ভারতে আশ্রয় নেওয়ার গুজবে সীমান্তে সংখ্যালঘুদের ভিড়

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, লালমনিরহাট | 2024-08-09 21:42:42

ভারত সীমান্তের গেট খুলে দিয়েছে এমন গুজবে হাজার হাজার মানুষের দিনভর জড়ো হয়েছে লালমনিরহাটের গোতামারী সীমান্তের শূন্য রেখায়।

শুক্রবার(৯ আগস্ট) লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার গোতামারী সীমান্তের ৯০৯ নং পিলার এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

গোতামারী সীমান্তের ৯০৯ নং পিলার এলাকায় ভারতীয় সীমান্ত খুলে দেয়া হয়েছে সংখ্যালঘুদের জন্য, এমন গুজবে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত হাজার হাজার সংখ্যালঘু ওই সীমান্তের শুন্যরেখায় জমায়েত হন। সেখানে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী(বিএসএফ) ও ভারতীয় পুলিশসহ সেদেশের গনমাধ্যমকর্মীরা। তবে সীমান্তে প্রবেশ ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে বিএসএফ সদস্যরা। তকে কেউ পাড়ি জমাতে পাড়েনি বলে জানা গেছে।

তবে সীমান্তে ভিড় জমা সংখ্যালঘুরা কোন ধরনের ব্যাগ বা আসবাবপত্র কিংবা পরিবারের অন্য সদস্যদের সাথে নেননি। তারা ভিড় জমালেও ভারতে যেতে তারা সমবেত হননি বলেও জানান অনেকেই।

সংখ্যালঘুদের একটি সূত্র দাবি করেছে, বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা ও ভারতীয় নেতাদের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে বাংলাদেশের চলমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে সংখ্যালঘুদের বিষয়ে আলোচনা হওয়ার কথা ছিল। তাদের সমাবেশ না হলেও ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যম এটাকে দেশছাড়তে সংখ্যালঘুরা সীমান্তে ভিড় করছেন।

ভারতীয় গণমাধ্যমের এমন খবরকে গুজব বলে দাবি করেছেন ওই সীমান্তের সংখ্যালঘু পরিবারগুলো। নীলফামারীর ডিমলার বাসিন্দা সবিতা রানী বলেন, শুনেছি এ বর্ডার খুলে দেয়া হয়েছে তাই এসেছি। যদি সুযোগ পাই তবে চলে যাব। আমার বাড়িতে হামলা না হলে প্রতিবেশি আওয়ামীলীগ নেতার বাড়িতে আগুন দেয়া হয়েছে। এই ভয়ে আমরা আতঙ্কিত।

যোগেশ চন্দ্র নামে একজন বলেন, শুনেছি বর্ডার খুলে দিয়েছে তাই দেখতে এসেছি। এখানে বেশির ভাগ মানুষ দেখতে এসেছে। ভারত গেলে তো ন্যূনতম একটা ব্যাগ বা বস্তা সাথে থাকত কিংবা পরিবারের অন্যরাও থাকত।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংখ্যালঘু সংম্প্রদায়েরি একজন বলেন, আমরা ভারতে পাড়ি জমাতে চাই না। নিজের পৈতৃক ভিটা কেন ছাড়ব। আমরা এসেছি, যাতে সকলে মিলে দুর্বৃত্তদের প্রতিহত করা যায়। এজন্য সকল শ্রেণি পেশার মানুষের সহায়তা চাই। বিএনপি জামায়াতের নেতারা আমাদের আশ্বাস্ত করেছেন নিরাপত্তা দেয়ার।

বিএসএফের বরাত দিয়ে তিনি আরও বলেন, বিএসএফ বলেছে ভারতে আসতে হলে সপরিবারে এবং আসবাবপত্র নিয়ে আসতে হবে। সেক্ষেত্রে সীমান্তের শূন্যরেখায় ন্যূনতম ৭২ ঘন্টা অপেক্ষা করতে হবে।

বিএনপি'র কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য লালমনিরহাট ১ আসনের এমপি প্রার্থী ব্যারিষ্টার হাসান রাজীব প্রধান গণমাধ্যমকে বলেন, এটি মুলতই একটি গুজব। ভারতকে ক্ষিপ্ত করে পাশে পেতে আওয়ামীলীগ এমনটা করছে। সীমান্তের শুন্যরেখায় যারা অবস্থান করছেন তারা কেউ একটি ব্যাগও সাথে নেননি। আমরা তাদেরকে শান্ত থাকতে বলেছি, নিরাপত্তার আশ্বাস দিলে তারা সীমান্ত থেকে ফিরে এসেছে।

বডার গার্ড বাংলাদেশ(বিজিবি) লালমনিরহাট ১৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মোফাজ্জল হোসেন আকন্দ বলেন, দিনভর আমি নিজেও এ সীমান্তে রয়েছি। যারা এসেছেন তাদের কোন নেতা নেই, তারা কেন এসেছেন শূন্যরেখায় সেটাও তারা জানেন না। আমি স্থানীয় নেতাদের সাথে কথা বলেছি তারাও কিছু জানেন না বলে দাবি করেছেন। এরা সীমান্ত পাড়ি দিলে নিরাপত্তার জন্য যা থাকা দরকার সেটুকুও নেই তাদের সাথে। সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। কেউ পাড়ি দিতে পারেনি বা পারবেও না।

এ সম্পর্কিত আরও খবর