২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে পরিবেশবান্ধব পরিকল্পিত নগরায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। একই সঙ্গে পরিকল্পিত নগরায়ন, নাগরিকদের জীবনমান উন্নয়ন, কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি, গুরুত্বপূর্ণ সেবার সহজলভ্যতা ইত্যাদির জন্য একান্ত অপরিহার্য বিবেচনায় নানাবিধ কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) জাতীয় সংসদ ভবনে আয়োজিত মূল্যস্ফীতি আর দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের চ্যালেঞ্জ নিয়ে ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের বাজেট পেশ করে এসব জানান তিনি।
আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীন জলবায়ু সম্পৃক্ত প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে-আরবান রেজিলিয়েন্স প্রজেক্ট, বেগুনবাড়ি খালসহ হাতিরঝিল এলাকার সমন্বিত উন্নয়ন, টেকনিক্যাল ডেভেলপমেন্ট টু আপগ্রেড স্ট্রাকচারাল ইন্টিগ্রিটি অব বিল্ডিংস ইন ডেন্সলি পপুলেটেড আরবান এরিয়াস এন্ড ইটস স্ট্র্যাটেজিক ইমপ্লিমেন্টেশন টুয়ার্ডস রেজিলিয়েন্ট সিটিস ইন বাংলাদেশ, ফরোসিমেন্ট টেকনোলজি ইন রুরাল হাইজিং এন্ড ব্রিক অল্টারনেটিভ ইনোভেশন এন্ড ডেভেলপমেন্ট এবং চট্টগ্রাম জেলার পাঁচলাইশ এলাকায় আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন জাতিসংঘ সবুজ উদ্যান উন্নয়ন।
তিনি বলেন, পরিকল্পিত নগরায়ন নাগরিকদের জীবনমান উন্নয়ন, কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি, গুরুত্বপূর্ণ সেবার সহজলভ্যতা ইত্যাদির জন্য একান্ত অপরিহার্য বিবেচনায় নানাবিধ কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে। রাজধানী ঢাকার অবকাঠামোগত মানোন্নয়নের উদ্দেশ্যে ২০২২-২০৩৫ মেয়াদে ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এছাড়া চট্টগ্রাম মহানগরীর জন্য চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন মাস্টার প্ল্যান (২০২০-২০৪১), খুলনা মহানগরীর জন্য বিদ্যমান ড্যাপ এরিয়ার বাইরে ২৬৯.৯২ বর্গ কিলোমিটার জায়গার স্ট্রাকচার প্ল্যান, মাস্টার প্ল্যান ও ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যান এবং কক্সবাজারের ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) সহ মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ চলমান রয়েছে। দেশের ১৪টি জেলার ২৭টি উপজেলার উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ চলমান রয়েছে।
ঢাকা শহরের বেসরকারি ভবনসমুহের ভূমিকম্প ঝুঁকি নিরূপণ এবং রংপুর ও সিলেট সিটি কর্পোরেশন এলাকার ঝুঁকি সংবেদনশীলতার ডাটাবেজ প্রস্তুতের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ঢাকা মহানগরীর গুলশান-বনানী-বারিধারা লেক উন্নয়নসহ পূর্বাচল ১২ নং সেক্টরে একটি ইকোপার্ক স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। টেকসই অবকাঠামো নির্মাণের লক্ষ্যে পোড়া ইটের বিকল্প ইট উদ্ভাবন, কৃষি জমি সংরক্ষণ এবং পরিবেশবান্ধব নির্মাণ উপকরণ প্রস্তুতের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। চট্টগ্রাম শহরের আকস্মিক বন্যা এবং জলাবদ্ধতা নিরসনে কর্ণফুলী নদীর সঙ্গে যুক্ত ৩৬টি খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ ও উন্নয়নের পাশাপাশি কর্ণফুলী নদীর তীর ধরে কালুরঘাট ব্রিজ থেকে চাক্তাই খাল পর্যন্ত বেড়িবাঁধ ও রাস্তা নির্মাণের কাজ চলছে।
চলতি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের জন্য ৪ হাজার ৮৫৬টি আবাসিক ফ্ল্যাটের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। এছাড়া, বিগত ১৫ বছরে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের জন্য ৭ হাজার ৫০০টি আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মিত হয়েছে। ভূমির যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিতকরণে পর্যায়ক্রমে সকল জেলায় সমন্বিত অফিস ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে মাদারীপুর ও মানিকগঞ্জ জেলায় সমন্বিত অফিস ভবন নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয়েছে এবং গোপালগঞ্জে সমন্বিত অফিস ভবন নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। বস্তিবাসী ও নিম্নআয়ের মানুষদের আবাসন সুবিধা প্রদানের উদ্দেশ্যে গাজীপুরের টঙ্গীতে ৪ হাজার ৩২টি ভাড়া ভিত্তিক আবাসিক ফ্ল্যাট এবং ঢাকার শ্যামপুর-কদমতলী, নারায়ণগঞ্জের চনপাড়া এবং খুলনার হরিণঘাটা এলাকায় সাশ্রয়ী আবাসন নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে নিম্নবর্ণিত উল্লেখযোগ্য কার্যাবলি/প্রকল্প/কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে: পরিবেশবান্ধব পরিকল্পিত নগরায়ন; দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় দুর্যোগ সহনশীল টেকসই ও নিরাপদ আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ;পরিকল্পিত আবাসন ও গৃহনির্মাণ কলাকৌশল বিষয়ে নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন; এবং পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ও নির্মাণ সমাগ্রী ব্যবহার।