পাহাড়চূড়ার ওপর চারপাশে সারি সারি গাছগাছালি। মাঝখানে সবুজ মাঠ। সেই মাঠে জাল দিয়ে বানানো খাচায় নানান পাখি-প্রাণী। কোনো খাঁচায় বসে আছে খরগোস। কোনোটিতে আবার গরু-ছাগল। আছে তিতির পাখি, বহু জাতের মুরগি-টার্কি-কবুতর। পানির বাক্সে খেলছে কয়েক জাতের দেশিয় জীবিত মাছ। ঘুরে ঘুরে সেই সব পাখি-প্রাণীর সঙ্গে পরিচিত হচ্ছিল শিশুরা। আর শিক্ষকেরা পরম স্নেহে জবাব দিচ্ছেলেন শিশুমনের নানান কৌতুহল-প্রশ্নের।
এই শিশুরা পড়ছে চট্টগ্রামে বুকে আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে সবার নজর কাড়া ইস্ট ডেল্টা ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে (এড্স্কুল)। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) দুপুরে স্কুলের প্লে-গ্রুপ থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের পরিবেশ-প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র সম্পর্কে ধারণা দিতে ভিন্নধর্মী এই আয়োজন করা হয়েছিল।
বেলা ১১টায় ফিতা কেটে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি বরেণ্য অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মোহাম্মদ সেকান্দার খান। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, ‘আমার জন্য একটি অসাধারণ দিন। অনেকদিন পর যেনো শৈশবে ফিরে গিয়েছি। যা কিছু দেখছি মনে হচ্ছে নতুন। এখানে নতুন বয়সের মানুষদের প্রকৃতির সঙ্গে পরিচিত করানোর জন্য প্রাণী-পাখি আনা হয়েছে। বিভিন্ন গাছগাছড়া তো আছেই। সর্বোপরি এই সুন্দর পরিবেশটা নিজেই আমাদের সবুজ-শ্যামল দেশের প্রতিনিধিত্ব করছে। ছোট বয়স থেকে প্রকৃতি ও প্রাণী সম্পর্কে শিশুদের সচেতন করে তোলা অত্যন্ত জরুরি। আমার মনে হয় বাচ্চারা এখানে এসে যে স্মৃতি নিয়ে গেল, তা জীবনভর বয়ে বেড়াতে পারবে।’
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন স্কুলের অ্যাডভাইজার ফজিলাতুন্নেসা সোচিও। তিনি বলেন, ‘বাচ্চাদের প্রাণী ও প্রকৃতির সঙ্গে পরিচিত করতে আমরা এই উদ্যোগ নিয়েছি। বাচ্চারা এখানে এসে প্রাণী ও পাখি সম্পর্কে অনেককিছু জানল, শিখল। আমরা শিশুদের একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি ব্যবহারিক চর্চাটাও দিতে চাই। সেটির অংশ হিসেবেই পরিবেশ, প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র সম্পর্কে ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে কলমে শেখানো ও পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন করে তুলতে মূলত এই অনুষ্ঠান। কেননা শহরে বেড়ে ওঠা অনেক শিশু বহু পাখি-প্রাণীর নাম শুনেছে, দেখেনি কখনো। এই ব্যবহারিক চর্চা তাদের সেই অজানার দুয়ার খুলে দেবে নিশ্চয়।’
অনুষ্ঠানে স্কুলের ভাইস প্রিন্সিপাল হুরায়েন সাত্তারসহ অন্যান্য শিক্ষকেরা উপস্থিত ছিলেন।
চট্টগ্রামের পূর্ব নাসিরাবাদের নোমান সোসাইটি এলাকায় অবস্থিত ইস্ট ডেল্টা ইন্টারন্যাশনাল স্কুলটি। ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা ভাইস চেয়ারম্যান সাঈদ আল নোমান এই স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা। স্কুলটিতে কেমব্রিজ পাঠ্যক্রমের অধীনে প্লে-গ্রুপ থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস চালু আছে। তবে আগামী বছরের মধ্যেই এ-লেভেল পর্যন্ত উন্নীত করার পরিকল্পনা আছে কর্তৃপক্ষের। আউটডোর এবং ইনডোর-উভয় সুবিধায় গড়ে তোলা অত্যাধুনিক এই স্কুলটিতে শুরু থেকেই ১:৭ শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাতে পরিচালনা করা হচ্ছে।