মানুষের অধিকার নিয়ন্ত্রণে সাইবার নিরাপত্তা আইন করা হয়েছে: টিআইবি

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2024-06-13 14:44:19

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, প্রস্তাবিত সাইবার নিরাপত্তা বিধিমালা ২০২৪ এ বাংলাদেশের মানুষের অধিকার বিশেষ করে বাকস্বাধীনতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, সাংবাদিকদের স্বাধীনতা, পেশাগত স্বাধীনতাসহ তথ্য প্রযুক্তি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে টিআইবির কার্যালয়ে টিআইবি ও আর্টিকেল নাইনটিন এর যৌথ উদ্যোগে 'প্রস্তাবিত সাইবার নিরাপত্তা বিধিমালা ২০২৪ পর্যালোচনা ও সুপারিশ ' শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কিছু ক্ষেত্রে নামমাত্র পরিবর্তন এনে ২০২৩ সালের সাইবার নিরাপত্তা আইনের প্রণয়ন করা হয়েছে। মানুষের অধিকার নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার হিসেবে সাইবার নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করা হয়েছে।

প্রস্তাবিত সাইবার নিরাপত্তা বিধিমালা আইন ২০২৪ এ টিআইবির পক্ষ থেকে প্রস্তাবনা ও সুপারিশ তুলে ধরেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিষয়ের অধ্যাপক কাজী মাহফুজুল হক সুপন। তিনি বলেন, আমরা মনে করি সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩ নিবর্তনমূলক, অনেকাংশে অগণতান্ত্রিক এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতার অন্তরায়। আমরা বিশ্বাস করি মূল আইনে এধরনের অসংগতি রেখে অধস্তন আইন প্রণয়নের উদ্দেশ্য অনেকটাই নিষ্ফল হয়ে যাবে। তাই সাইবার নিরাপত্তা বিধিমালা ২০২৪ চূড়ান্ত করার আগে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ ও সকল অংশীজনের উদ্বেগ, মতামত ও পরামর্শ বিবেচনায় নিয়ে এবং অর্থপূর্ণ ও কার্যকর অংশগ্রহণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩ সংশোধন করতে হবে।

প্রস্তাবনা ও সুপারিশগুলো 

১। বিধিমালাটি আমাদের সীমিত অর্থনৈতিক, প্রাযুক্তিক সক্ষমতা এবং মানব সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য পুনর্বিবেচনা করা উচিত।

২। সাইবার নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ন্যূনতম ব্যক্তিগত, শিক্ষাগত এবং প্রযুক্তিগত যোগ্যতার বিধিমালা দিয়ে নির্দিষ্ট করে দেয়া উচিত।

৩। দেশের ভেতর এবং বাইরে থেকে ডিজিটাল সাক্ষ্য সংগ্রহের জন্য বিধিমালায় আইনি কার্যবিধি অন্তর্ভুক্ত করা উচিত যাতে ডিজিটাল সাক্ষ্য আদালত কর্তৃক সহজেই গৃহীত হতে পারে।

৪। জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সির একটি কার্যকর ও অর্থপূর্ণ সাংগঠনিক কাঠামো থাকা দরকার।

৫। নতুন ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাব প্রতিষ্ঠা না করে বর্তমান ফরেনসিক ল্যাবটিকে আধুনিক যন্ত্রপাতি, সফটওয়্যার এবং লোকবল দিয়ে সমৃদ্ধ করা উচিত। এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে উপযুক্ত সময়ে নতুন ফরেনসিক ল্যাব স্থাপন করা যেতে পারে।

৬। জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সি, জাতীয় সাইবার ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিম এবং ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাবের কার্যক্রমে যাতে নাগরিকদের মানবাধিকার ক্ষুণ্ন না হয় সে সংক্রান্ত মানবাধিকার সুরক্ষা বিধান প্রস্তাবিত বিধিমালায় অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আর্টিকেল নাইন্টিনের বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক শেখ মঞ্জুর-ই-আলম, টিআইবির উপদেষ্টা (নির্বাহী ব্যবস্থাপনা) অধ্যাপক সুমাইয়া খায়ের প্রমুখ।

এ সম্পর্কিত আরও খবর