পর্যটন খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানালেন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2024-09-19 17:53:18

পর্যটন খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যানএকেএম আফতাব হোসেন প্রামাণিক। তিনি বলেন, পর্যটন শিল্পের বিকাশের মাধ্যমে দেশের টেকসই উন্নয়ন করা সম্ভব। আমি পর্যটন সেক্টেরে বিনিয়োগ করার জন্য সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি। পর্যটন একটি ভালো বিনিয়োগ ক্ষেত্র।

বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) আয়োজিত ‘এশিয়ান ট্যুরিজম ফেয়ার’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

অতিরিক্ত সচিব একেএম আফতাব হোসাইন প্রামাণিক বলেন, পর্যটন বিচিত্রার আয়োজিত এবারের এশিয়ান ট্যুরিজম ফেয়ার (পর্যটন মেলা) বাংলাদেশে হওয়া এখন পর্যন্ত সব থেকে বড় ট্যুরিজম ফেয়ার। পর্যটন খাত উন্নয়নের জন্য একটি দেশের রাজনৈতিক, কালচারাল ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের প্রয়োজন আছে।

পর্যটন কর্পোরেশনের এই চেয়ারম্যান বলেন, পৃথিবী সকল দেশ যেহেতু প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে এবং অর্থনৈতিক ভাবে উন্নয়নের জন্য ট্যুরিজমের বিষয়ে বিভিন্ন দেশ জোড় দিচ্ছে। তাই এই পরিবর্তনকে আরও বেশি টেকসই করতে আমাদেরও ট্যুরিজমে জোড় দিতে হবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি বক্তব্যে চীনা দূতাবাসের কালচারাল কাউন্সেলর লি শাওপেং বলেন, আমরা বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পর্যটকদের চায়নার সুন্দর্য উপভোগ করার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। এই এশিয়ান টুরিজম ফেয়ার বাংলাদেশের এবং চায়নার সম্পর্কের মধ্যে এক নতুন দৃষ্টান্ত তৈরি করবে পর্যটন শিল্পে। এই ফেয়ারের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও চায়নার মধ্যে সাংস্কৃতিক বিষয়গুলো আদান প্রদান হবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি বক্তব্যে বাংলাদেশ টুরিস্ট পুলিশের ডিআইজি মো. আবু কালাম সিদ্দিক বলেন, পর্যটন শিল্প বাংলাদেশের একটি সম্ভাবনাময় খাত। এর মাধ্যমে অনেক কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা যেমন হয়, একই ভাবে আমাদের সমৃদ্ধ সংস্কৃতি পুরো বিশ্বের সামনে তুলে ধরা যাবে। আমাদের টুরিস্ট পুলিশের কাজ হচ্ছে পর্যটকদের নিরাপত্তা দেয়া। পাশাপাশি এমন পরিবেশ তৈরি করা যেখানে পর্যটকরা নিরাপদ মনে করবে। কোন টুরিস্ট যদি কোনো প্রকার ঝামেলায় পড়ে বা তাদের সাহায্যের প্রয়োজন পরে তারা চাইলে আমাদের টুরিস্ট পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবে যেকোনো সময়। এজন্য আমরা কিছু হটলাইন সার্ভিসের ব্যবস্থা করেছি।

টুরিস্ট পুলিশের এই ডিআইজি বলেন, আমি মনে করি এই এশিয়ান টুরিজম ফেয়ারের মাধ্যমে আমাদের পর্যটন শিল্প একটি ভাল প্লাটফর্ম পাবে। যার মাধ্যমে আমরা এই পর্যটন শিল্পকে আরো সামনে এগিয়ে নিতে পারব।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি বক্তব্যে মালদ্বীপের হাইকমিশনার শিউনীন রাশেদ বলেন, এবারের এশিয়ান ট্যুরিজম ফেয়ারে মালদ্বীপের অনেক প্রতিষ্ঠান যোগ হয়েছে। এই ট্যুরিজম ফেয়ারের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের জনগণের মধ্যে এক প্রকার নতুন সম্পর্ক গড়ে উঠবে। মালদ্বীপ পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় পর্যটন খরচ অনেক কম। তাই আমি আহ্বান জানাবো পর্যটকদের মালদ্বীপে আসার জন্য।

বিশেষ অতিথি বক্তব্যে বাংলাদেশে নিযুক্ত ফিলিপাইনের রাষ্ট্রদূত লিও টিটো এল অসান জুনিয়র বলেন, ফিলিপাইনের এম্বাসিডর হিসেবে আমি বাংলাদেশে মানুষকে আমন্ত্রন জানাচ্ছি। ফিলিপানের ঐতিহাসিক সব স্থানগুলোতে ভ্রমনের জন্য। আমাদের এখানে সমুদ্র, পাহাড় থেকে শুরু করে অনেক আকর্ষণীয় টুরিস্ট স্পষ্ট আছে। আমরা মনেকরি পর্যটন শিল্প মানুষের মধ্যে যেমন সম্পর্ক স্থাপন করে একই ভাবে এটি অর্থনীতিকেও অনেক বেশি শক্তিশালী করে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি বক্তব্যে বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ফাতেমা রহিম ভিনা বলেন, বাংলাদেশ প্রাকৃতিক এক অপার সুন্দর দেশ। আমাদের বিশাল সুন্দরবনসহ যে সকল পর্যটন কেন্দ্রগুলো আছে যা বিশ্বের অনেক পর্যটকদের আকৃষ্ট করে। এবারের মেলার মাধ্যমে বাংলাদেশসহ এশিয়ান দেশগুলোর মধ্যে পর্যটনের এক অপার সম্ভাবনা তৈরি হবে।

এদিকে পর্যটন শিল্পে গতি ফেরাতে আজ ১৯ থেকে ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঢাকার আইসিসিবিতে চলবে ১১তম এশিয়ান ট্যুরিজম ফেয়ার ২০২৪।

বিগত বছরের ধারাবাহিকতায় পর্যটন বিচিত্রার আয়োজনে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের দিকনির্দেশনায়, বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড, ট্যুরস্টি পুলিশ বাংলাদেশের সহযোগিতায় ৩ দিনব্যাপী চলবে এই মেলা। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৮ টা পর্যন্ত।

এবারের ১১তম এশিয়ান ট্যুরিজম ফেয়ারে বাংলাদেশসহ মালদ্বীপ, চায়না, ফিলিপিন, শ্রীলংঙ্কা, ভিয়েতনাম, ভুটান, সিঙ্গাপুরের প্রায় শতাধীক পর্যটন সংস্থা অংশগ্রহণ করে বলে জানানো হয়। মেলায় রয়েছে আসন্ন পর্যটন মৌসুমে দেশ ও বিদেশে বেড়ানোর বিভিন্ন আকর্ষণীয় ভ্রমণ অফার, হোটেল, রিসোর্ট বা প্যাকেজ বুকিং সহ বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থা। মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট, ক্রুজলাইন্স, এয়ারলাইন্স, ট্যুর অপারেটর ও থিমপার্কসহ বিনোদনের আরো অনেক প্রতিষ্ঠান।

এছাড়া মেলায় বৈচিত্র্যময় আয়োজনে রয়েছে পর্যটন বিষয়ক সেমিনার, শিশুদের জন্য চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, বিজনেস টু বিজনেস মিটিং। মেলার প্রতিদিন সন্ধ্যায় থাকবে চায়না, ফলিপাইন ও বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

এ সম্পর্কিত আরও খবর