বরিশালে এক নারীর ধর্ষণ এবং হত্যার ঘটনায় দুই আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা জরিমানা করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) বরিশালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো: রকিবুল ইসলাম এই রায় দেন।
২০২২ সালের ১২ জানুয়ারি বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নে একটি চাঞ্চল্যকর ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ড ঘটে। মামলার তথ্য অনুযায়ী, সকালে ঘরেই ৩০ বছর বয়সী এক নারী ধর্ষণের শিকার হন। এরপর তাকে হত্যা করে মরদেহ ফেলে দেওয়া হয় পাশের সন্ধ্যা নদীতে। এই ঘটনা স্থানীয় জনগণের মধ্যে তীব্র আতঙ্কের সৃষ্টি করে এবং দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসী এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করে আসছিল।
ঘটনার পর ভুক্তভোগীর ছেলে ইমরান হোসেন বাদী হয়ে বাবুগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তের পর পুলিশের অভিযানে দুই আসামি, সয়ন চন্দ্র শীল এবং সুমন ফকিরকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশের অভিযোগ, তারা যৌথভাবে ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত করে।
এরপর মামলার প্রক্রিয়া শুরু হয় এবং ট্রাইব্যুনাল আদালতে দীর্ঘ দিন ধরে সাক্ষ্য গ্রহণ ও তদন্ত চলতে থাকে। সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আসামিরা নির্দোষ নন এবং তারা পূর্বপরিকল্পিতভাবে এই নৃশংস ঘটনা ঘটিয়েছে বলে নিশ্চিত হন আদালত।
রায়ের সময় বিচারক বলেন, এ ধরনের নির্মম অপরাধের শাস্তি অবশ্যই দৃষ্টান্তমূলক হতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা ঘটানোর আগে অপরাধীরা একবার ভাবেন।
আদালতের রায়ে সয়ন চন্দ্রশীল এবং সুমন ফকিরকে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। রায়ের পর আদালত আরও জানান যে, এই ধরনের ঘটনা সমাজে শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে এবং মানুষের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতার অনুভূতি সৃষ্টি করে।
এদিকে, মামলার বাদী ইমরান হোসেন রায় প্রসঙ্গে বলেন, আমার মায়ের হত্যার বিচার হয়েছে, আমরা সন্তুষ্ট। তবে আমি চাই, সমাজের প্রতিটি মানুষ নিরাপদ থাকুক, এমন একটি সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি হোক।
স্থানীয়রা এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন এবং আশা করছেন যে, এটি অন্যান্য অপরাধীদের জন্য একটি বড় সতর্কবার্তা হিসেবে কাজ করবে। বরিশাল শহরজুড়ে এই রায়কে কেন্দ্র করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক রয়েছে ।