুড়ছে একের পর এক খড়ের গাদা। কেউ বলছেন শত্রুতা করে আগুন দেওয়া হচ্ছে আবার কেউ বলছেন জ্বীনের দেওয়া আগুনে পুড়ছে একের পর এক খড়ের গাদা।

গত এক মাসে নন্দীগ্রাম উপজেলায় কমপক্ষে ৪০টি খড়ের গাদা আগুনে পুড়ে গেছে। একের পর এক খড়ের গাদা আগুনে পুড়ে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোতে দেখা দিয়েছে গো খাদ্য সংকট। কিন্তু এখন পর্যন্ত কাউকে শনাক্ত করা যায়নি।

এ ঘটনায় সোমবার (১৭ ডিসেম্বর) রাত থেকে গ্রামবাসী রাত জেগে পাহারার ব্যবস্থা করবেন বলে জানিয়েছেন নন্দীগ্রাম সদর ইউপি চেয়ারম্যান প্রভাষক আব্দুল বারী।

জানা গেছে, রোববার দিবাগত রাত ২টার পর থেকে ভোর রাত পর্যন্ত নন্দীগ্রাম সদর ইউনিয়নের বিজয় ঘাট ও তেঘরী গ্রামে ২২টি খড়ের গাদায় আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে।

বিজয় ঘাট গ্রামের আব্দুল খালেক জানান, রাত দুইটার দিকে হঠাৎ করে তার তিনটি খড়ের গাদায় আগুন জ্বলতে দেখে। আধা ঘণ্টার মধ্যে গ্রামের আহাদ আলির বাড়ি সংলগ্ন খড়ের গাদায় আগুন জ্বলতে দেখা যায়।

গ্রামবাসীদের পাশাপাশি নন্দীগ্রাম ও শেরপুর উপজেলা থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন। একদিকে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা আগুন নেভাচ্ছে অন্যদিকে গ্রামের বিভিন্ন স্থানে খড়ের গাদায় আগুন জ্বলছে।

এভাবে ভোর রাত পর্যন্ত বিজয় ঘাট ও তেঘরী গ্রামের ২২টি খড়ের গাদা আগুনে পুড়ে যায় এক রাতে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সোমবার সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত আগুন নেভানোর কাজ করেন।

এর আগে ১২ ডিসেম্বর রাতে বিজয় ঘাট গ্রামের সাহেব আলীর একটি, নূর নবীর একটি ও আবুল কালামের একটি করে খড়ের গাদায় আগুন দেয় দূর্বৃত্তরা।

এছাড়া ২০ নভেম্বর রাতে কৃষক মোসলেম উদ্দিন ও তার দুই ভাইয়ের বাড়ির উঠানে রাখা প্রায় ২০০ বিঘা জমির খড়ের গাদা ও ৮০ মণ ধান পুড়ে যায় দুর্বৃত্তদের আগুনে। ২২ নভেম্বর সন্ধ্যায় মুথারাপুর গ্রামের লোকমান আলীর খড়ের গাদায় দূর্বৃত্তরা আগুন দেয়।

নন্দীগ্রামের তেঘরী গ্রামের মকবুল হোসেন ও ছায়েদ আলীর ধারণা এভাবে খড়ের গাদায় আগুন দিচ্ছে জ্বীন। ফজলুর রহমান নামের একজন জানান, নন্দীগ্রামে খড়ের গাদায় আগুন দেওয়া রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। প্রতি বছরই খড়ের গাদায় আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে।

মামলা মোকদ্দমা, জমি জমা নিয়ে বিরোধের জের ধরে ভয় দেখানোর উদ্দেশ্যে গ্রামের টাউট প্রকৃতির লোকজন এই কাজ করে থাকেন। তবে হাতেনাতে ধরা না পড়ায় তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না।

নন্দীগ্রাম সদর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বারী বার্তা২৪কে বলেন, ‘একের পর এক খড়ের গাদায় আগুন দেওয়ার ঘটনায় গ্রামের মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। বিশেষ করে গো খাদ্য সংকটে পড়েছেন ক্ষতিগ্র্স্ত পরিবারগুলো।

নন্দীগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন বার্তা২৪কে বলেন, ‘খড়ের গাদায় আগুন দেওয়ার ঘটনা শুনেছি। দুর্বৃত্তদের শনাক্ত করতে অনুসন্ধান চলছে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর