বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণের আগেই লাশ হয়ে ফিরল মাহিন

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেট, বার্তা২৪.কম, রংপুর | 2024-11-24 16:15:01

বাবা-মায়ের স্বপ্ন ছিল ছেলে একদিন ইঞ্জিনিয়ার হয়ে বাড়ি ফিরবে। তবে সেই স্বপ্ন পূরণের আগেই মুবতাছিন রহমান মাহিন লাশ হয়ে ফিরল বাড়িতে।

রোববার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে রংপুর নগরীর জুম্মাপাড়া তার নিজ এলাকার আর জামিয়াতুল করীমিয়া নুরুল উলূম মাদ্রাসায় জানাজা শেষে তাকে সমাহিত করা হয়।

এর আগে, শনিবার (২৩ নভেম্বর) গাজীপুরের ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) শিক্ষার্থীদের বনভোজনের বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে মুবতাছিন রহমান মাহিনের মৃত্যু হয়।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুরের ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির আইইউটি'র শিক্ষার্থী ছিলেন রংপুরের বাসিন্দা মুবতাছিন রহমান মাহিন।শনিবার (২৩ নভেম্বর) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আয়োজিত বনভোজনে শ্রীপুরে দ্বিতল বাসে প্রথম বিদ্যুতায়িত হন মাহিন। তাকে ছটফট করতে দেখে ছুটে যান বন্ধু জোবায়ের আলম (সাকিব)। এগিয়ে গিয়ে দুই বন্ধুই মারা যান। এই দুর্ঘটনায় তাদের আরেক বন্ধু মীর মোজাম্মেল নাঈমেরও (২৩) মৃত্যু হয়। তারা তিন বন্ধু গাজীপুরের ইসলামিক ইউনিভার্সিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিক্যাল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। পাশ করে পরিবারে উঁকি দেয়া স্বপ্ন পূরণের আগেই লাশ হয়ে ফিরতে হয়েছে তিন বন্ধুর।

জানা গেছে, রংপুর নগরীর জুম্মাপাড়ার স্থানীয় বাসিন্দা ইমতিয়াজুর রহমানের ছেলে মুবতাছিনের বাবা। তিনি নীলফামারী সৈয়দপুর শাখার এবি ব্যাংকের ব্যবস্থাপক। মাহিনের মা নাজমুন্নাহার একজন গৃহিণী। পরিবারে বড় ছেলে মুবতাছিন রহমান মাহিন। ছোট ভাই মোস্তায়িন রংপুরের পুলিশ লাইনস স্কুল অ্যান্ড কলেজে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করাচ্ছিলেন তারা।

মুবতাছিনের চাচা হাসানুর রহমান বলেন, এত সুনামখ্যাত একটা প্রতিষ্ঠান তাদের গাফলতিতে আজ আমার ভাতিজা মাহিম চলে গেল৷ রাষ্ট্রব্যবস্থা সড়কে বিদ্যুতের তার এমনভাবে রাখা যেখানে বিদ্যুতের তারই কেড়ে নিল ফুলের মত প্রাণ। মাহিনের মত আর কারো প্রাণ যেন অকালে ঝড়ে না যায়। সুস্থ সন্তান ৪ মাস পর ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে বের তার আগেই লাশ হয়ে ফিরল, এই দায়ভার কে নিবে? আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

সকাল থেকেই মাহিনের লাশ বাড়িতে পৌঁছানোর আগেই আত্মীয়স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীদের মাঝে দেখা যায় শোকার্ত আহাজারি। তারা বলছেন,পরিবারের বড় ছেলে মাহিন। এত কষ্ট করে তাকে মানুষ করেছে বাবা- মা। আজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবহেলার জন্য নিষ্পাপ মাহিনের প্রাণ গেল। এটা কখনোই দুর্ঘটনা নয়, অবহেলাজনিত মৃত্যু।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর