গণঅভ্যুত্থানে হামলাকারীদের বিচার এবং আহতের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার দাবিতে লক্ষ্মীপুরে অবস্থান কর্মসূচী ও সমাবেশ করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা। এতে গত ৫ আগস্ট লক্ষ্মীপুরে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত সকল শহীদদের পরিবার ও আহতরা অংশগ্রহণ করেন।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সকাল থেকে জেলা কালেক্টরেট ভবনের সামনে লক্ষ্মীপুর-রায়পুর আঞ্চলিক মহাসড়কে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য অবস্থান নেয় বিপ্লবী ছাত্র-জনতা। এসময় লক্ষ্মীপুর-চৌমুহনী-ঢাকা সড়ক,লক্ষ্মীপুর-রায়পুর সড়ক ও লক্ষ্মীপুর-রামগতি সড়ক অবরোধ করে রাখে তারা। ফলে সকাল থেকে এই তিনটি সড়কে কয়েকশত যানবাহন আটকা পড়ে ব্যাপক জনভোগান্তি সৃষ্টি হয়।
এদিকে সড়কে অবস্থান নিয়ে বিপ্লবী ছাত্র-জনতা সুনির্দিষ্ট দাবীতে বিভিন্ন শ্লোগানে মুখরিত হয়।
ছাত্ররা জানায়, গণবিপ্লবের ৪ মাস অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত রাষ্ট্র বিপ্লবে আহত কারও চিকিৎসার কোন দায়িত্ব নেয়নি। একারণে লক্ষ্মীপুরে সুজন, হারুন, ইউসুফ, সজিবসহ অসংখ্য আহতদের চিকিৎসার ব্যায় পরিবারের পক্ষে নির্বাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়া আহত অনেকের জীবন মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে। তাদের অনেকেকেই সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর প্রয়োজন রয়েছে।
তারা আরও জানায়, এখানে শহীদ পরিবারের সদস্যদের চোখে ঘুম নেই। অথচ তাদের সন্তান খুন হয়েছে যাদের হাতে সেইসব খুনীরা এখনো নিশ্চিন্ত ঘুমায়। কোন কোন হত্যাকারী ইতিমধ্যে দেশত্যাগ করেছে। তাদের দোসররা শহীদ পরিবারের সদস্যদের বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে বেড়াচ্ছে।
অবরোধকালে বিক্ষোভে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, শহীদ আফনানের মা নাসিমা আক্তার, শহীদ সাব্বিরের বাবা আমির হোসেন, শহীদ শাওনের বাবা আবুল বাসার, আহত ফাহিম, ইউসুফ আলম রিপন, আবদুল মতিন, সুজন, হারুন, ইউসুফ আল মাহমুদ, সজিবসহ ছাত্র জনতা।
এসময় সুজন সহ আহতরা বলেন, লক্ষ্মীপুরে আমরা যারা ৪ আগস্টের গণবিপ্লবে আহত হয়েছি, তাদের খোঁজখবর কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক বা রাষ্ট্রের কোন প্রতিনিধি কেউই নিচ্ছে না। তাই লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার অবস্থান কর্নসূচীস্থলে এসে সহমত জানানোসহ আহতদের চিকিৎসা নিশ্চয়তা ও খুনীদের সকলকে গ্রেফতারে সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা উপস্থাপন না করা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ ছেড়ে যাবে না তারা।
ছাত্রদের পক্ষে রেদোয়ান হোসেন, আরিফ হোসেন ও সাইফুল ইসলাম প্রশাসনের প্রতি প্রশ্ন ছুঁড়ে বলেন,ডিসি-এসপি কই? আপনারা আসুন। এই সময়ের মধ্যে লক্ষ্মীপুরের আহত ও নিহতদের জন্য কি কি করেছেন পরিষ্কার করে জানান।
এদিকে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচী ও সড়ক অবরোধ চললেও সেখানে জেলা প্রশাসক কিংবা পুলিশ সুপারকে আসতে দেখা যায়নি। সাড়ে ১২টার দিকে জেলা প্রশাসনের পক্ষে একজন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক অবরোধস্থলে এসে কথা শোনার চেষ্টা করে ব্যার্থ হয়ে ফিরে যান। জেলা প্রশাসক নিজে না এলে বিক্ষোভকারীরা কারও সাথে কোন কথা বললবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়ে সড়কে অবস্থান নেন।