ফেনীতে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রান্তিক কৃষকদের পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় সদর উপজেলার ৭ হাজার ৭৫৮ জন কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে সবজির বীজ- সার ও নগদ অর্থ বিতরণ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) দুপুরে ফেনী সদর উপজেলার হল রুমে কৃষকদের হাতে প্রণোদনার বীজ ও সার তুলে দেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ফেনীর উপপরিচালক একরাম উদ্দিন।
ফেনী সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন আক্তার জানান, অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় ফেনী সদর উপজেলার ১২ ইউনিয়নের ৬ হাজার ২০৮ জন কৃষককে ৯ প্রজাতির ২০ প্যাকেট সবজির বীজ ও বিকাশ একাউন্টের মাধ্যমে প্রত্যেক কৃষককে ১ হাজার টাকা প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া তেলবীজ শস্যের আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১ হাজার ২০০ জন কৃষককে ১ কেজি সরিষা বীজ, ১০ কেজি ডিএপি, ১০ কেজি এমওপি সার বিতরণ করা হয়েছে। ৩৫০ জন কৃষককে ৮ কেজি খেসারি বীজ, ১০ কেজি ডিএপি, ৫ কেজি এমওপি সার বিতরণ করা হয়েছে।
প্রণোদনার বীজ ও সার নিতে আসা কৃষক আব্দুল করিম বলেন, বন্যায় আমার সকল ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। বন্যার পর ধারদেনা করে কিছু আবাদ শুরু করেছি। সরকারি এ সহায়তা পাওয়া অনেক উপকার হল। অন্তত শীতকালীন কিছু সবজি আবাদ করে নিজের চাহিদা মেটাতে পারব।
সাহেলা বেগম নামে এক কৃষক বলেন, বন্যায় যে ক্ষতি হয়েছে তা কোনো ভাবেই পূরণ সম্ভব নয়। এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে আমাদের অনেক সময় লাগবে। আমার স্বামী ধারদেনা করে চাষ করেছিল, তবে বন্যায় অনেক ক্ষতি হয়েছে। সরকার আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে এজন্য সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ফেনীর উপপরিচালক একরাম উদ্দিন বলেন, ফেনী সদর ও দাগনভূঞায় উপজেলার মাধ্যমে ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পুনর্বাসন কর্মসূচি আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সব উপজেলায় কৃষকদের বীজ সার ও আর্থিক প্রণোদনা দেয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, এবার ফেনীর ২৩ হাজার কৃষক শীতকালীন সবজি ও বিকাশ একাউন্টের মাধ্যমে ১ হাজার টাকা প্রণোদনা, ৪৩ হাজার কৃষককে ৮ প্রজাতির হাইব্রিড সবজির বীজ ২০ কেজি সার ও ১ হাজার আর্থিক প্রণোদনা দেয়া হবে। রবি ফসলের আওতায় ১২ হাজার কৃষক বীজ ও সার পাবেন, ৬০ হাজার কৃষক পাবেন বোরো উপসী বীজ ও সার, ২০ হাজার কৃষক বোরো হাইব্রিড বীজ ও সার। সবমিলিয়ে প্রায় ১ লাখ ৫৮ হাজার কৃষক পর্যায়ক্রমে এ সহায়তা পাবেন।
অনুষ্ঠানে ফেনী সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন আক্তারের সভাপতিত্বে ও উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা কাজী মনসুর আহমদের সঞ্চালনায় এসময় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সাহেদা হোসেন, প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম, উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আবুল হোসেন, উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন প্রমুখ।