উপজেলা নির্বাচন ঘিরে সরগরম রংপুর

রংপুর, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, রংপুর, বার্তা২৪.কম | 2023-08-31 20:05:53

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আমেজ শেষ না হতেই শুরু হয়েছে উপজেলা নির্বাচনের হাওয়া। উত্তরাঞ্চলের বৃহত্তর রংপুরের গ্রামীণ হাট-বাজার থেকে শহর-বন্দর পর্যন্ত চলছে নির্বাচনী আলাপচারিতা। সম্ভাব্য প্রার্থীদের প্রচারণায় মুখরিত জনপদ। বাড়ছে নির্বাচনী উত্তাপ। প্রায় ৮০ জন সম্ভাব্য প্রার্থীর পদচারণায় সরগরম পুরো রংপুর জেলা।

যদিও আগামী মার্চে সারাদেশে কয়েক ধাপে উপজেলার ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করতে চায় নির্বাচন কমিশন এবং এ উদ্দেশ্যে চলতি মাসেই কিংবা ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে তফসিল ঘোষণার সম্ভাবনা রয়েছে, তথাপি ভোটের তৎপরতা শুরু হয়ে গেছে সম্ভাব্য প্রার্থী ও ভোটারদের মধ্যে।

রংপুরের আট উপজেলার সম্ভাব্য প্রার্থীরাও দৌঁড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে লবিং করতে ছুটে যাচ্ছেন ঢাকায়। বিশেষ করে ক্ষমতাসীন দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা মনোনয়ন ও প্রতীক পেতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তৎপরতা রয়েছে সম্ভাব্যদের। নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানিয়ে কোথাও কোথাও সাটিয়েছে ব্যানার, পোস্টার ও ফেস্টুন লাগিয়েছেন। বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে অনেকেই চালাচ্ছেন কৌশলী গণসংযোগ।

রংপুর সদর উপজেলায় আওয়ামী লীগ থেকে চেয়ারম্যান পদে রংপুর সদর উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান ও জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিমা জামান ববি, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডা. দেলোয়ার হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির বকসী, চন্দনপাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান, বিএনপি থেকে জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান রন্টু, দপ্তর সম্পাদক হারুন অর রশিদ হারুন, সদর উপজেলা বিএনপির আহবায়ক অ্যাডভোকেট শফি কামাল, জেলা জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মাসুদ নবী মুন্না, সদর উপজেলা সভাপতি রুহুল আমিন লিটন ছাড়াও মমিনপুর ইউপি চেয়ারম্যান সুলতানা আক্তার কল্পনা, জাতীয় ওলামা পার্টির সভাপতি মাওলানা রমজান আলীর নাম শোনা যাচ্ছে।

গঙ্গাচড়া উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আসাদুজ্জামান বাবলু, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি রুহুল আমিন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান, বিএনপি থেকে গঙ্গাচড়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ওয়াহেদুজ্জামান মাবু ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোকাররম হোসেন সুজন। তবে জাতীয় পার্টি থেকে এখনো কারো নাম শোনা যায়নি।

বদরগঞ্জ উপজেলায় বর্তমান চেয়ারম্যান ফজলে রাব্বী সুইট, বিএনপি থেকে সাখাওয়াত হোসেন শাহান, বর্তমান উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সাইদুল ইসলাম, আওয়ামী মহিলা লীগের নেত্রী আফরোজা বেগম এবং তারাগঞ্জ উপজেলা থেকে বর্তমান চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান লিটন, কুমারেশ রায়, মাওলানা আশরাফ আলীর নাম শোনা যাচ্ছে।

কাউনিয়া উপজেলা থেকে আওয়ামীলীগের উপজেলা সভাপতি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম মায়া, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক, বিএনপি থেকে বর্তমান চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির কোষাধ্যক্ষ মাহফুজার রহমান মিঠু, হারাগাছ পৌর বিএনপি সভাপতি মোনায়েম হোসেন ফারুক, কমিউনিষ্ট পাটির উপজেলা সভাপতি গোবিন্দ দাস, ভূমিহীন আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক এম হক আকরাম নির্বাচন করবেন বলে জানা যায়। এখানে জাতীয় পার্টি থেকে এখনো কারো নাম শোনা যায়নি।

এছাড়াও পীরগাছা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ আব্দুল্লাহ আল মামুন মিলন, আমিনুল ইসলাম রাঙ্গা, জাতীয় পার্টি থেকে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবু নাসের শাহ মো: মাহবুবার রহমান নির্বাচনী মাঠে আলোচনায় রয়েছে।

মিঠাপুকুর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন সরকার, সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান, জাতীয় পার্টি থেকে আব্দুল হালিম মন্ডল, বাবর আলী, মেজবাহুল ইসলাম মিলন, শিল্পপতি আখতার হোসেন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ ও শাহ হাফিজুর রহমানসহ আরো কয়েকজনের নাম শোনা যাচ্ছে। অন্যদিকে পীরগঞ্জ উপজেলায় বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মন্ডল, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ছায়াদত হোসেন বকুল, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান সফিউর রহমান মন্ডল মিলন, বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মোনায়েম সরকার মানু।

রংপুর সদরের হরিদেবপুর ইউনিয়নের ভোটার মোস্তাফিজ বলেন, ‘মানুষ চায় উন্নয়ন। যার মাধ্যমে উন্নযন হবে ভোট তাকেই দিবেন।’ অন্যদিকে কাউনিয়ার থানাপাড়া এলাকার তরুণ ভোটার রোকসানা আক্তার জানান, ‘মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত উপজেলা গড়তে যার ভূমিকা থাকবে এমন ব্যক্তিকেই আমরা নতুনরা ভোট দিতে চাই।’

গঙ্গাচড়া উপজেলার বড়বিল ইউনিয়নের মৌলভিপাড়া এলাকার ইকবাল সুমন বলেন, ‘এই উপজেলা নদী বেষ্টিত। নদী ভাঙ্গনের হাত থেকে কাজ করবে এমন ব্যক্তিকে ভোট দিবেন।’

এদিকে সাধারণ ভোটাররা মনে করছেন যারা মাদক, সন্ত্রাস, দুর্নীতি রুখে, খেটে খাওয়া মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করবে তাকেই প্রার্থী হিসাবে বেছে নিবেন তারা। 

 

 

এ সম্পর্কিত আরও খবর