ইরাকের মানব পাচার চক্রের হাতে বাংলাদেশি পাসপোর্ট!

ঢাকা, জাতীয়

মাজেদুল নয়ন, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-26 11:21:31

ভারত থেকে ইরাকে জনবল পাঠাতে ব্যবহৃত হচ্ছে নকল বাংলাদেশি পাসপোর্ট। একটি বড় ধরনের পাচার চক্র এই অপরাধের সঙ্গে জড়িত বলে ধারণা করছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। যেখানে রয়েছে বিভিন্ন দেশের অপরাধীরা। এই নেটওয়ার্কের মধ্যে ভারতের হায়দ্রাবাদের নিজামাবাদের দু’জন, ইরাকের ১ জন ও ১ বাংলাদেশির কথা জানতে পেরেছে ভারতীয় পুলিশ। এদের মধ্যে একজন ভারতীয় ইরাকের এরবিলে বসবাস করেন।

সম্প্রতি ইরাকের এরবিল থেকে ১৪ জন ভারতীয় নাগরিককে দিল্লি হয়ে হায়দ্রাবাদে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এর আগে ইরাকের এরবিলে পৌঁছালে ইরাকের আমির, বাংলাদেশের রানা এবং হায়দ্রাবাদের নিজামাবাদের বিজয় আচার্য তাদের হাতে ভুয়া বাংলাদেশি পাসপোর্ট তুলে দেন। বাংলাদেশি পাসপোর্ট এবং মুসলিম নামের কারণে তারা সহজে বাগদাদ পৌঁছাতে পারবেন বলে জানায় মানব পাচারকারীরা।

হায়দ্রাবাদের নাগেরপুরের বাসিন্দা গান্নোজি কৃষ্ণকার স্থাণীয় গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, গত ১৭ আগস্ট তাদেরকে দুবাই হয়ে এরবিলে নিয়ে যাওয়া হয়। তারা এক মাসের জন্যে ইরাকের ভিজিট ভিসা নিয়ে যান। সেখানে তাদেরকে বলা হয়, বাগদাদে চাকরির জন্যে বাংলাদেশি পাসপোর্ট এবং মুসলিম নাম প্রয়োজন। তাহলে কাজ পেতে সুবিধা হবে এবং চেকপোস্ট পার হওয়া যাবে। এই প্রস্তাবে তারা রাজি হয়।

গান্নোজি বলেন, এরবিলে আমাদের বিজয় আচার্য্য নামে একজন গ্রহণ করেন। সেখানে ১৫ দিন অবস্থানের পর বিজয় এবং বাংলাদেশের রানা আমাদের হাতে নকল পাসপোর্ট তুলে দেন। তারা পাসপোর্টগুলোতে থাকা ছবি তুলে ফেলেন এবং সেখানে আমাদের ছবি বসান। আমরা ট্যাক্সি চেপে এরবিল থেকে বাগদাদের উদ্দেশ্যে রওনা করি। পথে আমরা প্রায় ২০টি চেকপোস্ট পার হই। সেখানে চালক কর্তৃপক্ষকে বলছিলেন, আমরা সবা্ই বাংলাদেশি। বাগদাদে আমাদের একটি হোটেলে রাখা হয়। সেখানে আমাদের আরও এক মাস রাখা হয়। তবে কোনো চাকরি দেওয়া হয়নি। আমরা একসময় ক্ষুধায় দূর্বল হয়ে পড়ি। এক রাতে ট্যাক্সি ভাড়া করে এরবিলে ফিরে আসি।

কোর্তাপাল্লি ডিসপাল্লির বাসিন্দা পুল্লা সায়ান্না বলেন, আমাদের একটি কোম্পানিতে মাসে ত্রিশ হাজার টাকা বেতনে চাকরি পাওয়ার কথা ছিল। আমাদের ইরাকি ভিসা মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে যায়। তখন আমির আমাদের কাছ থেকে আরও ১২ হাজার টাকা নেন ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর জন্যে। আমরা দেশ থেকে ওয়েস্টার্ন ইউনিয়নে টাকা এনে তাকে দেই। তবে আমাদের ভিসার আর মেয়াদ বাড়েনি।

এর মধ্যে একটি পরিবারের তিনজন চাতুর সিং, বানোথ বিনোদ এবং কররা রাভিন্দার এই পাচারের শিকার হন। তারা বলেন, 'আমরা একদিনে একটি স্যান্ডউইচ তিনজনে শেয়ার করে খেতাম। তবে হঠাৎ করেই একদিন আমাসের বাসায় পুলিশ হানা দেন। আমরা সেখান থেকে পালানোর চেষ্টা করে ধরা পড়ি। এরপর পুলিশ আমাদের ভারতে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর