সরকারি চাকরি, ফুটফুটে এক কন্যা সন্তান ও স্ত্রী নিয়ে শাহ জালালের সংসার। সংসার চালানের ফাঁকে টাকা জমিয়ে ঘুরতে যাওয়া। ছুটির দিনে পরিবার নিয়ে বাইরে খাওয়া; এসব নিয়ে সুখের সংসার তার! বেইলি রোডের আগুন কেড়ে নিলো এই সংসারের তিনটি প্রাণেই।
একটি দুর্ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে থাকে অজানা নানা সুখ-দুঃখের গল্প! এমননি গল্প ছিল সরকারি কর্মকর্তা শাহ জালাল উদ্দিন ও তার পরিবারের। যে রাতে গ্রামের বাড়ি কক্সবাজার বাজারে যাওয়ার কথা ছিল তাদের। কিন্তু, সেই রাতেই বেইলি রোডের আগুনে পুড়ে শেষ হলো। ২৪ ঘণ্টা ঢামেক হাসপাতালের মর্গে অজ্ঞাত মরদেহের পরিচয়ে থেকে অবশেষে তাদের পরিচয় মিলল।
আনুষ্ঠানিকভাবে শনিবার (২ মার্চ) সকালে পরিবারের কাছে শিশুটিসহ তিন জনের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।
পরিচয় নিশ্চিত হওয়া তিনটি মরদেহ হলো- সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা শাহ জালাল উদ্দিন (৩১), তার স্ত্রী মেহরুন নেসা জাহান হেলালী (২৪) এবং তাদের এক মাত্র মেয়ে ফাইরোজ রহমান (৪)।
গতকাল শুক্রবার রাতে তাদের মরদেহ শনাক্ত ও পরিচয় নিশ্চিত করেন মেহরুন নেসার বাবা ইঞ্জিনিয়ার মো. মুক্তার আলম হেলালী। সন্তান হারানো এই বাবা জানালেন, কক্সবাজার যাওয়ার কথা ছিল তাদের।
তিনি বলেন, নিহত শাহ জালালের স্ত্রী ও তাদের একমাত্র মেয়ে ফাইরোজ মিলে কক্সবাজার যাওয়ার উদ্দেশ্যে কেরানীগঞ্জের বাসা থেকে কক্সবাজার উখিয়ায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হন। গ্রীণ লাইন পরিবহনের বাসের টিকিট কাটা ছিলো। বাসা থেকে বের হয়ে তারা রাতের খাবার খেতে বেইলি রোডের গ্রীণ কজি কটেজের তৃতীয় তলায় কাচ্চি ভাই রেস্তোরাঁয় যান। সেখানেই তাদের মৃত্যু হয়। কক্সবাজারের যাত্রা থেমে গেলো বেইলি রোডে।
জানা গেছে, নিহত সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা শাহজালালের গ্রামের বাড়ি কক্সবাজারের উখিয়া থানার পূর্ব গোমালিয়া এলাকায়। আর নিহত মেহেরুন নেসার বাড়ি রামু উপজেলায়। তারা কেরানীগঞ্জ এলাকায় থাকত।
গত বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে বেইলি রোডের ভবনটিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে এ পর্যন্ত ৪৬ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। আহতদের মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুজন এবং শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ১০ জন ভর্তি আছেন।