কাস্টমস অফিসার সেজে কোটি টাকা আত্মসাৎ

ঢাকা, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-30 12:44:21

‘দামি কাপড়, দামি গাড়ি চড়ে রাজধানীর অভিজাত হোটেলগুলোতে বসে বিভিন্ন ক্লায়েন্টদের সঙ্গে ভোজন করতেন খন্দকার মো. ফারুক ওরফে ওমর মবিন (৫২)। দীর্ঘদিন ধরেই কাস্টমস অফিসার পরিচয় দিয়ে এ প্রতারণা করে আসছিলেন ওমর মবিন। প্রতারণাই ছিল তার একমাত্র পেশা। সেই জন্য তার দুই জন পিএসও ছিল।’

বুধবার (৯ জানুযারি) রাতে রাজধানীর বেইলি রোডের নবাবী ভোজ রেস্টুরেন্টের সামনে থেকে প্রতারক এই চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি।
বৃহস্পতিবার (১০ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীতে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংস্থাটির সিরিয়াস এন্ড হোমিসাইডাল

স্কোয়াডের বিশেষ পুলিশ সুপার (এএসপি) সৈয়দা জান্নাত আরা।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- খন্দকার ফারুক ওরফে ওমর মবিন (৫২), সহযোগী মোহাম্মদ ইলিয়াস ওরফে নুর ইসলাম সরকার (৩৮) ও মোঃ সাইফুল ইসলাম (৩০)।

এ সময় তাদের কাছ থেকে ১৮টি ওমর মবিন নামের কাস্টমস সহকারী কমিশনারের ভিজিটিং কার্ড, চারটি ব্যাংকের চেকের পাতা, সাতটি মোবাইল ও ১৩টি বিভিন্ন অপারেটরের সিম কার্ড জব্দ করা হয়।

সৈয়দা জান্নাত আরা বলেন, ‘এই চক্রটি কাস্টমস হাউজের জব্দকৃত স্বর্ণের বার নিলামের মাধ্যমে দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে জানতে পারি।’

‘প্রতারকদের মধ্যে খন্দকার ফারুক ওরফে ওমর মবিন নিজেকে কাস্টমস কমিশনার বলে পরিচয় দিতেন আর তার দুই সহযোগী ইলিয়াস ও সাইফুল কমিশনারের পিএস হিসেবে পরিচয় দিতেন।’

‘তারা বিভিন্ন মানুষকে টার্গেট করে প্রথমে পিএসদের পাঠাতেন এবং কাস্টমস হাউজের জব্দকৃত সোনার বার নিলামে দেওয়ার কথা বলে কোটি টাকা হাতিয়ে নিতেন।’
ইতোমধ্যে কয়েকজন ভুক্তভোগী পাওয়া গেছে, যাদের কাছ থেকে এই চক্র বিভিন্ন অংকের টাকা নিয়েছে বলেও জানান তিনি।

তিনি বলেন, ‘গ্রেফতারের পর আসামি খন্দকার মোঃ ফারুকের মোবাইল ফোনে মৃণাল নামে এক ভুক্তভোগীর ফোন আসে। তিনি সিআইডি কার্যালয়ে এসে প্রতারকদের শনাক্ত করেন। ভুক্তভোগী মৃনালের কাছ থেকেও ওমর মবিন স্বল্প মূল্যে স্বর্ণ দেওয়ার কথা বলে ২৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আসামিদের কাছ থেকে ৪০ কোটি টাকার ব্লাংক চেক পেয়েছি। জিজ্ঞাসাবাদে ওমর মবিন জানান, গত পাঁচ বছর আগে জামালপুরের এক এমপির পিএস হিসের কাজ করতেন। সেখান থেকে চাকরি চারার পর প্রতারণার মাধ্যমে মানুষের কাছ থেকে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।’

পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রতারক ওমর মবিন ভুক্তভোগীদের বলতেন, আমরা কাস্টমস, স্বর্ণের বার আমরা জব্দ করেছি, আমরা সব পারি। আমাদের অনেক ক্ষমতা। কোনো সমস্যা নেই। এতে ভুক্তভোগীদের নিজের ভিজিটিং কার্ডও দিতেন, সেখানে কাস্টমস কমিশনার ওমর মবিন নাম ব্যবহার করতেন। তার পাসপোর্টে খন্দকার মো. ফারুক নাম দেওয়া।’

আসামিদের বিরুদ্ধে রমনা থানায় একটি মামলা (নম্বর-১৮) দায়ের করা হয়েছে। তাদের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর