দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটের পদ্মা নদীতে চরম নাব্যতা সংকট দেখা দিয়েছে। নাব্যতা সংকট ও ডুবোচরের কারণে নৌরুটে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। ফেরিগুলোকে নৌপথের নির্দিষ্ট চ্যানেল ছেড়ে প্রায় দুই কিলোমিটার ভাটিপথ ঘুরে চলাচল করতে হচ্ছে। এতে ফেরি পারাপারে আগের চেয়ে দ্বিগুণ সময় বেশি লাগছে।
এদিকে ৭ নম্বর ঘাটের কাছে পানির গভীরতা কমে যাওয়ায় এক মাস ধরে বড় ফেরি ভিড়তে পারছেনা। নাব্যতা দূর করতে জরুরী কাজের অংশ হিসেবে চলছে ড্রেজিং। অধিকাংশ সময় ঘাটের একাধিক পকেট বন্ধ থাকায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে যানবাহন পারাপার ব্যাহত হচ্ছে।
বিআইডব্লিউটিএ আরিচা কার্যালয় জানায়, দৌলতদিয়ার ৭টি ঘাটের মধ্যে নদী ভাঙ্গনে কয়েক বছর ধরে ১, ২ ও ৫ নম্বর ঘাট বন্ধ রয়েছে। ৩, ৪, ৬ ও ৭নম্বর ঘাট চালু থাকলেও নাব্যতা সংকটে বছরের অধিকাংশ সময় ৬ নম্বর ঘাট বন্ধ থাকে। ৩, ৪ ও ৭ নম্বর ঘাট সচল থাকলেও এক মাস ধরে ৭নম্বর রো রো (বড়) ফেরি ঘাটের কাছে পানি কমে যাওয়ায় ড্রেজিং শুরু হয়।
রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভারি মালামাল পরিবহনের জন্য হিজলা-উলানিয়া হতে মাওয়া পর্যন্ত ১৩২ কিলোমিটার নদীপথ খননে ৪২ লাখ ঘন মিটার মাটি অপসারণে প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে জরুরী ভিত্তিতে দৌলতদিয়া এবং ধাওয়া পাড়া এলাকায় ২২ অক্টোবর থেকে শুরু করে প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার মিটার মাটি অপসারণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ নৌ বাহিনী নারায়ণগঞ্জ ডক ইয়ার্ড এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং(ডিইডব্লিউ) নামক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি খনন কাজ করছে।
স্থানীয়রা জানান, বর্ষাকালে ভাঙনের কারণে ঘাট বন্ধ থাকে। কয়েক বছর ধরে তিনটি ঘাট বন্ধ রয়েছে। শুষ্ক মৌসুমে কুয়াশায় ফেরি বন্ধের পাশাপাশি নাব্যতা সংকটের কারণে ফেরি বন্ধের উপক্রম হয়। সারা বছরই ভোগান্তি নিয়ে এই রুট দিয়ে যাত্রীদের পারাপার হতে হয়।
বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. সালাহ উদ্দিন জানান, নাব্যতা সংকট ও ডুবোচরের কারণে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ফেরি সার্ভিস কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। তবে খননকাজ চলমান রয়েছে। আশা করি, শীঘ্রই নাব্যতা সংকট দূর হয়ে ফেরি পারাপার স্বাভাবিক হবে।
বিআইডব্লিউটিএ আরিচা কার্যালয়ের খনন বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী হাছান আহমেদ বলেন, দৌলতদিয়া থেকে পাটুরিয়া নৌপথের প্রায় দুই কিলোমিটার অংশে ১০০ মিটার প্রশস্ত করে নৌবাহিনীর দুটি ড্রেজার দিয়ে ড্রেজিং চলছে। এই নৌরুটে ফেরি চলাচলের জন্য সাধারণত ১২ ফুট গভীরতা পানি থাকা প্রয়োজন। বর্তমানে পানির গভীরতা কম থাকায় ড্রেজিং করে নাব্যতা ধরে রাখার চেষ্টা চলছে।