উপকূলের মানুষের ঘুম নেই, বেড়িবাঁধ নিয়ে আতঙ্ক

, জাতীয়

মৃত্যুঞ্জয় রায়, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাতক্ষীরা | 2024-05-26 12:19:51

মাথায় মাটি ভর্তি জিয়ো ব্যাগ। কেউ বস্তায় মাটি ভরছেন, কেউ ব্যাগ সেলাই, কেউ বস্তা ভর্তি মাটি মাথায় করে বেড়িবাঁধে ফেলছেন। চাঁদনী রাতে ঘূর্ণিঝড়ের আতঙ্ক নিয়ে নিজ স্বেচ্ছাশ্রমে দুর্বল রাস্তায় বস্তা ফেলানোর কাজ করে যাচ্ছেন উপকূ্লের মানুষেরা। দেখতে দেখতে ঘূর্ণিঝড় রেমাল দুয়ারে কড়া নাড়ছে। কোনো ঘূর্ণিঝড় উপকূলে আঘাত আনার কথা শুনলে খাওয়া দাওয়া ঘুম হারাম হয়ে যায় তাদের। নাকাল ভেড়ি বাঁধ নিয়ে রয়েছেন আতঙ্কে তারা। বাড়ি ঘর ছেড়ে এখন তাদের জায়গা হয়েছে রাস্তার বেড়িবাঁধে।

শনিবার (২৫ মে) গভীর রাতে আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের সুভদ্রাকাটি গ্রামে দেখা যায় এমন দৃশ্য।

স্থানীয় বাসিন্দা আবু সাইদ বলেন, এটা আমাদের গ্রাম। লোনাপানির বিরুদ্ধে লড়াইটা আমাদের অভ্যাস হয়ে গেছে। ঝড়, জলোচ্ছ্বাস, সুনামির সাথে লড়াই করে বেঁচে থাকাটা আমাদের জীবন। এক এক সময় এক এক আতঙ্ক নিয়ে বেঁচে আছি। না রয়েছে ভালো বেড়িবাঁধ না রয়েছে ভালো জীবন এ জীবনটায় শুধু সংগ্রামের। বেড়িবাঁধ খারাপ থাকলে ও ঘূর্ণিঝড় না আসলে চোখে পড়ে না পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বা প্রশাসনের।

সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য আসলাম গাজী বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমাল যদি উপকূলে আঘাত হানে তাহলে আমাদের বাঁচার উপায় নাই। আমাদের বেড়িবাঁধের অবস্থা নাজেহাল। হালকা বৃষ্টি বা জলোচ্ছ্বাস হলে বেড়িবাঁধ ভেঙে পানি প্রবেশ করে তুলিয়ে যাবে এখানকার প্রায় চারটা গ্রাম। তাই স্থানীয় মানুষের সহযোগিতায় পাউবোর সাহয্য নিয়ে তাদের থেকে জিয়ো ব্যাগ নিয়ে সারা রাত কাজ করে যাচ্ছেন এখানকার মানুষ।

মানবতার ফেরিওয়ালা ইদ্রিস আলী বার্তা২৪.কম'কে বলেন, আম্পান, ইয়াসে প্রতাপনগরের এই এলাকাটা প্রায় দীর্ঘ ১০ থেকে ১১ মাস পানির নিচে তলিয়ে ছিল। সরকার এই এলাকার অনেক জায়গায় বাঁধ দেওয়ার চেষ্টা করলে ও ৪টা গ্রামে এখনো বাঁধ দেওয়া সম্ভব হয়ে উঠেনি। যার কারণে চারটা গ্রাম খুবই ঝুকিপূর্ণ তার মধ্যে সুভদ্রাকাটি একটা। এখানকার বেড়িবাঁধ খুবই নাকাল। হালকা জলোচ্ছ্বাস বা বৃষ্টি হলে পানি প্রবেশ করে তুলিয়ে যাবে হাজার হাজার বাড়িঘর মাছের ঘের ফসলিজমিসহ অনেক কিছু।

তাই উপজেলা প্রশাসনের নিকট দাবি আশাশুনি প্রতাপনগরে সুভদ্রাকাটি, হরিশখালিসহ এসব এলাকা খুবই ঝুকিপূর্ণ। এসব এলাকা তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। তাই এদিকে খেয়াল রাখার দৃষ্টি আকর্ষণ করি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর