২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নাম্বার পেয়ে প্রথম হয়েছেন প্রতীক রসুল। সফল হওয়ার জন্য বেশি বেশি পড়া এবং তা বুঝে বুঝে পড়ার কোনো বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। ঢাবিতে প্রথম হলেও বাংলোদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সিএসই বিভাগে ভর্তি হওয়ার ইচ্ছে তার। বুয়েটে তিনি ৬৬ তম স্থানে রয়েছেন।
সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক ১ম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার বিজ্ঞান ইউনিটের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। এই ইউনিটে প্রথম হয়েছেন প্রতীক রসুল। তার প্রাপ্ত নম্বর ১১১.২৫। এছাড়াও আরও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষাতে ভালো ফলাফল করেছেন।
বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৩টার পর অধ্যাপক আব্দুল মতিন ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল এ ফলাফল প্রকাশ করেন। ভিসি জানান, ১ লাখ ৯ হাজার ৩৬৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছেন ৯ হাজার ৭২৩ জন পরীক্ষার্থী। পাসের হার ৮ দশমিক ৮৯ শতাংশ।
তবে সবশেষে তিনি বুয়েটে সিএসই বিভাগে ভর্তি হবেন বলে ইচ্ছে পোষণ করেছেন। প্রতীক রসুল কুষ্টিয়া শহরের সানআপ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এসএসসিতে জিপিএ-৫ এবং রাজধানীর নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন।
রোববার (৩১ মার্চ) বিকেলে কুষ্টিয়ায় এ প্রতিবেদকের সাথে বসে নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন প্রতীক রসুল।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তার পরামর্শ, অবশ্যই বেশি বেশি করে পড়ার কোন বিকল্প নেই এবং ‘যা পড়তে হবে তা বুঝে পড়তে হবে। মুখস্ত করে কোনো লাভ হয় না। দেখা যায় আজকে পড়ছি, আগামীকাল তা ভুলে যাচ্ছি। কিন্তু তা হলে তো হবে না। তাই যা পড়তে হবে তা বুঝেই পড়তে হবে।’
কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগে পড়ালেখা করো ভালো প্রকৌশলী হওয়ার পাশাপাশি একজন ভালো মানুষ হতে চান বলে জানান প্রতীক রসুল। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে একটি ভ্রান্ত ধারণা আছে, ডাক্তার ও ইন্জিনিয়ারদের প্রতি। সেই ধারণা থেকে সবাইকে বের করে নিয়ে আসার চেষ্টা করবো।’
এসময় তার পাশে ছিলেন বাবা প্রফেসর(অব:) আবু হেনা মো. গোলাম রসুল বাবলু। তিনি পেশায় একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক এবং মা সাবিনা সুলতানা অগ্রণী ব্যাংক পিএলসি. ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কর্পোরেট শাখার শাখাপ্রধান/সহকারী মহাব্যবস্থাপক। প্রতীক রসুল এ দম্পতির কনিষ্ঠ সন্তান।
ছেলের এমন ভালো ফলাফলে অত্যন্ত খুশি হয়েছেন তারা। তার বাবা প্রফেসর(অব:) আবু হেনা মো. গোলাম রসুল বাবলু বলেন, ‘সন্তানদের মানুষ করতে তাদের পেছনে অনেক শ্রম দিতে হয়েছে আমাকে। ছেলেকে স্কুলে আনা নেওয়া থেকে শুরু করে নানান গাইড লাইনসহ অনেক পরিশ্রম করতে হয়। তবে ছেলের এই সাফল্যের পেছনে তার মায়ের (সাবিনা সুলতানা) অবদান সবচেয়ে বেশি বলেও জানান গোলাম রসুল বাবলু। সে ব্যাংকে চাকরি করলেও সবসময়ই খোঁজ খবর নিতেন এবং রাতের পর রাত জেগে ছেলের লেখাপড়ার দিকে খেয়াল রাখত সে।’
২০১৯ সালে যশোর শিক্ষাবোর্ডের কুষ্টিয়ার সানআপ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এন্ড কলজে থেকে এসএসসি পাস করেন ঢাবির প্রথমস্থান অধিকারী প্রতীক রসুল। ২০২১ সালে রাজধানীর নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। দুই পরীক্ষায়ই জিপিএ-৫ পেয়েছেন তিনি।