‘যারা আন্দোলনে ব্যর্থ, তারা নির্বাচনে জিততে পারে না’

ঢাকা, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, ঢাকা, বার্তা২৪.কম | 2023-08-24 14:29:42

একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপির ভরাডুবি নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আন্দোলন যাদের ব্যর্থ হয় নির্বাচনে তারা কখনো জয় লাভ করতে পারে না, এটা বাস্তবতা। সেটা প্রমাণ হয়েছে ২০১৮ সালের নির্বাচনে। এ নির্বাচনে বিএনপির ব্যর্থতার কারণটা কী? সেট বিএনপিকে বলব তাদেরই ভেবে দেখতে হবে।’

বৃহস্পতিবার (১০ জানুয়ারি) রাজধানীর কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে আওয়ামী লীগ সভাটির আয়োজন করে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা (বিএনপি) অগ্নি সন্ত্রাস করে প্রায় তিন হাজার নয় শতাধিক গাড়ি, বাস, সিএনজি, লঞ্চ পুড়িয়েছে। সাড়ে তিন হাজার মানুষকে তারা পুড়িয়ে মেরেছে। এসব অপকর্মের পর তারা কীভাবে আশা করতে পারে জনগণ তাদের ভোট দেবে।’

বিএনপির নেতৃত্বের সমালোনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এতিমের অর্থ আত্মসাৎ করে বিএনপি নেত্রী কারাগারে বন্দী। তার পুত্রকে বানিয়েছে বিএনপির অ্যাকটিং চেয়ারপারসন। সে হলো ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাকারবারী মামলার আসামি এবং ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। বিদেশে পালিয়ে আছে। বিএনপির এমন কোনো নেতা নাই যে, দেশের ভেতরে থেকে তারা তাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বানাতে পারে, তারা বানালো একটা সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে।’

বিএনপি নমিনেশন নিয়ে অকশন করেছে দাবি করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘নির্বাচনের সময় তারা কী করল। তারা সেখানে প্রার্থী নির্বাচন কীভাবে করেছে? সেটা নিয়ে তো রীতিমত মনোনয়ন বাণিজ্য। একেকটা সিটে তিনজন, চারজন, পাঁচজন করে মনোনয়ন। নমিনেশন যাদেরকে দিয়েছে, দেয়ার পরে তাদের সিম্বলটা পাবে? যে যত টাকা দিচ্ছে সে পাচ্ছে। সকালে একজন হয়ত এক পরিমাণ টাকা দিলো, তাকে দিয়ে দিল। কিছুক্ষণ পর দেখা গেল আরেকজন তার থেকে একটু বেশি টাকা দিল, তখন আবার তাকে দিলো। দুপুর গড়াতে পারলো না বিকেল হলে তখন আরেকজন আরেকটু বেশি টাকা দিল, তখন সে আবার চিঠি পেলো। এই হলো তাদের নমিনেশনের ট্রেড, বিজনেস, অকশন। মনে হলো নমিনেশন তারা অকশনে দিয়েছে।’

একাদশ সংসদের ভোটের পার্সেন্টেজ নিয়ে যাদের মধ্যে সংশয়, সন্দেহ তৈরি হয়েছে তাদেরকে ২০০৮ সালের ভোটের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০০৮ এর নির্বাচনে জনগণ আমাদের ম্যান্ডেন্ট দিয়েছিল। ব্যাপক হারে ভোট পড়ে। আপনারা যদি ২০১৮ আর ২০০৮ এর নির্বাচন তুলনা করেন, ২০০৮ এ কিন্তু ভোট পড়েছিল আরও অনেক বেশি। প্রায় ৮৬ ভাগ ভোট পড়েছিল। কোনো কোনো কেন্দ্রে ৯০ ভাগের মতো ভোট পড়েছিল। অনেকেই লিখছে, অনেক কথা বলছে। কিন্তু তারা যদি এই তুলনাটা দেখে, তখন দেখেবে ২০০৮ এর নির্বাচনে ভোট পড়েছিল অনেক অনেক বেশি। পার্সেন্টেজ বেশি। জনগণ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়। নৌকা মার্কায় ভোট পেয়ে আমরা দেশ সেবায় নিয়োজিত হই।’

৭৫-এ বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারকে হত্যায় দেশের বৈরি পরিবেশের কথা স্মরণ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ নিষিদ্ধ ছিল। কোথাও বঙ্গবন্ধুর নামটা পর্যন্ত নেওয়া হত না। তাকে এমনভাবে চিত্রিত করা হত যেন তিনি একটা মহা অপরাধ করে দিয়ে গেছেন। সে অপরাধটা হলো বাংলাদেশের স্বাধীনতা।’

তিনি আরও বলেন, ‘২১ বছর পর আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। অনেক ঘাত প্রতিঘাত চড়াই উৎরাই পার হয়ে আমরা ক্ষমতায় আসি। এ ক্ষমতায় আসার পর রাষ্ট্রীয়ভাবে যখন ৭ মার্চের ভাষণ আমরা প্রচার শুরু করি। এদেশের তরুণ, এদেশের যুব সমাজ বলতে গেলে চমৎকৃত হয় যে, এমন একটা ঐতিহাসিক ভাষণ থেকে এ জাতিকে বঞ্চিত করা হয়েছিল। আজকে সে ভাষণ বিশ্ব ঐহিত্যের প্রামাণ্য দলিলে স্থান করে নিয়েছে। সত্যকে কখনো কেউ মুছে ফেলতে পারে না। সত্যকে বিকৃত করে সাময়িকভাবে হয়ত কিছু অর্জন করা যায়, কিন্তু কখেনোই চিরদিনের জন্য সত্যকে মুছে ফেলা যায় না। সেটাই আজ প্রমাণিত সত্য।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর