কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতসহ কয়েকটি জায়গায় নারীর শ্লীলতাহানির ঘটনায় ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ডিবি হেফাজতে থাকা মোঃ ফারুকুল ইসলাম (২২) কে ১ নং আসামি এবং নয়ন রুদ্রকে ২ নং আসামি করে ৫/৬ জনকে অজ্ঞাত রেখে মামলাটি দায়ের করা হয়।
শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন ভুক্তভোগী আরোহী ইসলাম।
মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: জসিম উদ্দীন চৌধুরী।
তিনি জানান, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে কয়েকজন যুবক কর্তৃক নারীকে প্রকাশ্যে হেনস্তা, অবমাননা ও শারীরিক নির্যাতনের ঘটনা গতকাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি জেলা পুলিশ, কক্সবাজার এর দৃষ্টিগোচর হয়। ঘটনাটির গুরুত্ব ও স্পর্শকাতর বিবেচনায় পুলিশ সুপারের দিকনির্দেশনায় জেলা গোয়েন্দা শাখার একটি চৌকস দল তৎক্ষনাৎ মূল অভিযুক্ত যুবককে শনাক্ত করে আটক করেছে।
ভিকটিক আরোহী ইসলাম ২জন এজাহার যথা ফারুকুল ইসলাম ও নয়ন রুদ্র সহ ৫/৬ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করলে সদর থানায় একটি মামলা রুজু করেন। এই মামলার আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে বলে জানান তিনি।
এঘটনায় ডিবি হেফাজতে থাকা চট্টগ্রামের লোহাগাড়া থানার চুনতু বড় হাতিয়া এলাকার বাসিন্দা মোঃ ফারুকুল ইসলাম (২২) কে আটক দেখানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনার শীর্ষে কক্সবাজারে নারীর শ্লীলতাহানির ভিডিও। কয়েকটি ভিডিওতে নারীকে লাঠি দিয়ে দৌঁড়ে দৌঁড়ে মারধর করতে দেখা যায়। বিশেষ করে একটি ভিডিওতে দেখা যায়, রাতের বেলা কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে এক নারীকে কান ধরিয়ে ওঠবস করাচ্ছে একদল অতিউৎসাহী জনতা। তাদের তোপের মুখে পড়া ওই ভুক্তভোগী নারী কানে হাত দিয়ে ওঠবস করতে অপারগতা প্রকাশ করছেন। কিন্তু, সেখানে উপস্থিত এক যুবক লাঠি দিয়ে ওই নারীকে একাধিকবার আঘাত করেন। সেই লাঠির আঘাত থেকে রক্ষা পেতে ভুক্তভোগী নারী কান ধরে ওঠবস করছেন। শুধু তাই নয়, পাশে দাঁড়িয়ে থাকা জনতা ওই নারীর কান ধরে ওঠবসের গণনাও করছিলেন।
সারাদেশে আলোড়ন সৃষ্টি হওয়ার পরপরই ওই ঘটনার সাথে জড়িত লাঠি দিয়ে মারধর ও শ্লীলতাহানি করা যুবককে শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাতে ডিবি হেফাজতে নেয়া হয়।
কক্সবাজার জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)'র ওসি জাবেদ মাহমুদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বার্তা২৪.কম-কে জানান, সৈকতে এক নারীকে কান ধরিয়ে উল্লাস, মারধর করাসহ শ্লীলতাহানি করা যুবক ফারুকুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। সে বিষয়টি স্বীকার করেছে।
এদিকে ঘটনার সাথে জড়িত যুবকটি শিবিরের সাথে যুক্ত বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই প্রচার করেছে। এক বিজ্ঞপ্তিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবিরের অফিসিয়াল পেইজ থেকে এক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে এক নারীকে কান ধরিয়ে ওঠবস-মারধর করে উল্লাস করা অভিযুক্ত ফারুকুল ইসলাম শিবিরের কেউ নয়। তার সঙ্গে শিবিরের কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।