রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে শিক্ষার্থীদের ডাকা অনির্দিষ্টকালের ‘কলেজ ক্লোজডাউন’ কর্মসূচি চলছে। তাই যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ক্যাম্পাসের বাইরে ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সকালে ‘কলেজ ক্লোজডাউন’ কর্মসূচি শুরু করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তারা ক্যাম্পাসের ভেতর থেকে মিছিল নিয়ে প্রধান ফটকে আসেন। এরপর ফটকের অভ্যন্তরে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায় তাদের।
দুপুর ১২টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা কলেজের অভ্যন্তরেই অবস্থান করছেন।
সরকারি তিতুমীর কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের (২০২০-২০২১ সেশন) শিক্ষার্থী সাফায়েত শফিক বলেন, আমরা কলেজ ক্লোজডাউন কর্মসূচি পালন করছি। কোনো ধরনের ক্লাস বা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছি না। তবে আমরা কোনো সড়ক অবরোধ করবো না।
তিনি আরও বলেন, সচিবালয়ে আমাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে একটি বৈঠকের কথা রয়েছে। যদি আমরা আশানুরূপ ফলাফল পাই, তাহলে আমাদের আর আন্দোলন হবে না। যদি আশানুরূপ ফলাফল না পাই, তাহলে আবার তিতুমীর ঐক্যের ব্যানারে কঠোর কর্মসূচিতে যাবো।
এদিকে, সকাল থেকেই সরকারি তিতুমীর কলেজের সামনে ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সেখানে কয়েকশ পুলিশ সদস্য সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। ক্যাম্পাসের মূল ফটকের সামনের রাস্তার উল্টোদিকে একটি জলকামানও দেখা যায়।
এ বিষয়ে ডিএমপি উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) অতিরিক্ত দায়িত্ব (ক্রাইম) এ এফ এম তারিক হোসেন খান বলেন, আমরা সতর্ক অবস্থায় আছি। আমরা চাচ্ছি শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের ভেতরে থাকুক। যাতে কোন ধরনের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিপত্তি না ঘটে।
এর আগে, সোমবার (১৮ নভেম্বর) দুই দফা সড়ক অবরোধ করেন সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা। সকালে প্রথম দফায় মহাখালী এলাকায় সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় একটি ট্রেন অবরোধ উপেক্ষা করে চলে গেলে, তারা সেটিতে পাথর নিক্ষেপ করেন। এতে শিশুসহ বেশ কয়েকজন আহত হন এবং ট্রেনের কয়েকটি জানালা ভেঙে যায়। এরপর প্রায় পাঁচ ঘণ্টা তারা সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে রাখেন। এ সময় সারাদেশের সঙ্গে ঢাকার ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়।
পরে শিক্ষার্থী প্রতিনিধিরা আলোচনার জন্য মন্ত্রণালয়ে গেলে বিকাল ৪টার সময় তারা অবরোধ তুলে নেন। কিন্তু মন্ত্রণালয়ের আলোচনায় সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে রূপান্তরে কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত প্রকাশ না করায় ফের আড়াই ঘণ্টা পর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তারা সড়ক অবরোধ করেন। তবে এবার সরকারি তিতুমীর কলেজের সামনের সড়কে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে অবরোধ তুলে নেন তারা।