বঙ্গবন্ধুর শান্তির পদক ‘জুলিও কুরি’ এখনও প্রাসঙ্গিক

, জাতীয়

স্টাফ করেসপনডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, ঢাকা | 2024-05-26 15:42:56

ঠিক ৫১ বছর আগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে দেওয়া হয়েছিলো শান্তির পদক ‘জুলিও কুরি’। শুধুমাত্র জাতির পিতাকে পদকই তুলে দেওয়া হয়নি, বিশ্ব শান্তি পরিষদের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুকে বিশ্ববন্ধু উপাধীতেও ভূষিত করা হয়।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বিশ্ব শান্তি পরিষদের পক্ষ থেকে জুলিও কুরি শান্তি পদক প্রদানের ৫১তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠিত হলো আলোচনা সভা।

রোববার (২৬ মে) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে বাংলাদেশ শান্তি পরিষদের উদ্যোগে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ শান্তি পরিষদদের সভাপতি মোজাফফর হোসেন চৌধুরী। এসময় অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম, বাংলাদেশ শান্তি পরিষদদের সভাপতি মণ্ডলির সদস্য ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মাহফুজা খানম, জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার প্রমুখ।

অতিথিরা তাদের বক্তবে বলেন, একটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে লাখো শহিদের আত্মদান এবং অসংখ্য মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় মূল নেতৃত্বদানের জন্য, যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার অসামান্য প্রচেষ্টা এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাম্রাজ্যবাদবিরোধী সংগ্রামে সংহতি জ্ঞাপনের জন্য ১৯৭৩ সালের ২৩ মে বিশ্ব শান্তি পরিষদ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বিশ্বখ্যাত জুলিও কুরি শান্তি পদকে ভূষিত করে। বঙ্গবন্ধুর এই পদক প্রাপ্তি ছিল তার সুবিশাল সংগ্রামের প্রথম আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। তৎকালীন বিশ্ব রাজনীতি এবং আন্তর্জাতিক মর্যাদার বিবেচনায় এই পদক প্রাপ্তির বিষয়টি শুধু ব্যক্তি বঙ্গবন্ধুই নয়, গোটা বাঙালি জাতির জন্য ছিল এক বিশাল গৌরবের ব্যাপার।

তারা বলেন, আজকের বিশ্বে যুদ্ধ, সহিংসতা ও অস্থিরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে, বঙ্গবন্ধুর শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও সম্প্রীতির নীতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বঙ্গবন্ধু ছিলেন একজন দৃঢ় মানবাধিকার সমর্থক। সকলের জন্য সমতা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তিনি কাজ করেছিলেন। আজও, বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে লড়াই করা অত্যন্ত জরুরি। এছাড়া বঙ্গবন্ধু ছিলেন একজন সমাজতান্ত্রিক নেতা যিনি শোষণমুক্ত ও ন্যায়সঙ্গত সমাজ গঠনের লক্ষ্যে কাজ করেছিলেন। আজও, বিশ্বের অনেক দেশে দারিদ্র্য, বৈষম্য ও অনাহারের মতো সমস্যা বিদ্যমান। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ আমাদেরকে এই সমস্যা সমাধানের জন্য অনুপ্রাণিত করে।

বক্তারা বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন জাতীয়তাবাদী নেতা যিনি স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আজও, জাতীয়তাবাদের মূল্যবোধ বিশ্বজুড়ে গুরুত্বপূর্ণ। বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা আমাদেরকে নিজস্ব সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রক্ষা করতে অনুপ্রাণিত করে। তিনি শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও অর্থনীতির উন্নয়নের জন্য কাজ করেছিলেন। বর্তমানে উন্নয়নশীল দেশগুলি টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জনে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। বঙ্গবন্ধুর অভিজ্ঞতা আমাদেরকে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সাহায্য করতে পারে। এই সবদিক থেকে বিবেচনা করে বলা যায় যে বঙ্গবন্ধুর 'জুলিও কুরি' শুধু ঐতিহাসিক সম্মানই নয়, বরং আজকের বিশ্বের জন্যও একটি প্রাসঙ্গিক ও অনুপ্রেরণামূলক বার্তা।

এ সম্পর্কিত আরও খবর