যানজটের নগরীতে স্বস্তির বাহন হিসেবে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে মেট্রোরেল। দ্রুতগতির এই যান চলাচল শুরুর পর থেকে শুক্রবার বন্ধ থাকলেও বিশেষ বিবেচনায় ছুটির দিনেও চলাচলের উদ্যোগ নেয় ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) কর্তৃপক্ষ।
কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে ২০ সেপ্টেম্বর সাপ্তাহিক ছুটির দিনে যাত্রা শুরু করে রাজধানীবাসীর স্বপ্নের এই যানটি। ওই দিন ৬০টি ট্রিপের মাধ্যমে ৮০ হাজার ৫৯৯ যাত্রী পরিবহন করেছে মেট্রোরেল। একই সঙ্গে এমআরটি পাস, সিঙ্গেল যাত্রার টিকিট বিক্রিসহ ৫৭ লাখ ৬৫ হাজার ৩৬২ টাকা আয় হয়েছে বলে জানা গেছে।
সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার ৮০ হাজার মানুষ মেট্রোরেলে যাতায়াতকে প্রত্যাশা অনুযায়ী ভালোই বলছেন কর্তৃপক্ষ। যাত্রী সংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়বে বলেও মনে করছেন ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষ।
গত শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) সাপ্তাহিক ছুটির দিন মেট্রোরেল চলাচল শুরু হয়। ওই দিন বেলা সাড়ে ৩টায় উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে মতিঝিলের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে মেট্রোরেল। আর মতিঝিল থেকে যাত্রা শুরু হয় বেলা ৩টা ৫০ মিনিটে।
মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যমতে, এখন থেকে সপ্তাহের সাত দিনই চলবে রাজধানীর জনপ্রিয় গণপরিবহন মেট্রোরেল। তবে শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় মেট্রোরেল চলবে বেলা ৩টা ৩০ মিনিট থেকে (উত্তরা উত্তর স্টেশন) রাত ৯টা ৪০ মিনিট (মতিঝিল স্টেশন) পর্যন্ত।
ছুটির দিনে মেট্রো চলাচলে কর্তৃপক্ষের লাভ বা ক্ষতির বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রউফ বার্তা২৪.কমকে বলেন, এগুলোতো অ্যানালাইসিসের বিষয় আছে। অ্যানালাইসিস ছাড়া বলা কঠিন। তবে আমাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী টার্নওভার ভালোই।
তিনি আরও বলেন, আয়-ব্যয়ের বিষয়টা আপেক্ষিক। এখানে এমআরটি পাস থেকে যে টাকাটা জমা হচ্ছে অনেকে ১০ হাজার টাকা জমা দিচ্ছে, অনেকে ৫ হাজার টাকা জমা দিচ্ছে, অনেকে আবার ২০০ টাকা জমা দিচ্ছে, ফিগারটা ক্যালকুলেশনের বিষয় আছে। যেটা রিফ্লেকটেড হচ্ছে, যেমন আমাদের এমআরটি প্যাসেঞ্জার (যাত্রী) আছে, সিঙ্গেল জার্নির প্যাসেঞ্জার আছে, র্যাপিড পাস প্যাসেঞ্জার আছে।
তিনি আরও বলেন, শুক্রবার আমাদের ১ হাজার ৯৭টি এমআরটি পাস বিক্রি হয়েছে। এই এমআরটি পাস বিক্রির টাকাতো আর পুরোটা আমাদের আয় না। এটা বিবিধ হিসেবে থাকবে। এই ফিগারটা অনেকটা যদির ওপর নির্ভর করে। ওইদিনে আমাদের মোট প্যাসেঞ্জার (যাত্রী) ছিল ৮০ হাজার ৫৯৯ জন। ওইদিনে টোটাল এমাউন্ট হয়েছে ৫৭ লাখ ৬৫ হাজার ৩৬২ টাকা। এটা কিন্তু আমাদের রেভিনিউ (লাভ) না। কারণ মেইনটেনেন্স খরচ আছে, বিদ্যুৎ বিল আছে, এগুলোতো একদিনে বোঝা যাবে না। তাছাড়াও আরও অনেক খরচের বিষয় আছে। সবকিছু মিলিয়ে আমাদের টোটাল ইলেকট্রিক এপ্রোচে আমাদের ভাবতে হবে। শনিবার ১ লাখ ৫৯ জন যাত্রী যাতায়াত করেছে। এটা আসলে কম বেশি হয়। এভারেজ ৩ লাখ হয় অফিসের দিনে।
মোহাম্মদ আবদুর রউফ বলেন, শনিবার সারাদিন মেট্রোরেল চলেছে। শুক্রবারে আমাদের অপারেশন হয়েছে মাত্র ৬০টা ট্রিপ। আর শনিবারে ট্রিপ হয়েছে ২০০টা। শনিবারের ট্রিপে স্বাভাবিকভাবেই যাত্রী বেশি হবে। আজকে আবার সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস, আজ আরও বেশি যাত্রী হবে।
তিনি বলেন, সর্বশেষ মঙ্গলবারে (১৭ সেপ্টেম্বর) মেট্রোরেলে যাত্রী হয়েছিল ৩ লাখ ২৩ হাজার ৮৩৪ জন। এটা নির্ভর করে মানুষের যাতায়াতের ওপর। কয়েকটা সপ্তাহ গেলে তখন বুঝতে পারবো শুক্রবারে ট্রেন চলাচলের ফলাফল কি হচ্ছে। কারণ কেবল একটা শুক্রবার পার হয়েছে। অনেকে জানতো না মেট্রোরেল চলবে কি চলবে না। আবার অনেকেই নতুন করে জানতে পারছে শুক্রবারে মেট্রোরেল চলছে। আশা করছি সামনের শুক্রবার আমাদের টার্নওভার আরও বেশি হবে।
এদিকে মেট্রোরেল নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনাকারী সংস্থা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, কর্মদিবসে প্রতিদিন প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষের চলাচলের মাধ্যম মেট্রোরেল।