চালের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির সুযোগ নেই উল্লেখ করে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, বাজারে অযৌক্তিক কারণে অস্বাভাবিকভাবে চালের দাম বৃদ্ধির কোনো সুযোগ নেই। তবুও কেন এই সমস্যা হচ্ছে তা খতিয়ে দেখতে হবে। দেশ হিসেবে আমরা খাদ্যে সয়ংসম্পন্ন হয়েছি অনেক আগে। ইতোমধ্যে প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি চাল ও খাদ্যশস্য মজুদ আছে। তারপরও চালের দাম বাড়বে কেন?
বৃহস্পতিবার (১০ জানুয়ারি) খাদ্য অধিদফতরে নির্বাচনের পর হঠাৎ প্রতি কেজি চালের দাম ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধির বিষয়ে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন অটো চাল মিল মালিকদের সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, চালের আড়তদার ও বিভিন্ন পর্যায়ের চাল ব্যবসায়িরা। অনুষ্ঠানে খাদ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, দেশে কৃষক ধান উৎপাদন করে, সেই ধান প্রক্রিয়াজাত করে খুচরা বিক্রেতার কাছে পৌঁছে দেয় মিল মালিকরা। আর সেই খুচরা ব্যবসায়িরা সাধারণ ভোক্তাদের কাছে পৌঁছে দেয়। এখানে তিন স্তরে মধ্যস্থাতাকারী থাকে। চালের দাম বাড়লে এই তিন পর্যায়ের অংশগ্রহণকারীদের দায় নিতে হবে।
আমি বিষয়টি গণমাধ্যমে দেখার সঙ্গে সঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে সংশ্লিষ্টদের ডেকেছি। আমরা এখানে বিস্তারিত কথা বলবো। সমাধানের উপায় খুঁজে বের করবো। কারণ বিষয়টি একেবারেই সাধারণ মানুষের সঙ্গে সম্পৃক্ত- যোগ করেন খাদ্যমন্ত্রী।
এ সময় উক্ত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সদ্য দায়িত্ব নেওয়া বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সি। তিনি বলেন, আমার যদিও খাদ্যের বিষয়ে কোনো কাজ নেই। কিন্তু চালের দাম বৃদ্ধি পেলে আমার জবাবদিহিতা রয়েছে। ফলে আমি খাদ্যমন্ত্রীর কাছে জানার পরপরই সম্মতি দিয়েছি, বিষয়টি নিয়ে আমাদের বসতে হবে।
টিপু মুন্সি বলেন, আমি পরিস্কার বলতে চাই যে দেশে খাদ্য মজুদ থাকে সেই দেশে হুটহাট খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পেতে পারে না। এটা আমাদের খতিয়ে দেখতে হবে। যেকোনো মূল্যে চালের দাম স্বাভাবিক রাখতে কাজ করতে হবে।
মতবিনিময় সভায় নওগাঁ জেলা চাল কল মালিক নেতা নায়েব আলী বলেন, আমরা জাস্ট ধান ক্রয় করে প্রক্রিয়াজাত করে বাজারে চাল বিক্রি করি। এখানে সামান্য লাভ রেখে আমরা চাল ছেড়ে দেই। চালের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি আমাদের ওপর বর্তায় না। এটা প্রতিরোধে খুচরা ব্যবসায়িদের প্রতি নজর দিতে হবে।
এ সময় আরেক চাল কল মালিক সমিতির নেতা বেলাল হোসেন বলেন, আমরা অটো রাইস মিল মালিকরা যে চাল ৪৭ টাকা কেজি দরে বিক্রি করি সেটা ঢাকায় এসে প্রতি কেজি ৭০ থেকে ৭৮ টাকা করে হয় কেমনে? এটা আমাদেরও প্রশ্ন। অযথা চাল মিল মালিকদের দোষারোপ করবেন না। এটা আমাদের প্রতি অন্যায়। কোথায় এই সমস্যা আছে সেটা সঠিক তদারকি করতে হবে।
এ সময় দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা চাল ব্যবসায়ি ও মিল মালিকরা বক্তব্য দেন।