পটুয়াখালী সদর থানার পতিত জমিতে সবুজের সমারোহ

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, পটুয়াখালী | 2024-03-28 03:36:11

‘এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি রাখা যাবে না’- খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ থাকার জন্য খাদ্য উৎপাদনে জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে এভাবেই দেশবাসীকে আহ্বান জানিয়েছিলেন  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে পটুয়াখালী সদর থানার মালিকানায় থাকা পতিত জমিতে চাষ করা হয়েছে বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি। চলতি মৌসুমে পটুয়াখালী সদর থানার সকল পতিত জমিই চাষাবাদের আওতায় আনা হয়েছে।

থানা চত্বর ঘুরে দেখা যায় লাউ, মিষ্টিকুমড়া, বেগুন, টমেটো, করলা, শিম, কাচা মরিচ, শসা, লালশাক, ক্যাপসিকাম থেকে শুরু করে রেড বিটের মতো ফসলও আবাদ করা হয়েছে। এছাড়াও থানার পরিত্যক্ত পুকুরটিকে পরিষ্কার করে করা হচ্ছে মাছ ও হাঁস চাষ।

থানায় নিয়জিত পুলিশ সদস্যরা বলছেন, সরকারি দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি নিজেরাই এসব সবজি ক্ষেতে কাজ করছেন, মিলছে মানসিক প্রশান্তিও। নিয়মিত পরিচর্যা ও তদারকি করায় ফলন হয়েছে ভালো। এখানে উৎপাদিত শাকসবজি থেকে পুলিশ সদস্যদের দৈনন্দিন চাহিদাও পূরণ হচ্ছে। কীটনাশকমুক্ত শাকসবজি খেতে পারায়ও খুশি তারা।

প্রধানমন্ত্রীর যে নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে নিজেরাই উপকৃত হচ্ছে বলে মনে করছেন পুলিশ সদস্যরা। এদিকে থানায় বিভিন্ন সেবা নিতে আসা লোকজনও এই কৃষিকাজ দেখে প্রশংসায় ভাসাচ্ছেন থানা পুলিশ সদস্যদের।

পটুয়াখালী সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. জসিম বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একটা নির্দেশনা ছিল যে চাষযোগ্য কোনো জমিই যাতে অনাবাদি না থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় আমাদের আইজিপি স্যার, ডিআইজি স্যার ও এসপি স্যার আমাদের সব সময়ই আমাদের নির্দেশনা দিয়ে থাকেন অনাবাদি ও চাষ যোগ্য জমিতে যাতে শাকসবজি ও ফলমূলের আবাদ করা হয়। আমরা এবছর অনেক শীতকালীন শাকসবজি চাষ করেছি। লাউ, মিষ্টিকুমড়া, বেগুন, টমেটো, করলা, শিম ও কাঁচা মরিচসহ বিভিন্ন ধরনের শাকসবজির আবাদ করেছি। এবছর আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো ফলন পেয়েছি। এখানে উৎপাদিত শাকসবজি থেকে পুলিশ সদস্যদের দৈনন্দিন চাহিদাও পূরণ হচ্ছে।

পটুয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আহমদ মাইনুল হাসান বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতেই এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আমাদের বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি স্যার ও পুলিশ সুপার স্যারের দিকনির্দেশনায় পটুয়াখালী জেলা পুলিশের সকল জমিই চাষাবাদের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। আমরা সকালে সম্মিলিত ভাবে কাজ করেছি, চেষ্টা করেছি চাষাবাদের উপযোগী এমন প্রতিটি ইঞ্চি জমি আবাদের আওতায় আনতে। আবাদ করা এসব ফসল থেকে পুলিশ সদস্যদের পুষ্টির চাহিদা পূরণ হচ্ছে। এবং দেশের নিরাপত্তা রক্ষার পাশাপাশি পুলিশ সদস্যরা দেশের খাদ্য উৎপাদনেও ভুমিকা রাখছে।

পটুয়াখালী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার খায়রুল ইসলাম মল্লিক বলেন, পুলিশের এমন উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। এ ধরনের চাষাবাদে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কারিগরি প্রশিক্ষণ, পরামর্শ দেওয়া হয়। প্রয়োজনে আমরা কৃষি উপকরণও সরবরাহ করে থাকি। সব সরকারি দপ্তরগুলোরই উচিত তাদের পরিত্যক্ত জমিতে চাষাবাদ করা। তাহলে আমাদের দেশে খাদ্য চাহিদার বড় একটি অংশ এখান থেকেই সংগ্রহ করা সম্ভব হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর