আলোকিত সমাজ গড়তে প্রতি ইউনিয়নে গড়ে উঠুক পাঠাগার

বরিশাল, জাতীয়

মোকাম্মেল মিশু, ভোলা, বার্তা২৪.কম | 2023-08-29 02:27:17

চারদিকে নদী বেষ্টিত দ্বীপ জেলা ভোলা। এই জেলায় ৬৮ ইউনিয়নে মোট জনসংখ্যা প্রায় ২২ লাখ। যাদের একটি বড় অংশ শিশু-কিশোর। তারাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। বর্তমানে জেলা শহরের পাশাপাশি গ্রামেও আধুনিকতার ছোঁয়া লাগতে শুরু করেছে। শিক্ষা-দীক্ষায় অগ্রসর হচ্ছে গ্রামের শিশুরা। তবে দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে শিক্ষা এবং অবাধ তথ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে একটি পাঠাগার থাকা জরুরি।

ভোলার প্রতিটি ইউনিয়নেও পাঠাগার স্থাপন করা একান্ত প্রয়োজন। এখানের অনেক কিশোর-কিশোরী অর্থের অভাবে বই কিনে পড়তে পারে না। আবার অনেকই অযথা সময় নষ্ট করে। তাই পাঠাগার স্থাপন করলে তারা বই পড়ে জ্ঞান অর্জন করতে পারবে। পাঠাগারে মুক্তিযুদ্ধের বই, বিজ্ঞান বিষয়ক বই, সামাজিক সচেতনতা মূলক-বয়সন্ধীকাল সম্পর্কিত বিভিন্ন বই, জীবন দক্ষতা বিষয়ক বইসহ নানা বিষয়ের শিক্ষণীয় বই ও পত্র পত্রিকা রাখা যেতে পারে। কারণ জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গড়তে তরুণ সমাজকে জ্ঞানের আলোর সংস্পর্শে আনতে হবে।

দেশের সব শিশু কিশোরকে জ্ঞানে-গুণে উন্নত করতে হবে, মনের চোখ খুলতে হবে। তবে বই যদি সহজলভ্য না হয়, তাহলে গরিব জনগোষ্ঠীর সন্তানরা উচ্চশিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবে। তারা জীবনের সঠিক পথ সম্পর্কে জানতে পারবে বই পড়ার মাধ্যমে। তাই প্রতিটি ইউনিয়নের পাঠাগার স্থাপন হলে ইউনিয়েন সকল মানুষের মধ্যে স্বেচ্ছায় স্বশিক্ষিত হওয়ার সুযোগ বাড়বে।

তৃণমূল পর্যায়ে পাঠাগার তৈরি সম্পর্কে দৈনিক আজকের ভোলার সম্পাদক অধ্যক্ষ মুহাম্মদ শওকাত হোসেন বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ‘সরকারের বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণের উদ্যোগ প্রশংসনীয়। এতে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সন্তানরা লেখাপড়া করার সুযোগ পাচ্ছে। তবে এখন সরকারকে দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে পাঠাগার স্থাপন করতে হবে। কারণ শরীর চর্চার মাধ্যমে যেমন শরীর উন্নত হয়, পড়াশোনার মাধ্যমে তেমন মনের উন্নতি হয়।’

তিনি আরো বলেন, ‘সোনা কিংবা রূপার চেয়েও মূল্যবান বই। তাই তো শরৎচন্দ্র বলেছেন, বই পড়াকে যথার্থ হিসেবে যে সঙ্গী করে নিতে পারে, তার জীবনের দুঃখ-কষ্টের বোঝা অনেক কমে যায়। এক কথায় বই হচ্ছে মস্তিষ্কের সন্তান। এজন্য প্রয়োজন সরকারিভাবে কিংবা ব্যাক্তি উদ্যোগে প্রতিটি ইউনিয়নের একটি বা দুটি কক্ষে ছোট আকারে পাঠাগার স্থাপন করা। যার দেখভাল করবে ইউনিয়ন পরিষদ। এই পাঠাগারের মাধ্যমে বই পড়াকে উৎসাহিত করার জন্য প্রতি সপ্তাহে বিভিন্ন আয়োজন করা এবং পুরস্কারের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। কারণ বই মানুষকে আলোকিত করে।’

ভোলার পরানগঞ্জ গ্রামীণ সমাজ কল্যাণ পাঠাগারের সাধারণ সম্পাদক এম শাহরিয়ার জিলন বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ‘শিক্ষা জাতীর মেরুদণ্ড। যদি আমরা আগামী প্রজন্মকে বই পড়ার প্রতি আগ্রহী করে তুলতে পারি তাহলে আমাদের দেশ আরো এগিয়ে যাবে। তাই ভোলার প্রতিটি ইউনিয়নে পাঠাগার স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে প্রশাসনকে অনুরোধ করছি।’

ভোলা জেলা প্রশাসক মাসুদ আলম ছিদ্দিক বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ‘জাতিকে সঠিক পথে পরিচালিত করার দিশারী হলো বই। বই পড়ে যে জ্ঞান অর্জন করা যায়, তার সঙ্গে চোখে দেখার অভিজ্ঞতা যুক্ত হলে তা পূর্ণতা পায়। তাই তো সরকার জেলা শহরে সরকারিভাবে ইতোমধ্যে পাঠাগার স্থাপান করেছে। আগামীতে প্রতিটি উপজেলায়, পৌর শহরে এমনকি প্রতিটি ইউনিয়নে পাঠাগার স্থাপন জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হবে। যাতে তৃণমূলের কিশোর-কিশোরীরা এই পাঠাগার থেকে জ্ঞান অর্জন করে ভবিষ্যতে রাষ্ট্র গঠনে ভূমিকা রাখতে পারে।’

 

এ সম্পর্কিত আরও খবর