চলছে অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০২৪। বাঙালির কাছে বইমেলা যেন প্রাণের এক মিলনমেলা। পরিবার-পরিজন কিংবা বন্ধুসমাজ অথবা লেখকের সঙ্গে পাঠকের সম্মিলন ঘটে এ মেলায়। বইমেলার ৩য় শুক্রবারে স্কুল-কলেজ ড্রেস পড়ুয়া এক দল শিশু কিশোরের হৈ-হুল্লোড় করতে করতে মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রাঙ্গণে প্রবেশের দৃশ্য এই মিলনমেলার কথা আরেকবার মনে করিয়ে দেয়। তবে এবার এই প্রাণের মিলনমেলা এখনো সন্তুষ্ট করতে পারেনি বই বিক্রেতাদের কিন্তু আশা দেখাচ্ছে প্রথমার্ধের বইমেলা।
শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বইমেলার ১৬তম দিন। সে হিসেবে ইতিমধ্যে মেলার অর্ধেক সমাপ্তি ঘটেছে। কাগজ সংকট ও কাগজের দ্বিগুণ মূল্য বৃদ্ধির কারণে এবারও মেলা শুরুর পূর্বে নানা শঙ্কায় ছিল প্রকাশকরা। কিন্তু মেলার প্রথমার্ধে মেলা প্রাঙ্গণে পাঠকের আনাগোনা ও বই বিক্রির হার চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়তে থাকায় আশাবাদী বেশিরভাগ প্রকাশনী।
প্রথমা প্রকাশনীর প্রকাশক মো. সোহেল হাসান জানান, এ বছর বইমেলায় আমাদের ৭০টি নতুন বই আসার কথা। এর মধ্যে অর্ধেক বই মেলায় আনা হয়েছে এবং বাকি বই খুব শীঘ্রই মেলায় আনা হবে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর বিক্রির পরিমাণ বেশ ভালো। তাছাড়া ভালোবাসা দিবস ও বসন্তের আগমনী উপলক্ষে দর্শনার্থীরা অনেক বই কিনেছেন।
বইমেলায় সোহরাওয়ার্দী প্রাঙ্গণে 'মাওলা ব্রাদার্স' এর বিপণন কর্মী তামিম এর সঙ্গে কথা হলে তিনি বার্তা ২৪.কমকে বলেন, 'বিগত দুই-তিন বছর কোভিডের কারণে আমাদের মনে একটা শঙ্কা ছিল। মেলায় বিক্রিও আশানুরূপ ছিল না। যেহেতু এবার আর কোভিডের আতঙ্ক নেই, তাই শুরু থেকেই পাঠকরা আসছেন, মেলা ঘুরে দেখছেন। তবে প্রথম দিকে মানুষ ঘুরে দেখেই চলে যেত, এখন বই বিক্রি হচ্ছে ভালোই। তাছাড়া সব মিলিয়ে এবারের প্রথমার্ধ হিসেবে লক্ষণ ভালো।'
‘শব্দশৈলী’ প্রকাশনীর বিক্রয় কর্মী রাসেল বলেন, বই বিক্রির সংখ্যা মোটামুটি। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় ভালো। আমরা আশা করছি শেষের দিকে বিক্রি আরো বাড়বে। আমাদের তিনটি বই- ‘জয় বাংলা জয়’, ‘১৯৭১’ ও ‘মোশতাকের মন’। এই তিনটি বই এখনও মেলায় আসেনি তবে শীঘ্রই চলে আসবে।
‘অক্ষর প্রকাশনী’র বিক্রয়কর্মী শাহরিয়ার হোসেন বলেন, বিক্রির সংখ্যা আস্তে আস্তে বাড়ছে। এ বছর আমাদের এখানে শুধুমাত্র একটি নতুন বই এসেছে। বইটি হলো আলতাফ হোসেন উজ্জ্বলের ‘হলুদ সন্ধার চাঁদ’। পরবর্তী বই মেলায় বেশি বই আসবে।
প্রসঙ্গত, বাংলা একাডেমি থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুসারে এই পর্যন্ত বইমেলায় নতুন প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ১৩২৬টি। শুক্রবার দিনের মধ্যে এখনো নতুন বই সংগ্রহের কাজ চলমান রয়েছে।