ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে হেফাজতে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৬ সমন্বয়ককে নিঃশর্ত মুক্তির জন্য ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন দেশের বিশিষ্ট নাগরিকেরা।
মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক সংবাদ সম্মেলনে নাগরিক সমাজের পক্ষে এ আল্টিমেটাম দেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান। ‘হত্যা, অবৈধ আটক ও নির্যাতনের বিচার চাই’ ব্যানারে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
দেশকে অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের ঘটনায় আমরা ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছি। আমি নিজে বিব্রতবোধ করছি। স্বাধীনতার পর ৭১’র মতো সহিংসতা আর অত্যাচার নির্যাতনের শিকার হতে হবে এটা ভাবনায় ছিল না। যেটা এখন হচ্ছে তরুণ প্রজন্ম। অথচ স্বাধীনতার চেতনাই হচ্ছে বৈষম্যহীন মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। এটা করতে না পারার দায় আমাদের নিতে হবে।
তিনি বলেন, ইতিহাসের ১৯৫২, ১৯৬৯, ৭১ ও স্বাধীনতা পরবর্তীতে তরুণ প্রজন্মরাই এগিয়েছিল। আজকে কোটাবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে তরুণরাই এগিয়ে এসেছে। ইতিহাসই বলে দেয়, তরুণ-শিক্ষার্থীরা হচ্ছে অজেয় শক্তি। আমরা আশা করেছিলাম সেটি সরকার বিবেচনায় নেবে। কিন্তু তরুণদের ন্যায্য আন্দোলনকে ভিন্নভাবে দেখা হয়েছে। আন্দোলন ঘিরে সবকিছুর দায় সরকারকে নিতে হবে।
উপস্থাপিত দাবি-দাওয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, গণমাধ্যমের ওপর প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে নিষেধাজ্ঞা বা নিয়ন্ত্রণ বন্ধ করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বিক্ষুব্ধ নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে ১১ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। প্রতিটি হতাহতের ঘটনা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অস্ত্র ব্যবহার ও বলপ্রয়োগের ঘটনা জাতিসংঘের উচ্চপর্যায়ের বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে তদন্তের দাবি জানানো হয় এই সংবাদ সম্মেলনে।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, মানবাধিকারকর্মী শিরীন হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।