চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে মাদ্রাসার ছাদ থেকে বিছানার চাদর ও বালিশের কাভার আনতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মো. ইমন হোসেন (১২) নামে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় ইউসুফ আবদুল্লা (১৩) নামে আরেক শিক্ষার্থী আহত হয়।
সোমবার (২৯ জুলাই) বিকালে ইমন হোসেনকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। এর আগে, রোববার (২৮ জুলাই) রাতে উপজেলার গুপ্টি পশ্চিম ইউনিয়নের পূর্ব ষোলদানা গ্রামে দারুসসুন্নাহ মোহাম্মাদিয়া আয়েশা হাফিজিয়া মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ইমন একই ইউনিয়নের হামছাপুর গ্রামের মো. ফজল হক তৈয়বের ছেলে। আহত ইউসুফ ষোলদানা গ্রামের মনির হোসেনের ছেলে। দুজনই ওই মাদ্রাসার শিক্ষার্থী।
আহত ইউসুফ আবদুল্লা জানান, মাদ্রাসার শিক্ষক আশরাফ আলী বিছানার চাদর ও বালিশের কাভার ধুয়ে ছাদের রোদে শুকাতে দেয়। সন্ধ্যায় তাদের ছাদ থেকে বিছানার চাদর ও বালিশের কাভার আনতে পাঠায় অপর শিক্ষক মাহদী। এসময় ছাদের পাশে একটি কদম গাছে ফুল দেখতে পেয়ে ছাদে থাকা রড দিয়ে ইমন হোসেন কদম ফুল সংগ্রহ করার সময় পাশে থাকা বিদ্যুতের তারের সাথে বিদ্যুতায়িত হয়ে পুরো শরীর পুড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ইমনের।
নিহত ইমনের বাবা মো. ফজল হক তৈয়ব বলেন, ‘৪ সন্তানের মধ্যে ইমন একমাত্র পুত্র সন্তান। ছেলেকে মাদ্রাসায় দিয়েছি, সে হাফেজ হয়ে আমাদের কবর জিয়ারত করবে, জানাজা পড়াবে। কিন্তু মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে আমার একমাত্র ছেলেকে হারাতে হলো।’
ইউসুফের বাবা মনির হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘ছেলেকে মাদ্রাসায় দিয়েছি হাফেজ হবে। সেই ছেলেকে দিয়ে মাদ্রাসার শিক্ষক তার ব্যক্তিগত কাজ করানোর সময় বিদ্যুতায়িত হয়েছে। মাদ্রাসার দেয়ালের সাথে কাভারবিহীন বিদ্যুতের তার। ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও এভাবে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ আগে থেকে ব্যবস্থা নেয়নি।’
এ বিষয়ে মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক আশরাফ আলীকে মোবাইল ফোনে চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
মাদ্রাসার সভাপতি মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘যেহেতু একটি দুর্ঘটনা ঘটেছে পরে আমরা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রাখব। শিক্ষার্থী মৃত্যুর ঘটনার পর স্থানীয়দের সিদ্ধান্ত মোতাবেক মাদ্রাসাটি আপাতত বন্ধ রয়েছে।’
বিষয়টি নিয়ে ফরিদগঞ্জ থানার উপ–পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) মাহফুজ হোসেন জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। মৃত শিক্ষার্থীর পরিবারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ইমনের মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন করা করা হয়েছে।