ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন বাগেরহাট জেলার অধিকাংশ এলাকা। প্রায় পাঁচ লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎহীন। এর মধ্যে মোড়েলগঞ্জ, শরণখোলা, মোংলা ও রামপাল উপজেলার প্রায় অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। অন্যান্য এলাকাতেও বিদ্যুৎ ছিল আশা যাওয়ার মধ্যে।
বাগেরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক সুশান্ত রায় বলেন, ঝড়ো হাওয়ায় বিদ্যুতের লাইনে গাছপালা উপড়ে পড়ায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
বাগেরহাট জেলায় চার লাখ ৮৫ হাজারের বেশি গ্রাহক রয়েছে। রিমালের প্রভাবে দমকা ঝড়ো হাওয়ায় পল্লী বিদ্যুতের মূল সঞ্চালন লাইনের বিভিন্ন স্থানে গাছপালা উপড়ে পড়ায় বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ঝড়ে বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়েছে।
ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে বাগেরহাটের মোংলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। রোববার রাত থেকে শুরু হওয়া ঝড়-বৃষ্টি ও বাতাস এখনও অব্যাহত রয়েছে।
অপরদিকে এখনও বন্ধ রয়েছে মোংলা বন্দরে অবস্থানরত সকল বাণিজ্যিক জাহাজের পণ্য ওঠানামার কাজ।
মোংলা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. জাফর রানা জানান, ঝড়ে প্রায় ৮ হাজার কাঁচা ও আধাপাকা ঘরবাড়ি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ১০ থেকে ১২টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে প্রায় ৬০ হাজার মানুষ। এখনও আশ্রয় কেন্দ্রে রয়েছে প্রায় ৩০ হাজার নারী-পুরুষ ও শিশু। এছাড়া বিভিন্ন এলাকার প্রায় ২ হাজার চিংড়ি ঘের প্লাবিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অঞ্জন বিশ্বাস।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহা. খালিদ হোসেন বলেন, এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত ও ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দি আছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এই সকল লোকের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শরণখোলা উপজেলার রায়েন্দা ইউনিয়নের রাজৈর এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে। ফলে ওই এলাকার ৫ শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এছাড়া একই উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের বগি ও চালিতাতলা এলাকায় রিং বেড়িবাঁধ উপচে পানি প্রবেশ করে অন্তত ৩টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
মোরেলগঞ্জ, মোংলা ও রামপাল উপজেলার বেশকিছু এলাকা প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এসব এলাকায় অন্তত ২০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, বাগেরহাট সদর উপজেলার বিষ্ণুপুর, গোপালকাঠি, মোরেলগঞ্জের শ্রেণীখালি, পঞ্চকরণ, শরণখোলার রাজৈর এলাকায় বেড়িবাঁধ উপচে এবং ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে। এসব এলাকার প্রায় ১৭শ মিটারের বেশি জায়গা থেকে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে। তবে বাস্তবিক অর্থে এর পরিমাণ আরও বেশি।