কলেজের হিসাবরক্ষকের অ্যাকাউন্টে ২৪ কোটি টাকা, দুদকের মামলা

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-11-21 02:17:07

ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাবে থাকা ২৪ কোটি ২৯ লাখ ৮৯ হাজার ৫২৪ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও স্থানান্তরের অভিযোগে ডেমরার ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. আকরাম মিয়ার নামে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

সোমবার (২০ নভেম্বর) দুদকের উপপরিচালক শারিকা ইসলাম বাদী হয়ে সংস্থাটির সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ মামলাটি দায়ের করেন। আসামির বিরুদ্ধে দুদক আইন ২০০৪ এর ২৭ (১) এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪ (২) ও ৪ (৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

মামলার এজহারে বলা হয়, মো. আকরাম মিয়া ২০১০ সালের ১ জুন ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে হিসাবরক্ষক পদে মাসিক ৩০০০ টাকা বেতনে যোগদান করেন। ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত কলেজ থেকে চাকুরী বাবদ সর্বসাকুল্যে আয় করেন ৪২ লাখ ৭৩ হাজার ৩৪৩ টাকা। কিন্তু দুদকের অনুসন্ধানে তার ব্যাংক একাউন্টে ২৪ কোটি ২৯ লাখ টাকা পাওয়া যায়।

মামলার এজহারে আরও বলা হয়, মো. আকরাম মিয়া প্রথমে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে আইএফআইসির কোনাপাড়া শাখায় একটি স্থায়ী আমানত হিসাব খোলেন। যাতে ১৪ কোটি টাকা জমা রাখেন এবং ২০১৮ সালের জুনে একই ব্যাংকের একই শাখায় অপর দুইটি স্থায়ী আমানত হিসাব খুলে যথাক্রমে চার কোটি আশি লাখ টাকা এবং ৩৩ লাখ ৩০ হাজার ৫৩০ টাকা জমা রাখেন। পরবর্তীতে এর ২০১৮ সালের জুলাই ও সেপ্টেম্বর মাসে দুটো পে-অর্ডারের মাধ্যমে আইএফআইসি ব্যাংকের কোনাপাড়া শাখা থেকে মোট ১৯ কোটি ৪৮ লাখ ৯৩ হাজার স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের মাতুয়াইল শাখায় স্থানান্তর করেন। তা দিয়ে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকে নিজের নামে দুইটি স্থায়ী আমানত খুলেন।

যাতে যথাক্রমে ১৪ কোটি ২৩ লাখ ৫০ হাজার ও ৫ কোটি ২৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা জমা রাখেন। পরবর্তীতে ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের মাতুয়াইল শাখা থেকে ৫ টি পে-অর্ডারের মাধ্যমে মোট ২৪ কোটি ২৩ লাখ ৩২ হাজার ৫৪৭ টাকা বেসিক ব্যাংকের মাতুয়াইল শাখায় স্থানান্তর করেন। তিনি নিজের নামে বেসিক ব্যাংক লিঃ এর মাতুয়াইল শাখায় ৫টি স্থায়ী আমানত হিসেব খুলে উক্ত অর্থ জমা রাখেন এবং মেয়াদপূর্তিতে বর্ণিত পাঁচটি হিসাবের অর্থ ২০২২ সালের মার্চ মাসের একই ব্যাংকের একই শাখায় নতুন ৫টি স্থায়ী আমানত হিসাব খুলে জমা রাখেন। বর্তমানে  মো. আকরাম মিয়া নামে বেসিক ব্যাংক লিঃ এর মাতুয়াইল শাখায় উল্লিখিত ৫টি স্থায়ী আমানত হিসাবে মোট ২৪ কোটি ২৯ লাখ ৮৯ হাজার ৫২৪ টাকা গচ্ছিত রয়েছে।

দুদকের অনুসন্ধান বলছে, আকরাম ওই কলেজে যোগদানের পর থেকে অসাধু উপায়ে এই অর্থ অর্জন করেছেন এবং দখলে রেখেছেন যা তার জ্ঞাত আয়ের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ। তিনি ওই অর্থ কলেজের বলে দাবী করলেও এ সপক্ষে তিনি বা কলেজ কর্তৃপক্ষ কোন তথ্য/রেকর্ডপত্র প্রদান করেতে পারেনি। ২০১৭ সাল থেকে কলেজের অর্থ তার ব্যাংক একাউন্টে রাখার বিষয়ে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের গভর্নিং বডি কোন অনুমোদন বা রেকর্ডপত্র প্রদান করেতে পারে নি। এছাড়া কলেজের আয়-ব্যয় খাতওয়ারী হিসাবভুক্ত করে কলেজের নিজস্ব ব্যাংক একাউন্টে রাখার বিধান রয়েছে কিন্তু তা কোন কর্মচারীর ব্যক্তিগত হিসেবে রাখার সুযোগ নেই।

অর্থাৎ তার ব্যাংকে থাকা ২৪ কোটি ২৯ লাখ ৮৯ হাজার ৫২৪ টাকা জ্ঞাত আয়ের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ।

এ সম্পর্কিত আরও খবর