এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ও দি সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্টি’র সহযোগিতায় ‘বহুমুখী পাটজাত পণ্য তৈরি’ বিষয়ক ৫ দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধন করা হয়েছে।
রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় চেম্বার কনফারেন্স হলে প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধন করা হয়।
সিলেট চেম্বারের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুজিবুর রহমান মিন্টু’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- এসএমই ফাউন্ডেশনের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. আব্বাস আলী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন, সরকার দেশে বেকারত্ব দূরীকরণের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। যার অংশ হিসেবে এসএমই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে দেশব্যাপী নবীন উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। উদ্যোক্তাদের এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।
তিনি বলেন, একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী অনেক লোকের কর্মসংস্থান করতে পারেন। তাই দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে এবং বেকারত্ব দূরীকরণে ব্যবসা-বাণিজ্যের অগ্রগতি অপরিহার্য।
তিনি পাটজাত পণ্য তৈরি বিষয়ক সময়োপযোগী প্রশিক্ষণ কর্মশালাটি আয়োজনের জন্য এসএমই ফাউন্ডেশন ও সিলেট চেম্বার অব কমার্সকে ধন্যবাদ জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসএমই ফাউন্ডেশনের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো.আব্বাস আলী বলেন, এসএমই ফাউন্ডেশনের সাথে দেশের ১৫টির অধিক ব্যাংকের ঋণ চুক্তি রয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী এসব ব্যাংক এসএমই উদ্যোক্তাদের মাত্র ৪ শতাংশ সুদে জামানতবিহীন ঋণ দিচ্ছে। এ সুযোগ উদ্যোক্তাদের কাজে লাগাতে হবে।
তিনি সিলেটের সম্ভাবনার আলোকে কি কি খাতে প্রশিক্ষণ প্রয়োজন তা সিলেট চেম্বারের মাধ্যমে এসএমই ফাউন্ডেশনকে অবহিত করার অনুরোধ জানান।
সভাপতির বক্তব্যে দি সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুজিবুর রহমান মিন্টু বলেন, পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানির মাধ্যমে বাংলাদেশ অতীতে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা আয় করেছে। এক সময় পাটই ছিল বাংলাদেশের প্রধান রফতানি পণ্য। জাতীয় অর্থনীতিতে পাটের এ অবদানকে বিবেচনা করেই পাটকে সোনালি আঁশের মর্যাদা দেয়া হয়েছে। কিন্তু আমাদের বর্তমান প্রজন্ম পাট ও পাটজাত পণ্যকে কিছুটা অবহেলার চোখেই দেখে থাকেন। এর কারণ হচ্ছে- আসলে আমাদের পাট দিয়ে বিদেশে কি কি পণ্য উৎপাদিত হয় তা জানার সীমাবদ্ধতা।
তিনি বলেন, বিশ্ববাজারে পাটের চাহিদার ৯০ শতাংশই হচ্ছে কাঁচা পাট এবং পাটজাত পণ্যের চাহিদার ৪০ শতাংশের অধিক রফতানি হয়ে থাকে বাংলাদেশ থেকে। মাঝে বেশ কয়েক বছর পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানিতে একটি স্থবিরতা লক্ষ্য করা গেছে, কিন্তু খুশির বিষয় বিগত কয়েক বছর যাবৎ আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশের পাট খাত।
তিনি আরও বলেন, পাট থেকে তৈরিকৃত পরিবেশবান্ধব ব্যাগ, পোষাক, সুতা, কাগজ, শোপিস, ওয়ালমেট, হ্যাট, পাপোশ, দড়ি, দরজা-জানালার পর্দার কাপড়, গয়নার বাক্সসহ প্রায় ২৩৫টি পণ্য বিদেশে রফতানি হয়ে থাকে। এছাড়াও পাটখড়ি থেকে ছাপাখানার কালি এবং পাট পাতা থেকে এক ধরনের সুপেয় পানীয় উৎপাদিত হয়, বিদেশে যার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
সভার আরও বক্তব্য রাখেন সিলেট চেম্বারের পরিচালক এবং সেমিনার, ওয়ার্কশপ সাবকমিটির ডাইরেক্টর ইনচার্জ ফাহিম আহমদ চৌধুরী এবং ওমেন ফর ওমেন রাইটস্’র প্রেসিডেন্ট সামিয়া বেগম চৌধুরী।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওমর সানি আখন্দ, এসএমই ফাউন্ডেশনের প্রশিক্ষক কাজী আশরাফুল হক সায়মন, বিশিষ্ট নারী উদ্যোক্তা আলেয়া ফেরদৌস তুলি, সানজিদা খানম, সিলেট চেম্বারের সচিব মো.গোলাম আক্তার ফারুক, উপ সচিব সানু উদ্দিন রুবেল, আজিজুর রহিম খান মিজান এবং প্রশিক্ষণার্থীবৃন্দ।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সিলেট চেম্বারের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার মিনতি দেবী।