স্ত্রীকে পুড়িয়ে মারার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম | 2024-10-17 21:38:01

চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে স্ত্রীকে আগুনে পুড়িয়ে মারার দায়ে ইমাম হোসেন ইমান নামে এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই রায়ে আদালত আসামির এক লাখ টাকা অর্থদণ্ডের আদেশ দেয়। এছাড়া নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় ওই গৃহবধূর শ্বশুরকে খালাস দিয়েছেন বিচারক।

বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক ফেরদৌস আরা এ রায় দেন।

দণ্ডিত ইমাম হোসেন ইমান (৩০) ফটিকছড়ির ভুজপুর বাগানবাজার ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর গ্রামের বাসিন্দা।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয় ইমাম-ফাতেমা দম্পতি। বিয়ের পর স্বামী এবং শ্বশুড় কারণে-অকারণে ফাতেমাকে মানসিক নির্যাতন করতো। এছাড়াও তার কন্যা সন্তান হওয়ায় শ্বশুরবাড়ির লোকজন কটূক্তিও করতো। ২০২১ সালের ১৩ মার্চ দিবাগত রাত ৩টায় ফাতেমার বাবাকে ফোন করে তার স্বামী জানায় জানায়, ফাতেমার গায়ে আগুন লেগেছে। সাথে সাথে তার বাবা বাড়ির উঠোনে গিয়ে দেখেন তার মেয়ের মাথা-মুখমণ্ডলসহ অধিকাংশই আগুনে পুড়ে গেছে। ফাতেমাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক ঢাকায় রেফার করে।

হাসপাতালে নেওয়ার সময় ফাতেমা জানান, ঘটনার দিন তার স্বামীর বাড়িতে ফেরা নিয়ে তর্কাতর্কি হলে তাকে অশ্লীল ভাষায় গালমন্দসহ মারধর করে। একপর্যায়ে তার গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে দিয়াশলাই দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। এ ঘটনায় ১৫ মার্চ গৃহবধূর স্বামী এবং শ্বশুড়কে আসামি করে ভূজপুর থানায় মামলাটি দায়ের করেন বাদী। একইবছরের ১৬ মার্চ ভোর সাড়ে ৫টার দিকে রাজধানীর শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, মামলার তদন্ত শেষে দ্বিতীয় তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ভুজপুর থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক মো. জাকির হোসেন ২০২১ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০২২ সালের ৩১ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।

রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বেঞ্চ সহকারী কফিল উদ্দিন জানান, নিজ স্ত্রীকে পুড়িয়ে মারার দায়ে আসামি ইমাম হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই রায়ে তাকে এক লক্ষ অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন বিচারক। মোট ১২ জন সাক্ষী ও একজন সাফাই সাক্ষীর সাক্ষ্য রেকর্ড করা হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় আসামি ইমাম হোসেন উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় অপর আসামি আবুল কাশেমকে খালাস দেয়া হয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর