চুয়াডাঙ্গা জেলা রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ আব্দুল মোতালেবকে ঘুষসহ হাতেনাতে ধরে উত্তম-মধ্যম দিয়েছেন সাধারণ জনগণ।
মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেস্বর) এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। জেলা রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ আব্দুল মোতালেবের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মসহ ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আব্দুল মোতালেব একটি মামলা ও ভুক্তভোগীরা দুটি পৃথক মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
সূত্র জানায় চুয়াডাঙ্গা জেলা রেজিস্ট্রার হিসেবে মোহাম্মদ আব্দুল মোতালেব ২০২৩ সালের ১৩ জুন দায়িত্ব নেন। দায়িত্ব নেয়ার শুরু থেকেই তার বিরুদ্ধে ওঠে নানা অভিযোগ। জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভাতেও জেলা রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ আব্দুল মোতালেবের ঘুষ বাণিজ্যের বিষয়টি একাধিকবার উঠে এসছে। সরকার পতনের পরও একজন আইনজীবী ও একজন রাজনৈতিক নেতা সরাসরি জেলা আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক সভাতেও জেলা রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ আব্দুল মোতালেবের বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ তোলেন।
অভিযোগ উঠেছে, নিজ মাধ্যমে তো বটেই, প্রত্যেক সাব-রেজিস্ট্রারদের কাছ থেকেও তিনি মাসিক ১০ লাখ টাকা করে নিতেন। জেলা রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ আব্দুল মোতালেবের অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে বিভিন্ন মহলে বারবার আলোচনা-অভিযোগ উঠলেও প্রভাব খাটিয়ে তার বিরুদ্ধে কোনো তদন্ত বা ব্যবস্থা নিতে দেননি। তার প্রভাবে অতিষ্ঠ ছিলেন দলিল লেখক থেকে মহুরিরাও।
জানা যায়, মঙ্গলবার এই কর্মকর্তার শেষ কর্মদিবস ছিল চুয়াডাঙ্গায়। অফিসে বিদায় সংবর্ধনারও আয়োজন করা হয়েছিল। তবে তার বিদায়ের খবর পেয়ে সাধারণ জনগণ জেলা রেজিস্ট্রি অফিসে যায় বলে জানা যায়। সেখানে তারা বিদায়ের দিনেও জেলা রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ আব্দুল মোতালেবকে ঘুষের টাকা গুণে নিতে দেখেন। উত্তেজিত সাধারণ জনগণ এসময় সামান্য উত্তম-মধ্যম দেন ওই কর্মকর্তাকে। এরপর ঘুষের টাকা সাধারণ জনগণ পুলিশের হাতে তুলে দেন বলে জানা যায়।
এ ঘটনায় জেলা রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ আব্দুল মোতালেব বলেন, ‘হঠাৎ করেই অনেক লোকজন এসে মারধর ও বাজে আচরণ করেছে। তাদেরকে আমি চিনি না। আমার অফিসের লোকজন দুইজনকে চিনতে পেরেছে। আইনি বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।’
তিনি বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা আমি নিজেও বুঝতেছি না। দামুড়হুদা অফিসের একটি দলিল লেখক লাইসেন্স, এটা প্রতি বছর নবায়ন করতে হয়। একজন লাইসেন্সধারী ঠিকমতো অফিসে আসেন না। তারটা গতবারে রিকুয়েস্ট-টিকুয়েস্ট করে নবায়ন করে নিয়েছে। তবে এবারে আর আমি করিনি, তার জন্য এমন ঘটনা হতে পারে।’
দামুড়হুদা সদর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কুতুব বলেন, ‘জেলা রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ আব্দুল মোতালেব একজন ঘুষখোর দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা। আমার দলিল লেখকের নবায়ন বাবদ আড়াই লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেছেন। আমি দিতে অস্বীকার করায় তিনি নানাভাবে আমার ওপর প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করেছেন। হুমকি-ধমকি দিয়েছেন। প্রকৃতপক্ষে এই কর্মকর্তার নামে অসংখ্য অভিযোগ। শত শত ভুক্তভোগী এই কর্মকর্তার দুর্নীতির জন্য বিপদগ্রস্থ। আমি মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি। মামলা করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।’ এসময় এক প্রশ্নের উত্তরে কুতুব বলেন, ‘সাধারণ জনগণ শুনেছি সেখানে গিয়েছিল। ভুক্তভোগী তো কম নয়। কে গেছে, সেটা আমি জানি না।’