চট্টগ্রামের কর্মকর্তাদের কঠোর বার্তা আসিফের, ‘প্রয়োজনে নতুন লোকদের বসাব’

, জাতীয়

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো | 2024-10-19 13:15:31

একদিনের সফরে চট্টগ্রামে এসে সরকারি কর্মকর্তাদের কঠোর হুশিয়ারি দিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

শনিবার (১৯ অক্টোবর) সকালে তিনি চট্টগ্রাম বিভাগ ও জেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন। সেই সভায় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধগতি নিয়ন্ত্রণে কর্মকর্তারাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।

দ্রব্যমূল্যে নিয়ন্ত্রণে আনার বিষয়ে কর্মকর্তাদের সদিচ্ছার অভাব রয়েছে উল্লেখ করে আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, ট্রাস্কফোর্স বা ভোক্তা অধিকার আপনারা কয়টা অভিযান পরিচালনা করেছেন, কি পরিমাণ কাজ করেছেন সে বিষয়ে আমি কিছুই পাইনি। আমাকে বাণিজ্য সচিব তিনদিনের ট্রাস্কফোর্সের প্রতিবেদন পাঠিয়েছিলেন। আমি সেই প্রতিবেদেন একদিন চট্টগ্রামের নাম পেয়েছি, বাকি দুইদিন আপনাদের নামই নেই। ৪০-৪৫টা জেলার মধ্যে ট্রাস্কফোর্সের অভিযান করেছে কিন্তু চট্টগ্রামে তিনদিনের মধ্যে দুইদিনই আসলে কোনো অভিযানই হয়নি। আমার মনে হয় এই জায়গায় আপনাদের সদিচ্ছার ঘাটতি আছে কিংবা সরকারের প্রতি অসহযোগিতার একটা ব্যাপার আছে।

কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে বলে উল্লেখ করে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, এখনো আপনাদের অসহযোগিতার কারণে যে স্থবিরতা আছে এটার জন্য গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত আমাদের সর্বশেষ ক্যাবিনেট মিটিংয়ে আলোচনা হয়েছে। আমাদের হয়তো অনেক কঠিন কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে। সিস্টেম ভাঙার প্রয়োজন পড়ে আমরা সিস্টেম ভাঙব। প্রয়োজনে নতুন নিয়োগ নিয়ে এই জায়গাগুলোতে নতুন লোকদের বসাব।

সিন্ডিকেট ভাঙতে কঠোর হওয়ার নির্দেশ দিয়ে আসিফ মাহমুদ বলেন, প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা থাকার পরও যদি আপনারা করতে না পারেন তাহলে নতুনদের আমরা নিয়ে আসি। আপনাদের রেখে আমরা কি করব। বুদ্ধিভিত্তিক অনেক কথা মানুষ বোঝে না। কিন্তু যেটা বুঝে, আমি সকালে খাব কি, দুপুরে খাব কি, রাতে খাব কি? আমার সন্তান কি খাবে? যেগুলো একদম জনসম্পৃক্ত , জনগণের জীবনের সঙ্গে সম্পৃক্ত এই বিষয়গুলোতে আমাদের অবশ্যই তৎপর হতে হবে। দ্রব্যমূল্য নিয়ে আপনাদের বলছেন ভোক্তা অধিকারের আইন কঠোর না, কিন্তু আমাদের তো বিশেষ ক্ষমতা আইনে আটকের বিধান আছে। তাহলে সিন্ডিকেটে যারা আছে তাদের বিশেষ ক্ষমতা আইনে নিয়ে আসতে হবে।

আসিফ মাহমুদ আরও বলেন, ‘আপনারা যদি ভালো একটা কাজ করতে গিয়ে কারো বাঁধার সম্মুখীন হন তাহলে আমি নিশ্চিত জনগণ গিয়ে উচিত শিক্ষা দিয়ে আসবে । তারপরও আপনারা কেন কাজ করছেন না, কেন সদিচ্ছাটা নেই আমি ঠিক বুঝতে পারছি না। কেউ যদি কাজ না করে, জবাবদিহীতা দিতে ব্যর্থ হয় তাকে আমাদের প্রয়োজন নেই।’

জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রেক্ষিতে তিনি জানান, আপনারা এমন কিছু নিয়মনীতি গড়ে তুলেছেন যেগুলোর কারণে আপনাদের বিরুদ্ধে হাতও দেওয়া যায় না। আমরা কিন্তু ওসব নিয়মনীতির তোয়াক্কা করব না। নিয়মনীতি মেনে কিন্তু বাংলাদেশে অভ্যুত্থান হয়নি, সরকার পরিচালনায়ও কিন্তু নিয়মনীতি মেনে হবে না, যদি আপনারা সহযোগিতা না করেন। তো আমি আশা করব যে ট্রাস্কফোর্স হয়েছে, স্থানীয় কর্মকর্তারা আছেন চট্টগ্রামে দ্রব্যমূল্যে নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য কাজ করবেন।

সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িতদের শনাক্তের নির্দেশ দিয়ে আসিফ মাহমুদ বলেন, সেটার জন্য আপনাদের স্থানীয়ভাবে যতটুকু সহায়তা দেওয়া দরকার দেওয়া হবে। ছাত্ররা আছে, রাজনৈতিক দলগুলো আছে তারা এই সরকারকে সহযোগিতা করছে তারাও দেবে। সরকারের পক্ষ থেকেও সর্বোচ্চ সদিচ্ছা আছে এই ব্যাকআপটুকু দেওয়ার। আমরা সেটা বলেছি। অন্যান্য সরকারের সময় যেটা হয় সরকারদলীয় ছাত্রসংগঠনগুলো মাঠ পর্যায়ে স্থানীয় প্রশাসনকে সহযোগিতা করে না। কিন্তু আমরা এমন একটা পরিস্থিতিতে আছি যেখানে সকল রাজনৈতিক সংগঠন সহযোগিতা করছে, ছাত্ররা সহযোগিতা করছে, সর্বোপরী জনগণ সহযোগিতা করছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর