বিষ্ণু মন্দিরের জায়গা দখল করে বাড়ি নির্মাণ

ময়মনসিংহ, জাতীয়

জিয়াউর রহমান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, নেত্রকোনা, বার্তা২৪.কম | 2023-08-31 22:44:43

নেত্রকোনায় ৬০০ বছরের পুরনো বিষ্ণু মন্দিরের জায়গা দখল করে বাড়ি নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলার হিন্দু সম্প্রদায়ের একমাত্র এ বিষ্ণু মন্দিরটির সামনের জায়গা দখল করে স্থানীয় সুশীল রায় নামে এক ব্যক্তি বাড়ি নির্মাণ করছেন বলে জানা গেছে।

ঐতিহ্যবাহী বিষ্ণু মন্দিরের প্রধান ফটকের গোড়া থেকে পুরো খোলা চত্বরটি দখলে নিয়ে বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করায় স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।

তবে মন্দিরের সামনের ১০ শতাংশ পতিত জায়গা নিজেদের সাফকাওলামূলে ক্রয়কৃত দাবি করে দখলের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সুশীল রায়।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মোহনগঞ্জ পৌর শহরের দৌলতপুর এলাকার শিয়ালজানি খালের তীর ঘেঁষে বিষ্ণু মন্দিরটি ৮৫৫ বঙ্গাব্দে নির্মাণ করা হয়। এরপর থেকে বংশ পরম্পরায় এলাকার হিন্দু ধর্মাবলম্বী বিষ্ণু ভক্তরা নিয়মিত এ মন্দিরে পূজা-অর্চনা করে আসছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বিষ্ণু মন্দিরের পুরো চত্বরটি দখল করে জনৈক সুশীল রায় ও তার ভাইয়েরা মিলে সেখানে বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন। এতে করে বিষ্ণু মন্দিরের পূজারী, ভক্তবৃন্দ ও দর্শানার্থীদের খোলা চত্বরে বসার স্থানটিও আর রইল না। অবশিষ্ট নেই মন্দিরে প্রবেশের একমাত্র রাস্তাটিও।

অভিযুক্ত সুশীল রায় বলেন, ‘নরেন্দ্র কিশোর রায়ের বাড়িতে পারিবারিকভাবে গড়ে উঠা এ মন্দিরে পারিবারিকভাবে পূজা করে আসছিলেন। নরেন্দ্র কিশোর রায়ের ছেলে ধীরেন্দ্র কিশোর রায়ের কাছ থেকে ৯ বছর আগে এই মন্দিরের সামনের প্রায় ১০ শতক জায়গা সাফ কাওলামূলে আমরা তিন ভাই মিলে ক্রয় করি।’

তিনি আরো বলেন, মন্দিরটি পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল, সংস্কার করে নিয়মিত সেখানে পূজা করে আসছি। মন্দিরের কোনো জায়গা দখল করে বাড়ি নির্মাণ করছি না।’

এই জায়গার সাবেক মালিক ধীরেন্দ্র কিশোর রায়ের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

স্থানীয় বাসিন্দা অমল চৌধুরী অভিযোগ করে জানান, ‘সার্বজনীন দেবোত্তর বিষ্ণু মন্দিরটির দখলকারী সুশীল রায় মন্দির কমিটির সম্পাদক বিপ্লব রায়ের আত্মীয়। তাই তিনি কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।’

বিষ্ণু মন্দির কমিটির সম্পাদক বিপ্লব রায় বলেন, ‘সুশীল রায় জায়গা কিনে ও তিনি তার ক্রয় করা জায়গা থেকে মন্দিরের রাস্তার জন্য তিন ফুট জায়গা রেখেই সেখানে বাড়ি নির্মাণ করছেন।’

মোহনগঞ্জ উপজেলা হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি অমল সরকার ও সাধারণ সম্পাদক বিমল পাল জানান, বিষ্ণু মন্দির রক্ষার যাবতীয় দায়িত্ব মন্দির পরিচালনা কমিটির। এ বিষয়ে তাদেরকেই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে তারা মনে করেন।

এ বিষয়ে উপজেলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মেহেদী মাহমুদ আকন্দ বলেন, ‘খোঁজ নিয়ে এ ব্যাপারে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর