চাকরিচ্যুত বিডিআর সদসদের চাকরি পুনর্বহালের দাবি 

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪. কম, ঢাকা | 2024-09-27 13:19:21

২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ শে ফেব্রুয়ারী পিলখানায় সংঘটিত পরিকল্পিত হত্যাকান্ডে চাকুরিচ্যুত নিরপরাধ বিডিআর সদস্যদের চাকরি পুনর্বহালের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ৬৪ জেলার ক্ষতিগ্রস্ত বিডিআর ঐক্য ২০০৯।

শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে ৬৪ জেলার ক্ষতিগ্রস্ত বিডিআর ঐক্য ২০০৯ এর পক্ষ থেকে চাকুরিচ্যুত বিডিআর সদস্য সাঈদ আহমেদ খান লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমরা মনে করি যারা হত্যাকান্ড ও পূর্বপরিকল্পনার সাথে জড়িত সকলকে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দেওয়া হোক। এবং অন্যান্য সকল নিরপরাধ বিডিআর সদস্যদেরকে সরকারী সকল প্রকার সুযোগ সুবিধাসহ চাকুরীতে পুনর্বহাল করা হোক। বিস্ফোরক আইনের মামলায় যারা দীর্ঘ ১৫ বছর যাবত জেলখানায় আটক আছে অতিদ্রুত পিপি নিয়োগ করে তাদের জামিনের ব্যবস্থা করা হোক।

তিনি আরও বলেন, অল্প কিছু দিন পূর্বে নতুন সরকার গঠিত হয়েছে সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে নতুন সরকারকে আরো কিছুদিন সময় দেওয়া প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি। ইতিমধ্যেই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পিলখানা হত্যাকান্ডের পুনঃতদন্তের জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করার ঘোষণা দিয়েছেন। সরকারের এমন উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানাই।

চাকরিচ্যুত এই বিডিআর সদস্য বলেন, ২০০৯ সালের ২৫শে ফেব্রুয়ারী ঢাকার বাইরে কোনো ঘটনা না ঘটলেও ২৬শে ফেব্রুয়ারী পূর্ব পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বাহিরের বিভিন্ন ইউনিট গুলোতে গুজব ছড়িয়ে দেওয়া হয় যে সেনাবাহিনী কর্তৃক বিডিআর এর ইউনিটগুলো আক্রমণ করা হবে। এতে করে ২৬ তারিখে বাইরের ইউনিটের বিডিআর সদস্যরা আতঙ্কিত হয়ে ওঠে। পরবর্তীতে তাদেরকে গণহারে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা প্রমান করতে না পারায় পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডকে বিডিআর বিদ্রোহ আখ্যা দিয়ে গণহারে বিশেষ আদালত ১ থেকে ১৮ এর মাধ্যমে গণহারে বিভিন্ন মেয়াদে জেল ও জরিমানা করা হয়। এভাবে জাতীয় ও আর্ন্তজাতিক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে একটি ঐতিয্যবাহী ও সুশৃঙ্খল বাহিনীকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়। আমরা আশা করি বর্তমান সরকার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে সকল প্রকার অপরাধি ও চক্রান্তকারীদের দৃষ্টান্তমূলক সাজা নিশ্চিত করবেন। জেল খানায় আটক নিরপরাধ বিডিআরদের জেল মুক্তিসহ সকল প্রকার নিরাপরাধ বিডিআরদের সরকারী সকল প্রকার সুযোগ সুবিধাসহ চাকুরিতে পুনর্বহালের ব্যবস্থা করবেন।

সাঈদ আহমেদ খান লিখিত বক্তব্যে আরও বলেন, ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারী তারিখে ভারত সরকার বাংলাদেশ সীমান্তে ভোর ৬ টায় রেড এলার্ট জারি করেছে অথচ পরবর্তীতে পিলখানায় ঘটনা ঘটে আনুমানিক সকাল ৯ টায়। ভারত সরকার পিলখানার পরিকল্পিত ঘটনা ঘটার ৩ ঘন্টা আগে রেড এলার্ট দেওয়ার কারন কি? পরবর্তীতে সময় আনুমানিক দুপুর ১২-২০ মিনিটে ভারতের বিভিন্ন মিডিয়ায় পিলখানায় হত্যা কান্ডের ব্যাপারে সংবাদ প্রচার করে যে তৎকালীন ডিজি বিডিআর ও তার স্ত্রীসহ অনেক সেনা অফিসার হত্যার শিকার হয়েছেন। অথচ বিডিআর এর ১৩ সদস্যের কমিটি নিয়ে যমুনাতে মিটিং চলাকালে কোন হত্যাকান্ড হয়েছে কিনা প্রশ্ন করলে তারা তা অস্বীকার করে। যার ফলে দেশের জনগনের কাছে হত্যাকান্ডের ঘটনা অজানাই রয়ে গেছে।

তিনি বলেন, আমরা গভীর উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার সাথে লক্ষ করেছি যে, গত মাসের ৯ তারিখে তথাকথিত বিডিআর কল্যাণ পরিষদের ব্যানারে একটি সংগঠন মানববন্ধনের আয়োজন করে সাংবাদিকদের সামনে চাকুরিচ্যুত ১৮৫২০ জন বিডিআর সদস্যকে নির্দোষ দাবি করে ও অসংলগ্ন বক্তব্য প্রদান করে। স্বারকলিপি প্রদানের মাধ্যমে কারাবন্দীদের ব্যাপারে সরকারকে ৩০ দিনের আলটিমেটাম দিয়েছে সংগঠনটি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর