সাপের কামড়ে গৃহবধূর মৃত্যু, আতঙ্ক রাসেলস ভাইপার!

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বরগুনা | 2024-06-19 20:45:02

বরগুনার আমতলীতে বিষধর সাপের কামড়ে রেজিমোন (৫০) নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৮ জুন) সকালে উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের মধ্য আঙ্গুলকাটা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

রেজিমোন আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের আর্শ্বেদ আলী হাওলাদারের স্ত্রী।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে 'ফজরের নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে বাড়ির পুকুরের ঘাটে ওযু করতে যায়। ওই সময় তার পায়ে সাপে সোবল দেয়। তার ডাকচিৎকারে বাড়িতে থাকা স্বজনরা এগিয়ে এসে দেখতে পায় রেজিমোন মাটিতে গড়াগড়ি খাচ্ছে এবং তার পায়ে সাপে কাটার চিহ্ন রয়েছে। মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে তিনি অজ্ঞান হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। স্বজনরা তাকে তাৎক্ষণিক পটুয়াখালী সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন।

নিহতের স্বামী আর্শ্বেদ আলী হাওলাদার বলেন, ফজরের নামাজ পড়ার জন্য আমার স্ত্রী ঘাটে যান ওযু করার জন্য। ওই সময় তাকে সাপে কামড় দেয়। তার ডাক-চিৎকার শুনে আমরা পরিবারের লোকজন ছুটে গিয়ে তাৎক্ষণিক তাকে উদ্ধার করে পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন। খুব অল্প সময়ে তার মৃত্যু হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে তাকে বিষাক্ত রাসেলস ভাইপার সাপে কামড় দিয়েছে।

আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, সাপের কামড়ে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বলে শুনেছি। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হবে।

ওই ঘটনার পর থেকেই গুলিশাখালী ইউনিয়নের সর্বত্র এখন রাসেলস ভাইপার সাপের আতঙ্ক বিরাজ করছে। অতি অল্প সময়ে ওই গৃহবধূর মৃত্যু হওয়ায় গ্রামবাসীর ধারণা রাসেলস ভাইপার সাপের কামড়েই ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতের পরে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রকাশ্যে দেখা মিলছে ওই বিষাক্ত রাসেলস ভাইপার সাপের। বিষধর ওই সাপ সম্পর্কে গ্রাম-গঞ্জের মানুষের মধ্যে কোনো ধারণা বা পরিচিতি একেবারেই নেই বললেই চলে।

আঙ্গুলকাটা গ্রামের রিয়াজ উদ্দিন জানান, সাপের কামড়ে এক গৃহবধূর মৃত্যু হওয়ার পর থেকেই ওই গ্রামসহ ইউনিয়নের সর্বত্র এখন রাসেলস ভাইপার সাপের আতঙ্ক বিরাজ করছে। সন্ধ্যার পর গ্রামের লোকজন এখন আর তেমন একটা ঘরের বাইরে থাকেন না। অনেকে হাতে লাঠি নিয়েও রাস্তায় চলাচল করেন।

আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. চিন্ময় হাওলাদার বলেন, ওই সময়ে একটু সাপের আতঙ্ক বেশি থাকে, তাই সকলকে সাবধানে চলাফেরা করতে হবে।

তথ্য অনুযায়ী উত্তর এবং উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতেই ওই সাপের উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছিল। ওই প্রজাতির সাপের সবচেয়ে বেশি উপস্থিতি ছিল রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায়। তবে বর্তমানে দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকায় ওই প্রজাতির সাপের উপস্থিতি বেড়ে গেছে।

উত্তরবঙ্গে রাসেলস ভাইপার সাপ চন্দ্রবোড়া বা উলুবোড়া নামে পরিচিত।

সাপটির গাঁয়ের রং এবং চিত্রাকৃতির হওয়ায় বেশিরভাগ মানুষ ওটিকে নদীতে বাস করা অথবা অজগর সাপের ছদ্মনাম বলেই জানে। বাংলাদেশে যে সকল সাপ দেখা যায়, সেগুলোর মধ্যে ওটিই সবচেয়ে বিষাক্ত সাপ।

আফ্রিকা উপমহাদেশ থেকে আসা ওই বিষধর সাপের উপদ্রব এখনই কমানো না গেলে পরে আরও মারাত্মক আকার ধারণ করবে বলে আশঙ্কা করছেন সচেতন মহল।

এ সম্পর্কিত আরও খবর