কোটা আন্দোলনে সমর্থন ছিল সুপ্রিম পার্টির, নাশকতা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

, জাতীয়

জাহিদ রাকিব, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2024-07-27 12:26:17

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারে বৈষম্য বিরোধী ছাত্রআন্দোলনে পূর্ণ সমর্থন থাকলেও সহিংসতা, নাশকতা ও প্রাণহানি নিয়ে সুপ্রিম পার্টির রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। দলটি মনে করে ২০১৩ সাথে যেভাবে দেশে নাশকতা হয়েছে, একইভাবে শিক্ষার্থীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে তৃতীয় পক্ষ দেশে আবার নাশকতা করেছে। তবে নাশকতার নামে বিরোধীমত দমনেও সরকারের সমালোচনা করছে দলটি।

চলমান শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে প্রাণহানি ও সহিংসতা নিয়ে দলটির অবস্থান জানতে বার্তা২৪.কমের সাথে মুখোমুখি হয়েছে দ্বাদশ নির্বাচনের আগে নিবন্ধন পাওয়া আলোচিত রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি)।

সাম্প্রতিক বিষয়াবলী নিয়ে দলটির পক্ষ থেকে জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও দপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ ইব্রাহিম মিয়া একান্ত সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বার্তা২৪.কম এর স্টাফ করেসপন্ডেন্ট জাহিদ রাকিব

বার্তা২৪.কম: চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের প্রতি সুপ্রিম পার্টির কি সমর্থন ছিল?

মোহাম্মদ ইব্রাহিম মিয়া: প্রথম কথা ছাত্র আন্দোলনের সাথে আমরা একমত। দেশে ৫৬ শতাংশ কোটা থাকতে পারে না। এটা অবশ্যই যৌক্তিক। যৌক্তিক আন্দোলন এতদূর কিভাবে গড়াল সেটা আমাদের বোধগম্য নয়।

বার্তা২৪.কম: হাইকোর্ট প্রথমে কোটার পক্ষে রায় দেওয়ার পরে কেন আন্দোলন?

মোহাম্মদ ইব্রাহিম মিয়া: হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায়ের ওপর আপিল বিভাগ ১ মাস সময় দিলো। সেটা শিক্ষার্থীদের পক্ষে ছিল। এসময়ে কোটার কোন কার্যকর নেই। তাহলে আন্দোলন কেন হলো। শিক্ষার্থীদের আবেগে হোক আর ষড়যন্ত্র হোক একটা আন্দোলন হয়েছে।

বার্তা২৪.কম: আন্দোলনে এত নাশকতা কিভাবে হলো?

মোহাম্মদ ইব্রাহিম মিয়া: আন্দোলনের নামে সাধারণ মানুষের সম্পদ, রাষ্ট্রের সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি এত প্রাণহানি সেটা বলার ভাষা আমি খোঁজে পাচ্ছি না। এটা কি ছাত্র আন্দোলন? ছাত্ররা জড়িত না থাকলে তাহলে কেন তারা আন্দোলন স্থগিত করেনি?

বার্তা২৪.কম: কোটা সংস্কার নিয়ে আন্দোলনে সুপ্রিম কোর্ট রায় মেনে নিয়েছে কি শিক্ষার্থীরা?

মোহাম্মদ ইব্রাহিম মিয়া: সুপ্রিম কোর্ট ঐতিহাসিক রায় দিয়েছে। শিক্ষার্থীদের পক্ষে রায় আসার পরে দায়সারা ভাবে কথা বলে নানান রকম দাবি করে। তারা কারফিউ ওঠানোর দাবি করে। কারফিউ কি ওঠাবে, না ওঠাবে না এটা রাষ্ট্রের সিদ্ধান্ত।

বার্তা২৪.কম: আন্দোলনে এত প্রাণহানি কিভাবে দেখছে সুপ্রিম পার্টি?

মোহাম্মদ ইব্রাহিম মিয়া: আন্দোলনে শিক্ষার্থী ও অন্য মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, এটা দুঃখজনক। ছাত্ররা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচার নিশ্চিত করার দাবি করতে পারে।

বার্তা২৪.কম: আন্দোলনে কি তৃতীয় পক্ষ ছিল?

মোহাম্মদ ইব্রাহিম মিয়া: শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে অবশ্যই তৃতীয় পক্ষ ছিল। তৃতীয় পক্ষের কারণে এতগুলো ঘটনা ঘটছে। আপনি দেখেন, আন্দোলনে মুগ্ধ নামে আন্দোলনরত একটা শিক্ষার্থী ফেসবুকে একটি স্ট্যাস্টাস দিয়েছিল। আমাদের আন্দোলনে চূড়ান্ত লক্ষ্য জামায়াত-শিবির যাতে ফায়দা লুটতে না পারে। পরবর্তীতে দেখি সেই ছেলেটা নিহত। দ্বিতীয়ত, ঢাকা মহানগরের শিবিরে সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক রেসিডেন্সিয়াল কলেজের যে-ছাত্র মারা গিয়েছে, তার গৃহশিক্ষক সেই ওই ছাত্র বেড়ানোর জন্য কথা বলে নিয়ে আসছে। পরে সে লাশ হলো। তৃতীয়ত, পুলিশ স্বপ্রণোদিত হয়ে রংপুরে নিরস্ত্র আবু সাঈদের উপর গুলি করে দিয়েছে। সে ছাত্র বুক পেতে দিছে এটা তার আবেগ। আমি মনে করি পুলিশ ইচ্ছাকৃতভাবে গুলি চালিয়ে দিয়েছে। এই তিনটা ঘটনা রহস্যাবৃত। এইগুলো তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। যারা দোষী তাদের শাস্তি হওয়া প্রয়োজন।

বার্তা২৪.কম: এই আন্দোলনে ফায়দা লুটছে কারা?

মোহাম্মদ ইব্রাহিম মিয়া: সরকার বিরোধীরা এই আন্দোলনে ফায়দা লুটছে। আপনি দেখেন ২০১৩ সালে আমাদের দেশে আন্দোলন হয়েছে, তখন এত ম্যাসাকার হয়নি। সেসময় যে ঘটনা ঘটছে সেটার এখন পুনরাবৃত্তি হয়েছে। সরকার ও বিভিন্নভাবে যে খবর পাচ্ছি সেখানে জামায়াত ও বিএনপির নাম পাওয়া যাচ্ছে।

বার্তা২৪.কম: আন্দোলন শেষে যে গ্রেফতার হচ্ছে সেটা কিভাবে দেখছে সুপ্রিম পার্টি? 

মোহাম্মদ ইব্রাহিম মিয়া: সরকার নাশকতার নামে ভিন্নমত দমন করছে। নাশকতা যেমন আমরা পছন্দ করি না, তেমন সরকারের ভিন্নমত দমন পছন্দ করি না।

এ সম্পর্কিত আরও খবর